Advertisement
১৯ মে ২০২৪

মাছের ঝোলে ভোগ নিবেদন রাজবাড়িতে

একদা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকেন্দ্র কাশিমবাজারের খ্যাতিতেই বহির্বিশ্বে মুর্শিদাবাদ বিখ্যাত ছিল। সপ্তদশ-অষ্টাদশ শতকে বঙ্গদেশের জগৎজোড়া খ্যাতির নেপথ্যেও ছিল বন্দরশহর কাশিমবাজার।

কাশিমবাজার ছোট রাজবাড়ির পুজো। —ফাইল চিত্র

কাশিমবাজার ছোট রাজবাড়ির পুজো। —ফাইল চিত্র

অনল আবেদিন
শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:১৮
Share: Save:

একদা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকেন্দ্র কাশিমবাজারের খ্যাতিতেই বহির্বিশ্বে মুর্শিদাবাদ বিখ্যাত ছিল। সপ্তদশ-অষ্টাদশ শতকে বঙ্গদেশের জগৎজোড়া খ্যাতির নেপথ্যেও ছিল বন্দরশহর কাশিমবাজার। শিক্ষা-সঙ্গীত-সাহিত্য-নাটক প্রসারে কাশিমবাজারের মহারাজা কৃষ্ণনাথ, তাঁর বালবিধবা স্ত্রী রানি স্বণর্ময়ীদেবী ও নিঃসন্তান ওই দম্পতির ভাগ্নে মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র নন্দীর অবদান আজও অম্লান। তবে সেই রাজপরিবার আজ প্রায় বিলুপ্ত। রাজকীয় দুর্গাপুজোও দীর্ঘদিন বন্ধ। বহরমপুর শহরের কাশিমবাজার এলাকার সেই ঐতিহ্য অবশ্য বহন করে চলেছে কাশিমবাজারের ছোট রাজবাড়ি।

ছোট রাজবাড়ির দুর্গাপুজোর বয়স প্রায় ৩০০ বছর। রথের দিন কাঠামো পুজো দিয়ে উৎসবের শুরু। এক চালির সপরিবার সাবেক দেবীমূর্তি। রাজবাড়ির মন্দিরে শুক্লা প্রতিপদ থেকে পঞ্চমী পর্যন্ত তিন জন পুরোহিত চণ্ডীপাঠ করেন। তিন জন দুর্গানাম জপ করেন। প্রধান পুরোহিত সৌমেশ্বর রায় বিল্ববৃক্ষের শাখার পুজোপাঠ করেন। অর্থাৎ সাত পুরোহিতের পুজো। ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় দুর্গার বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস সম্পূর্ণ হয়। সপ্তমীতে ঘট ভর্তি করে মুর্তির প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা হয়। সহ-পুরোহিত গোপাল রায় বলেন, ‘‘সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীতে কুমারী পুজো ও সধবা পুজো হয়।” তন্ত্র মতের পুজোয় আগে বলিদান প্রথা ছিল। পুরোহিত জানান, প্রায় ৪৪ বছর আগে রাজা কমলারঞ্জন রায়ের আমলে ঘাতকের অভাবে বলিদান প্রথা বাতিল করা হয়। সেই থেকে বলির অনুকল্প হিসাবে দেবীকে রুই মাছের ঝোল ও কাঁচা সন্দেশ নিবেদন করা হয়। তুলোট কাগজে হাতে লেখা ৪৫ পাতার নিজস্ব প্রাচীন পুঁথি থেকে মন্ত্র পড়ে পুজো দেওয়া হয়। সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীর তিন দিনই অন্নভোগ। সাদা ভাতের সঙ্গে থাকে ফ্রাইড রাইসও। ডাল-ভাতের সঙ্গে থাকে পাঁচ রকমের ভাজা, আলু-কপির দলমা, পাঁচ তরকারি, রুই মাছের ঝোল, শাক, চাটনি, মিষ্টি ও পায়েস। নবমীর দিন ভোগে সপ্তমী ও অষ্টমীর ভোগের মেনুর সঙ্গে যুক্ত হয় মোচার ঘণ্ট, লাউ-চিংড়ি ও ইলিশ মাছের ঝোল, ভাপা ও ভাজা। সন্ধিপুজোয় থাকবে খিচুড়ি, আলু, বেগুন, পটল ভাজা ও মাছ ভাজা।

দশমীতে মহিলাদের সিঁদুর খেলা ও অপরাজিতা পুজো। দশমীতে প্রতিমা নিরঞ্জনের পর রাজবাড়ির সদস্যরা নাটমন্দিরে সমবেত হয়ে রাজ-পুরোহিতের আর্শীবাদ নেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rajbari Durga puja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE