অভিযান: চলছে পথ পরিষ্কার। লালবাগে। নিজস্ব চিত্র
টুকটুক বা রিকশা নয়, ঐতিহাসিক মুর্শিদাবাদ (লালবাগ) শহরের পর্যটকদের মন ঝুঁকে থাকে নবাবি আমল থেকে চলে আসা ঘোড়ায় টানা টাঙার দিকে। এ তল্লাটে টাঙা অবশ্য ‘টমটম’ নামেই পরিচিত। ভাড়াও বেশি হলেও পর্যটকদের প্রথম পছন্দ সেটাই। কিন্তু ঘোড়ার বিষ্ঠায় বাড়তে থাকা পরিবেশ দুষণে অতিষ্ঠ হয়ে প্রায় দু’দশক ধরে পুরসভার পক্ষ থেকে টমটম তুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু ঐতিহ্য রক্ষা, আর টাঙা চালকের জীবিকার কথা ভেবে পুরসভার সেই চেষ্টা এতদিনেও সফল হয়নি। ঐতিহাসিক শহরকে দূষণমুক্ত রাখতে হাতে ঝাঁটা তুলে নিলেন টমটম চালকেরাই।
সোমবার, মে দিবস থেকে তাঁরা হাজারদুয়ারি, কাঠগোলা বাগান, চকবাজার, ত্রিপোলিয়া গেট, কেল্লা নিজামত এলাকা সাফাই করেছেন। মুর্শিদাবাদের পুরপ্রধান বিপ্লব চক্রবর্তী বলেন, ‘‘টমটম চালকদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।’’ ‘মুর্শিদাবাদ পর্যটন সহায়তা কেন্দ্র’-এর সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘একদিকে ঐতিহ্য ধরে রাখা, অন্য দিকে পরিবেশ দূষণ। উভয় সঙ্কট থেকে মুক্তি পেতে প্রায় দু’ দশক ধরে আলোচনা করেও সুরাহা হয়নি। অবশেষে টমটম চালকেরাই পথ বাতলে দিলেন।’’
নবাব মুর্শিদকুলি থেকে সিরাজের আমল পর্যন্ত সুবে বাংলার রাজধানী মুর্শিদাবাদ শহরে টমটম ও পালকি ছিল প্রধান যানবাহন। পালকি আজ অবলুপ্ত। নেই সেই নবাব ও নবাবিও। রয়ে গিয়েছে কেবল টমটম। লালবাগ শহরে ও লাগোয়া কয়েকটি গ্রামের প্রায় ৩০০টি টমটমে পর্যটকদের ঐতিহাসিক স্থান দেখানো হয়। ‘মুর্শিদাবাদ টাঙা চালক ইউনিয়ন’-এর সম্পাদক মনু শেখ বলেন, ‘‘শহর পরিচ্ছন্ন রাখতে কয়েক বছর ধরে ঘোড়ার লেজের কাছে বস্তা বেঁধেও টমটম চালানো হয়েছে। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। শেষতক সবাই মিলে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’
কয়েকজন টমটম ও ঘোড়া বিক্রি করে দিয়ে টুকটুক কিনেছিলেন। তাঁদেরই একজন রইস আলি বলেন, ‘‘পর্যকটকেরা টমটমই চায়। তাই টুকটুক বেচে ফের টমটমেই ফিরে এসেছি।’’ মে দিবস থেকে নিজেরাই সাফাই অভিযানে নেমে পড়েছেন চালকেরা। পুরসভার গাড়ি জড়ো হওয়া সেই আবর্জনা নিয়ে যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy