খেয়াঘাটে তালাবন্ধ শৌচাগার। — নিজস্ব চিত্র
তালাবন্ধ শৌচাগারের দেওয়ালে ফলাও করে লেখা ‘প্রথম উন্মুক্ত শৌচবিহীন জেলায় আমরা গর্বিত।’ ঠিক তার হাত কয়েক দূরেই গঙ্গার ধারে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে শৌচকর্ম সারছেন একদল লোক। নবদ্বীপের স্বরূপগঞ্জ খেয়াঘাটে এমন দৃশ্য গা সওয়া হয়ে গিয়েছে পথচলতি মানুষের। একই ছবি মায়াপুর ঘাটেও।
২০১৪ সালের জুলাই মাসে উদ্বোধন হয় মায়াপুর ঘাটের শৌচাগারটি। কয়েক দিন পর সেটি বন্ধ হয়ে যায়। অন্য দিকে, স্বরূপগঞ্জ ঘাটের শৌচাগারটিও এখন তালাবন্ধ।
তার ফলে দীর্ঘ পথ পেরিয়ে মায়াপুরের তীর্থযাত্রী কিংবা নবদ্বীপের গঙ্গায় স্নান করতে আসা মহিলা, পুরুষ কারও কাজেই আসছে না বহু ব্যয়ে নির্মিত আধুনিক শৌচাগারগুলি। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছেন মহিলারা।
কিন্তু রাজ্যের প্রথম উন্মুক্ত শৌচবিহীন জেলার শিরোপা পাওয়া নদিয়ার দু’টি খেয়াঘাটে কেন বন্ধ সুলভ শৌচাগারগুলি?
শৌচাগারগুলি ‘লিজ’ নিয়ে চালানোর লোকজন অমিল হওয়ায় এমন অবস্থা বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, নবদ্বীপ ব্লকের হুলোর ঘাট, মায়াপুর ঘাট, স্বরূপগঞ্জ ঘাট-সহ সংলগ্ন এলাকার সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পের অঙ্গ হিসাবে নদিয়া জেলা পরিষদ ওই শৌচাগারগুলি তৈরি করে। স্বরূপগঞ্জের স্থানীয় বাসিন্দা এবং নদিয়া জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য এবং কারগরী দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ হরিদাস দেবনাথ বলেন, “শৌচালয় তৈরি করে দিলেও সেগুলি পরিচালনা করা জেলা পরিষদ পক্ষে সম্ভব নয়। তাই ওই শৌচাগারগুলি লিজ পদ্ধতিতে চালানো হবে। স্বরূপগঞ্জ ঘাটের শৌচালয়টি নবদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওঁরা হয়ত দু-এক দিনের মধ্যেই চিঠি পাবেন।”
কিন্তু মায়াপুরে ঘাটের সুলভ শৌচাগার ইজারা নিয়ে অভিজ্ঞতা সুখের হয়নি ইজারাদারের। ২০১৪ সালে উদ্বোধনের পরে মায়াপুর ঘাটের শৌচাগারটি লিজ নিয়ে চালাচ্ছিলেন শ্যামবলী চৌধুরি। দু’দফায় তিনি উনিশ মাস চালিয়েছেন। কিন্তু গত মার্চে লিজের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে তিনি আর দায়িত্ব নিতে চাননি। তাঁর দাবি, যে টাকায় লিজ নিয়েছিলেন বছর শেষে সে টাকা ওঠে না। তাই লোকসান করে শৌচাগার চালাতে আর রাজি নন তিনি। তাঁর কথায়, “স্থানীয় লোকজন কেউ শৌচাগার ব্যবহার করে পয়সা দিতে চান না। শুধু বহিরাগত যাত্রীদের পয়সায় সারা বছরের খরচ উঠছিল না।’’
নবদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তাপস ঘোষ অবশ্য এ সব কথা মানতে নারাজ। তিনি জানিয়েছেন, “মায়াপুর ঘাটের শৌচাগারের পাম্পের মোটরটি খারাপ হয়ে যাওয়ার সেটি বন্ধ রাখা হয়েছে। মোটর মেরামত হয়ে গিয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যেই শৌচাগার ফের চালু হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy