Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪
নথিভুক্তি শুক্রবারের মধ্যে
Swastha Sathi

নার্সিংহোমে স্বাস্থ্যসাথীর জন্য প্রস্তুতি

প্রশাসন সূত্রের খবর, আগামী শুক্রবারের মধ্যে জেলার সমস্ত নার্সিংহোমকে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুস্মিত হালদার 
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২১ ০২:৩৫
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুঁশিয়ারি দেওয়ার পরেই এত দিন এই প্রকল্পের বাইরে থাকা নার্সিংহোমগুলির সঙ্গে বৈঠক করে দ্রুত নাম নথিভুক্ত করার নির্দেশ দিল নদিয়া জেলা প্রশাসন।

প্রশাসন সূত্রের খবর, আগামী শুক্রবারের মধ্যে জেলার সমস্ত নার্সিংহোমকে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তা করতে গিয়ে যদি কারও কোনও সমস্যা দেখা দেয়, সে ক্ষেত্রে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের তরফে সমস্ত সহযোগিতা করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এত দিন প্রকল্পের বাইরে থাকা নার্সিংহোমগুলি মঙ্গলবার থেকেই নাম নথিভুক্ত করার প্রস্তুতি শুরু করেছে।

নদিয়া জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছোট-বড় মিলিয়ে নার্সিংহোমের সংখ্যা প্রায় ১৪০। যার মধ্যে বেশির ভাগই ইতিমধ্যে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করেছে। যদিও তাদের মধ্যে অনেকেই এত দিন বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছিল না। কেউ কেউ বিষয়টিকে একেবারেই গুরুত্ব না দিয়ে নাম নথিভুক্ত করায়নি। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ফেরানো যাবে না বলে কয়েক দিন আগেই বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলিকে বার্তা দিয়েছিল নবান্ন। সোমবার হবিবপুরের জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দেন, “যদি কেউ চিকিৎসা না দেয়, সরকারের হাতে কিন্তু লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়ার ক্ষমতাও আছে।”

স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের শুরু থেকে সোমবার পর্যন্ত নদিয়ার ১১৮টি নার্সিংহোম ও বেসরকারি হাসপাতাল নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেছিল। বাকি ২২টি নার্সংহোম এই প্রকল্প থেকে নিজেদের দূরে রেখেছিল। শনিবার জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে রাজ্যের মুখ্যসচিব সমস্ত নার্সিংহোম ও বেসরকারি হাসপাতালকে এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই মর্মে কোনও লিখিত নির্দেশিকা না এলেও জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর সে দিন থেকেই প্রকল্পের বাইরে থাকা নার্সিংহোমগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করতে থাকে।

সোমবার দুপুর ৩টে থেকে জেলাশাসক পার্থ ঘোষ ও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে ওই সব নার্সিংহোমের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন এই প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকেরা। সেখানেই পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয় যে, বিষয়টি আর এড়িয়ে যাওয়া চলবে না। ছোট-বড় সমস্ত নার্সিংহোম ও বেসরকারি হাসপাতালকে স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় এসে মানুষকে পরিষেবা দিতেই হবে। শুক্রবারের মধ্যেই নাম নথিভুক্ত করতে হবে। মঙ্গলবার জেলাশাসক বলেন, “সকলেই নাম নথিভুক্ত করতে রাজি আছেন বলে জানিয়েছেন। নাম নথিভুক্ত করার ক্ষেত্রে প্রশাসনের তরফে সমস্ত রকম সহযোগিতা করা হবে।” তবে সকলেই যে খুব স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন তা-ও নয়। কোনও কোনও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের দাবি, এই প্রকল্পে যে ‘গ্রেড’ ও ‘রেট’ বেঁধে দেওয়া হয়েছে সেটা বাস্তবসম্মত নয়। এত অল্প টাকায় পরিষেবা দিতে গেলে কারবারে লালবাতি জ্বলবে। এই ক্ষেত্রে লাইসেন্স বাতিল করার আইনি অধিকার সরকারের আছে কি না, তা নিয়ে অনেকেরই সন্দেহ রয়েছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর একরোখা মেজাজ দেখে প্রায় সকলেই বুঝে গিয়েছেন, লাইসেন্স বাতিল হোক বা না হোক সরকারের কথা না শুনলে অন্য নানা ‘অসুবিধা’ হতে পারে। তার মধ্যে যদি আলাপ-আলোচনা চালিয়ে সরকারকে খরচের দিকটি ভেবে দেখতে বলা যায়, তাতেই মঙ্গল।

কৃষ্ণনগরের একটি প্রতিষ্ঠিত নার্সিংহোমের মালিক তথা প্রোগ্রেসিভ নার্সিংহোম অ্যান্ড হাসপাতাল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের জেলা কমিটির সম্পাদক সব্যসাচী সাহা বলেন, “আমাদের রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে সরকারি কর্তাদের আলাপ-আলোচনা চলছে। আশা করছি, সরকার খরচের দিকটি পুনরায় বিবেচনা করে দেখবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Swastha Sathi private hospitals
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE