কেউ বলছেন ‘বোধোদয়’, কেউ বা বলছেন, ‘একেই বলে কবুল করা’— ঘণ্টা কয়েকের জন্য বহরমপুরে এসে প্রাক্তন মন্ত্রী বেচারাম মান্না জানিয়ে গেলেন, তৃণমূলের দলীয় নেতৃত্বের অহমিকাই ‘কাল’ হয়েছে দলের।
২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভায় সোমবার বহরমপুর এসে, দলীয় নেতা থেকে জনপ্রতিনিধিদের কড়া সমালোচনা করেই ক্ষান্ত হননি সিঙ্গুর জমি আন্দোলনের মুখ তথা তৃণমূল কিসান ক্ষেত মজদুর কংগ্রেস কমিটির রাজ্য সভাপতি বেচারাম মান্না। সেই সঙ্গে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি তাঁর আস্থা নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিলেন।
এ দিন দুপুরে, বহরমপুরে গ্রান্ট হলের সভায় বেচারাম যখন বক্তব্য রাখছেন, তখন সামনের আসনে মাথা নীচি করে বসে আছেন ব্লকে ও জেলা কমিটির নেতারা। তাঁদের সামনেই প্রাক্তন মন্ত্রী বলেন, ‘‘এর আগে আমরা যখন পাড়ায় হেঁটে যেতাম, মাচার সামনে দাঁড়িয়ে বিড়ি চাইতাম। সেই বিড়ি টানতে টানতে দলীয় কর্মী থেকে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সুখ দুঃখের কথা বলতাম।’’ আর এখন? বেচারামের কথায়, ‘‘এখন পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে, কারও মোটরবাইক হয়েছে, কারও বা চার চাকা। আমরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে মোটরবাইকে স্টার্ট দিয়ে পাশ দিয়ে হুশ করে বেরিয়ে যাচ্ছি। আর সাধারণ মানুষ বলছেন, ‘দেখেছ নেতার লেজ বেড়েছে’। এখন নেতাদের আন্তরিকতা কমেছে। কর্মীদের আত্মীয়তা কমেছে।’’
তিনি মনে করেন, জনসংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারনেই দল এখন ‘ডুবেছে’। ভোটে মানুষের কাছে
‘চড় খেয়েছে।’
জন সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণ বাতলাতে গিয়ে বেচারাম বলেন, ‘‘আমরা জনসংযোগ না করে আত্মতুষ্টিতে ভুগছিলাম। তখনই চুপিসাড়ে বিস্তার ঘটিয়েছে বিজেপি। বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করেছে। আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর তৈরি করা প্রকল্পকে বিজেপি কেন্দ্রের প্রকল্প বলে মানুষকে ভুল বুঝিয়েছে। অথচ আমাদের লোকজন দিদির প্রকল্পের বিষয়ে প্রচারেই যাননি।’’
নেতা কর্মীদের এমন আচরণে কি ফল হয়েছে তাও তিনি সভায় বলেছেন। তিনি বলছেন, ‘‘এ বারের ভোটে মানুষ আমাদের গালে থাপ্পড় মেরে বলেছে সংশোধন কর। আমাদের সংশোধন করতেই হবে।’’
২১ জুলাই কর্মসূচিতে গিয়ে দামী হোটেলে না থেকে কর্মীদের সঙ্গে তাবুতে রাত কাটানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে কর্মসূচি শেষে দিঘায় না গিয়ে দলীয় কর্মীদের নিয়ে বাড়ি ফেরার পরামর্শও তিনি দিয়েছেন। পুজোর আগে জেলা ও ব্লক ও অঞ্চলস্তরের সম্মেলন শেষ করার নির্দেশও দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy