দেখা নেই ক্রেতার। শনিবার তেহট্টে। নিজস্ব চিত্র
করোনাভাইরাস নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বেশ কিছু পোস্ট ছড়ানোয় আতঙ্ক বেড়েছিল এলাকায়। অকারণ গুজব ছড়ানোর অভিযোগে শুক্রবার এক ব্যক্তিকে আটকও করা হয়। শুক্রবার এ নিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের বৈঠক হয়। তা ছাড়াও, সাংবাদিক বৈঠক করে সাধারণ মানুষকে অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে। তবে তার পরেও সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক কমছে না। মুরগির মাংস কেনার ক্ষেত্রে এখনও অনেকে আতঙ্কে ভুগছেন বলে জানা গিয়েছে।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, সামাজিক মাধ্যমে পোলট্রির মুরগির মাংস, ডিম থেকে করোনাভাইরাস ছড়ানোর মতো সতর্কবার্তা দিয়ে বেশ কিছু পোস্ট শেয়ার হয়। পরে এই পোস্টগুলি ভাইরাল হয়ে যায়। এমনও গুজব ছড়ায় যে চাঁদের ঘাট হাসপাতালে বেশ কয়েকজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত ভর্তি হয়েছেন। এর পরেই তৎপর হয়ে ওঠে প্রশাসন। অকারণ আতঙ্ক রুখতে সাংবাদিক বৈঠক করা হয়। তবে তার পরেও যে অবস্থার খুব একটা পরিবর্তন হয়নি, তার প্রমাণ পোলট্রির মুরগির মাংস বিক্রিতে প্রভাব পড়া। এলাকার মাংস ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, তেহট্টের চাঁদের ঘাট এলাকায় মাংসের দোকানে ক্রেতার দেখা মিলছে না। এর কারণ হিসাবে ব্যবসায়ীরা সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ওই গুজবকেই দায়ী করছেন।
করোনা-আতঙ্কের জেরে ব্যবসা মার খাওয়ায় অসুবিধায় পড়েছেন মুরগির পোলট্রি মালিক থেকে মুরগির মাংস ব্যবসায়ী, মাংস বিক্রেতা— সকলেই। মুরগি ব্যবসায়ীদের দাবি, এই গুজব ছড়ানোর আগে এমন দিনও গিয়েছে যেখানে ১৬০ টাকা কেজি দরে মুরগির মাংস কিনতে দোকানে দোকানে মানুষের ভিড় উপচে পড়ত। যখন মুরগির মাংসের দাম ১২০ কিংবা ১০০ টাকা কিলো দরে বিক্রি হতো, তখন ক্রেতাদের জোগান দিতে নাভিশ্বাস উঠত মুরগির মাংস ব্যবসায়ীদের। প্রতিদিনই বাজারে প্রায় লাইন পড়ে যেত মাংস কিনতে। কিন্তু বর্তমানে পোলট্রির মুরগির মাংসের দাম ১২০ টাকা কিলো দরে বেচা হলেও ক্রেতার দেখা মিলছে না এলাকায়। অরূপ হালদার নামে এক মুরগির মাংস বিক্রেতা বলেন, ‘‘আজ মুরগির দাম অন্য দিনের চেয়ে কম হলেও সারা দিনে মাত্র ১ কেজি মাংস বিক্রি হয়েছে।’’
তিনি মাংস-ব্যবসার এমন বেহাল দশার জন্য দায়ী করছেন সামাজিক মাধ্যমের গুজবকে। তেহট্ট এলাকার অধিকাংশ মুরগির মাংস বিক্রেতার একই মত। তাঁদের মতে, প্রশাসন যে ভাবে গুজব থেকে মানুষকে সচেতন করতে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে, তা প্রশংসনীয়। কিন্তু তার পরেও মার খাচ্ছে মুরগির মাংসের ব্যবসা। এমনকি, ভবিষ্যতেও ক্রমাগত এই ধরনের গুজব ছড়াতে থাকলে তাঁদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন মুরগি ব্যবসায়ীরা।
এ দিন তেহট্টে মুরগির মাংস কিনতে আসা এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘আমি যতদূর জানি, এখনও পর্যন্ত মুরগি করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়নি। এ কথা জেনেই আমি মাংস কিনতে এসেছি। তবে যাঁরা করোনাভাইরাসের ভয়ে মুরগির মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকছেন, তাঁদের আরও সচেতন করা দরকার।’’
তেহট্ট মহকুমা শাসক অনীশ দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত যা শোনা গিয়েছে, তাতে তেহট্ট এলাকায় কোনও মুরগি ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়নি। এগুলো সবই সচেতনতার উপর নির্ভর করে। তবুও মানুষকে সচেতন করতে প্রশাসনিক প্রচার চালানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy