Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Nadia

প্রেমের টানে কাঁটাতার পেরিয়ে বাংলাদেশ, বিয়ে, মোহভঙ্গ, দশ মাস পরে ঘরের মেয়ে নদিয়ার ঘরে

বাবা-মায়ের কাছে ফিরে আসতে পেরে খুশি কিশোরী। তার দাবি, প্রথমে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় বাংলাদেশে। অভিযোগ, তাকে বিভিন্ন খারাপ কাজে ব্যবহার করার চেষ্টা করেন তার স্বামী।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৬:৪৩
Share: Save:

প্রেমের টানে কাঁটাতার পেরিয়ে বাংলাদেশ গিয়েছিল বছর ষোলোর এক কিশোরী। প্রতারিত হয়ে ১০ মাস পর দেশে ফিরতে পারল সে। তার বাড়ি নদিয়ার তাহেরপুরে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরের জানুয়ারিতে ফেসবুকে বাংলাদেশের এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয় ওই কিশোরীর। পরিচয় গড়ায় বন্ধুত্বে। সেখান থেকে প্রেম। সেই প্রেমের টানেই গত ১১ ডিসেম্বর বাড়ির সবার অজান্তে বাংলাদেশে পাড়ি দেয় একাদশ শ্রেণির ওই পড়ুয়া।

কী ভাবে বাংলাদেশ পৌঁছবে, তা-ও ওই কিশোরীকে ভাল ভাবে বুঝিয়ে দেন বাংলাদেশের ওই যুবক। সেই পথেই বাংলাদেশ পৌঁছয় সে। তবে কিশোরী যে বাংলাদেশ যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে, এ কথা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি তার অভিভাবকেরা। মেয়ে চলে যাওয়ার পর তাঁরা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করলেও কোনও সুরাহা হয়নি। তবে এই ঘটনার মাস দুয়েক পর কিশোরীর ফোন আসে তার মায়ের কাছে। মাকে সে জানায়, সে লুকিয়ে ফোন করছে। তাকে যেন শীঘ্রই বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই কিশোরী জানায়, বাংলাদেশি ওই যুবক তাকে বিয়ে করেছে। সে কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুরে আছে। তাকে দিয়ে ‘খারাপ কাজ’ করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও ওই কিশোরী তার মাকে জানায়।

এর পর তার বাবা-মা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে কিশোরীকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টায় তৎপর হয় পুলিশ-প্রশাসন। রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং সমাজকর্মীরাও এগিয়ে আসেন তাকে ফিরিয়ে আনতে। যোগাযোগ করা হয় বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে। খবর পেয়েই ওই কিশোরীতে নির্দিষ্ট জায়গা থেকে উদ্ধার করে বাংলাদেশের পুলিশ। এর পর দু’দেশের তৎপরতায় মেয়েকে ফিরে পেলেন বাবা-মা।

১০ মাস পরে বাবা-মার কাছে ফিরে আসতে পেরে খুশি ওই কিশোরী। তার দাবি, তাকে প্রথমে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু বাংলাদেশ পৌঁছনোর পর তার মোহভঙ্গ হয়। সে জানায়, বিয়ের পর তাকে বিভিন্ন খারাপ কাজে ব্যবহার করার চেষ্টা করেন তার স্বামী। এর পর স্থানীয় কিছু মানুষের সহায়তায় সে মানসিক পুনর্বাসন কেন্দ্রে ঠাঁই পায়। সেই মানসিক পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকেই তাকে উদ্ধার করা হয়।

বেথুয়াডহরির এক কলেজ শিক্ষক ও সমাজকর্মী রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় ওই কিশোরীকে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হন। রঞ্জন বলেন, ‘‘প্রশাসনিক স্তরে অনেক খোঁজ নিয়ে আমরা জানতে পেরেছিলাম, মেয়েটির ঠাঁই হয়েছে কুষ্টিয়ার একটি মানসিক পুনর্বাসন কেন্দ্রে। তার পর আমরাও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রশাসনিক দফতরে দরবার করেছি, যাতে ওই কিশোরীকে দ্রুত ফেরানো যায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nadia Bangladesh Teenager
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE