সেটা ছিল ১৯৯৫ সাল। নবদ্বীপ শহর জুড়ে তৈরি হয়েছিল একের পর এক নৈশরক্ষী বাহিনী। পরের দেড় দশক শান্তিতে ঘুমতো শহর। রাতের শহরে জাগতেন ওঁরা— নৈশরক্ষীরা। চুরি বা অন্য দুষ্কর্ম ঠেকানো তো বটেই, রাতবিরেতে সমস্যায় পড়া মানুষের অবলম্বন হয়ে দাঁড়াতেন নৈশরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা।
শীতের রাতে বাড়িতে আসন্নপ্রসবা স্ত্রীকে রেখে নাইট ডিউটিতে গিয়েছেন রেলকর্মী স্বামী। বাড়িতে একমাত্র বৃদ্ধা শাশুড়ি। মধ্যরাতেই উঠল প্রসববেদনা। পাশে দাঁড়ালেন তেঘরিপাড়ার নৈশরক্ষী বাহিনীর ছেলেরা। এমন উদাহরণ রয়েছে আরও। কিন্তু, কোনও অজানা কারণে কয়েক বছর আগে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল তা।
প্রয়োজনীয়তা বুঝে নবদ্বীপে বন্ধ হয়ে যাওয়া নৈশরক্ষী বাহিনী চালু করার উদ্যোগ নিল পুলিশ এবং পুরসভা। এর কিছু দিন আগেই নবদ্বীপের কেন্দ্রীয় নৈশরক্ষী বাহিনী এই বিষয়ে তৎপরতা শুরু করে। তার পরই কেন্দ্রীয় বাহিনীর সভাপতি তথা নবদ্বীপ থানার আইসি সুবীরকুমার পাল বুধবার সন্ধ্যায় নবদ্বীপ থানায় এই বিষয়ে একটি বৈঠক ডাকেন। তাতে উপস্থিত ছিলেন নবদ্বীপের পুরপ্রধানও। সেখানে বলতে উঠে এমন অসংখ্য নজির তুলে ধরছিলেন নবদ্বীপ কেন্দ্রীয় নৈশরক্ষী বাহিনীর কার্যকরী সভাপতি লালু মোদক। ১৯৯৫ সালে ৩৬টা বাহিনী তৈরি হয়। বছর আটেক আগে থেকে একে একে বন্ধ হতে শুরু করে বিভিন্ন পাড়ার রাত পাহারা।
স্থানীয় স্বরূপগঞ্জের কলাবাগানে ১৯৮৬ সাল থেকে চালু রয়েছে নবদ্বীপ থানা এলাকার অন্যতম পুরানো নৈশরক্ষী বাহিনী। তার সম্পাদক জয়দেব দাস বলেন, “নৈশরক্ষী বাহিনী থাকার সুফল এলাকার মানুষ পান বলেই এত দিন ধরে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে টিঁকে আছে আমাদের বাহিনী।”
লালুবাবু বলেন, “সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে শুক্রবার থেকেই আমরা কেন্দ্রীয় নৈশরক্ষী বাহিনীর পক্ষ থেকে প্রতিটি পাড়ায় যাব, এবং বন্ধ হয়ে যাওয়া বাহিনী চালু করার জন্য আলোচনা হবে। তাতে উপস্থিত থাকবেন আইসি এবং পুরপ্রধান। পুরপ্রধান বিমানকৃষ্ণ সাহা বলেন, “পুরসভার তরফ থেকে সব রকমের সাহায্যও করা হবে। আমি চাই, সারা শহর জুড়ে নৈশরক্ষী বাহিনী ফের চালু হোক।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy