রানাঘাটের পুলিশ মর্গ। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
প্রায় তিন বছর ধরে বন্ধ সরকারি সরবরাহ। দান খয়রাতির উপর নির্ভর করে চলছে রানাঘাটের পুলিশ মর্গ। ময়না তদন্তের জন্য সার্জিক্যাল নাইফ, ব্লেড, সাবান, ফিনাইল কোনও কিছুই মেলে না বলে অভিযোগ। এমনকি মর্গের অফিসের জন্য চেয়ার, টেবিল, পাখাও রাজনৈতিক দলের নেতাদের কাছ থেকে চেয়ে-চিন্তে নিতে হচ্ছে। রাজ্যের সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত ক্লাবগুলোর জন্য অর্থ বরাদ্দ হলেও গুরুত্বপূর্ণ এই মর্গ পরিচালনার জন্য অর্থ বরাদ্দ বন্ধ হওয়ায় ক্ষুব্ধ সেখানকার কর্মীরা।
রানাঘাট মহাকুমা হাসপাতালের সীমানার মধ্যেই রয়েছে পুলিশ মর্গটি। এই মহকুমার অধীনে থাকা রানাঘাট, গাংনাপুর, ধানতলা, হাঁসখালি, তাহেরপুর ও শান্তিপুর থানায় দায়ের হওয়া অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলার ময়নাতদন্ত হয় এই মর্গেই। আবার ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হওয়া ব্যক্তিদের দেহও এখানে নিয়ে আসা হয়। মাসে অন্তত শ’খানেক ময়নাতদন্ত হয় এই মর্গে। কিন্তু চলছে চরম অব্যবস্থা।
কর্মীদের অভিযোগ, রিপোর্ট লেখার জন্য বই, কার্বন পেপার মিলছে রানাঘাট থানা থেকে। মর্গ পরিষ্কার করার জন্য ফিনাইল চেয়ে আনতে হচ্ছে কল্যাণী মর্গ থেকে। ভিসেরা জার, হ্যান্ড গ্লাভস, মাস্ক, সার্জিক্যাল ক্যাপ, স্যাচুরেটেড স্যালাইন ইত্যাদির সরবরাহ বন্ধ হয়েছে প্রায় তিন বছর আগে। মহকুমা হাসপাতালের ফেলে দেওয়া একটি লোহার আলমারি মেরামত করে তাতে রংয়ের প্রলেপ দিয়ে ব্যবহারযোগ্য করা হয়েছে। সেই আলমারিতেই রাখা হচ্ছে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট। মর্গের অফিসে এত দিন কোনও চেয়ার ছিল না। কিছুদিন আগে রানাঘাট শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের পুর প্রতিনিধি বিজন সরকারের সৌজন্যে কয়েকটি চেয়ার মিলেছে। অফিসের টেবিল দিয়েছেন কুপার্সের তৃণমূল নেতা পিন্টু দত্ত। দিন কয়েক আগে মৃতদেহ বহনকারী স্ট্রেচারের চাকা ভেঙে গিয়েছিল। রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের দৌলতে ওই ভাঙা চাকা জোড়া লাগে।
এত অব্যবস্থা সত্ত্বেও প্রশাসন কেন উদাসীন?
রানাঘাটের মহকুমাশাসক রৌনক আগরওয়াল বলেন, "পুলিশ মর্গটি আগে মহকুমা প্রশাসনের অধীনে থাকলেও এখন সেটিকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাই মর্গের যাবতীয় দায়ভার পুলিশেরই।" প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ে রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার কুমার সানি রাজকে একাধিক বার ফোন এবং মেসেজ করা হলেও জবাব মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy