গঙ্গাসাগর থেকে। নিজস্ব চিত্র
রাজ্য সরকারের স্বপ্নের প্রকল্পগুলির মধ্যে অন্যতম সামাজিক সুরক্ষা যোজনা। যোজনার প্রচারের জন্য শ্রম দফতর পঞ্চায়েত ও পুরসভা এলাকায় ফ্লেক্স টাঙিয়েছে। এ বার ওই যোজনার প্রচারে নামলেন দফতরের এক ন্যূনতম মজুরি পরিদর্শক।
কলকাতায় কর্মরত ওই পরিদর্শক মৃণাল অধিকারী গঙ্গাসাগর থেকে সান্দাকফু সাইকেলে চেপে ঘুরে বেড়াচ্ছেন যোজনার প্রচারে। তিনি জানিয়েছেন, সাগর থেকে শুরু করে পাহাড়ের মানুষদের তিনি প্রকল্পের কথা জানাতে বদ্ধপরিকর। দারিদ্রের মধ্যে ছোটবেলা কেটেছে। তাই এই প্রকল্পের সুবিধার কথা মানুষকে জানাতে চান তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘সরকার মানুষের জন্য অনেক কিছু করে। কিন্তু সেগুলি সব সময় মানুষের কাছে পৌঁছয় না।’’ সেই কারণেই তিনি দরজায় দরজায় ঘুরে যোজনার কথা প্রচার করে বেড়াচ্ছেন।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি মৃণাল এই সাইকেল যাত্রা শুরু করেন। দুই ২৪ পরগনা ঘুরে বুধবার তিনি নদিয়ায় পৌঁছন। এ দিন দুপুরে কল্যাণীতে উপ শ্রম কমিশনারের অফিসে সাইকেলে চেপে তিনি আসেন। এ ছাড়াও শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে লোকজনকে যোজনা সম্পর্কে অবগত করেন। পোশাকেই তিনি সাঁটিয়ে নিয়েছেন যোজনা সম্পর্কে নানা তথ্য। ফলে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় উৎসাহী লোকজন তাঁকে দাঁড় করিয়ে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করছেন। আর তখন মৃণাল তাঁদের যোজনা সম্পর্কে বোঝাচ্ছেন। বলছেন, কী ভাবে এই যোজনায় নাম তোলা যায়।
শ্রম দফতর ২০১৭ সালের ১ এপ্রিল থেকে ওই যোজনা চালু করেছে। এ ক্ষেত্রে নির্মাণ, পরিবহন ও অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকেরা যোজনার আওতায় আসতে পারেন। শ্রমিকের স্বাভাবিক মৃত্যু হলে মেলে ৫০ হাজার টাকা। অস্বাভাবিক মৃত্যুতে মেলে দু’লক্ষ টাকা। আর একাদশ শ্রেণি থেকে শুরু করে স্নাতকোত্তর স্তর পর্যন্ত ছেলে-মেয়ের পড়াশোনার জন্যও মেলে পর্যাপ্ত টাকা। স্নাতক উত্তীর্ণ অবিবাহিত মেয়েরা পান ২৫ হাজার টাকা। মৃণাল বলেন, ‘‘এই প্রকল্প শ্রমিকদের মানবিক মর্যাদা দিয়েছে। ছেলেমেয়ের পড়াশোনা থেকে শুরু করে মেয়ের বিয়ে সব ক্ষেত্রেই এই যোজনা শ্রমিকদের পাশে রয়েছে। কিন্তু অনেক মানুষই এখনও এ নিয়ে অবগত নন।’’
তিনি জানিয়েছেন, চলার পথে ইটভাটা, চা বাগান সব জায়গাতেই তিনি যাবেন। সকল শ্রমিকের কানে পৌঁছে দেবেন যোজনার কথা। মার্চের মাঝামাঝি নাগাদ মৃণাল ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১২০০০ ফুট উঁচু সান্দাকফুতে যোজনার কথা তুলে ধরবেন। তার পরেই শেষ হবে তাঁর সাইকেল যাত্রা। নদিয়ার ন্যূনতম মজুরি পরিদর্শক ভোলানাথ ঘোষ বলেন, ‘‘এক জন সরকারি আধিকারিক যে ভাবে প্রকৃতই শ্রমিকদের স্বার্থের কথা ভেবে রাস্তায় নেমেছেন, তা ভাবাই যায় না। আধিকারিকেরা যখন ঠান্ডা ঘর ছেড়ে বেরোতেই চান না, তখন মৃণাল দিনের পর দিন রাস্তায় নেমে প্রচার চালাচ্ছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy