ফুলের দাম বেড়েছে। নিজস্ব চিত্র
পঞ্জিকা মতে, এ দিন বৈশাখী পূর্ণিমা। গৌতম বুদ্ধের জন্মতিথি বা বুদ্ধপূর্ণিমা নামেই যা বেশি পরিচিত। কিন্তু তেরো পার্বণের নবদ্বীপের নিজস্ব উৎসব ক্যালেন্ডারে এ দিন আরও পার্বণের সমারোহ। ১৪২৮ শকাব্দে (১৫০৬ খ্রিস্টাব্দে) এই তিথিতেই নিমাইপণ্ডিতের সঙ্গে সাতপাকে বাঁধা পড়েছিলেন বিষ্ণুপ্রিয়া দেবী। এ দিনই চন্দনযাত্রার মতো ব্যতিক্রমী বৈষ্ণবীয় উৎসবের সমাপ্তি। পাশাপাশি, এ দিন ফুলদোল। বেশিরভাগ মন্দির এ দিন ফুলে ফুলে ছাওয়া। সমাজবাড়ি, গোবিন্দবাড়ি, মদনমোহন মন্দির, বলদেব মন্দির, হরিসভা, শ্রীবাসঅঙ্গনে দেবতার পরিধেয় থেকে অলঙ্কার, সিংহাসন থেকে নাটমন্দির ফুলে মোড়া। এই বার তার সঙ্গে যোগ হয়েছে বিয়ে, বৌভাত। সব মিলিয়ে, শুক্রবার ফুলের সীমাহীন চাহিদা।
অন্য দিকে, ফুলের ঘায়ে মূর্ছা যাওয়ার উপক্রম ক্রেতা-বিক্রেতার।। চড়েছে কলকাতার পাইকারি বাজারে ফুলের দাম। জুঁই, বেলি, পদ্ম কিংবা জারবেরা ফুলের দাম দেখে মাথায় হাত ফুলের কারবারিদের। একই হাল মন্দির কর্তৃপক্ষ ও বিয়েবাড়ি কর্তাদের। নবদ্বীপের ফুলের ব্যবসায়ী ভক্ত সরকার, রাজু সরকারেরা জানান, বৌভাতের অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ হল ফুলশয্যা। এ দিন ফুল জরুরি। কিন্তু একজোড়া গোড়ের মালা ৩০০ টাকার কমে নেই। একটু ভাল মালা ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা। স্পেশাল মালার দর কমপক্ষে ১২০০ টাকা। রাজু বলেন, “এর পর খাট সাজানো। খুব অসুবিধা হয়ে যাচ্ছে। আগে চুক্তি হয়ে গিয়েছে। দামে পোষাতে পারছি না।”
বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে ইদানীং সব মন্দিরে ফুলের সাজের বহর বাড়ছে। মহাপ্রভুর বিবাহবার্ষিকী ঘিরে বাড়ছে আড়ম্বর। নবদ্বীপে মহাপ্রভু মন্দিরে এবং মালঞ্চ পাড়ায় বিষ্ণুপ্রিয়া দেবীর জন্মভিটায় জাঁকজমকের সঙ্গে পালন করা হয় বিবাহবার্ষিকী উৎসব। এই রাতে মহাপ্রভুকে পরানো হয় জুঁই ফুলের পাঞ্জাবি। মহাপ্রভু মন্দির সাজানো হয় ফুলে ফুলে। মন্দির পরিচালন সমিতির জয়ন্ত গোস্বামী বলেন, “আমাদের ফুল আসে কলকাতা থেকে। ব্যয় বহন করেন ভক্তরা। আমাদের কোনও খরচ হয় না। তবে ১২-১৫ হাজার টাকার ফুল লাগে এই দিন সন্ধ্যায়।”
ফুলে ফুলে রঙিন নবদ্বীপের এ বার ফুলদোলের রং ভীষণ চড়া। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানির অভাবে আকাশ ছুঁয়েছে ফুলের দাম। এক দিকে ক্রমাগত শিলাবৃষ্টি, অন্য দিকে বাঙালিদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে মারোয়ারি, বিহারি-সহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বিয়ে। এক ফুলের কারবারি বাবন দে বলেন, “কলকাতার পাইকারি ফুলের বাজার শেয়ার বাজারের মতো ওঠানামা করছে। টাকা দিয়েও মিলছে না ফুল।” তিনি জানান, শুক্রবার ফুলদোল উপলক্ষে গোবিন্দবাড়ির জন্য ৪০ কিলোগ্রাম ফুল, হরিসভার জন্য ২০ কিলোগ্রাম, মদনমোহন মন্দিরে ৪০ কিলোগ্রাম এবং মদনগোপাল মন্দিরে ৩২ কেজি ফুলের বায়না আছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy