রানিনগরে তৃণমূলের পার্টি অফিসে অগ্নিসংযোগ (বাঁ দিকে), ধৃত কংগ্রেস নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কুদ্দুস আলি (ডান দিকে)। — নিজস্ব চিত্র।
শুক্রবার মুর্শিদাবাদের রানিনগরে সংঘর্ষ এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতি তথা কংগ্রেস নেতা-সহ ৩১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের শনিবারেই আদালতে তোলা হয়। কংগ্রেসের অভিযোগ, অগণতান্ত্রিক ভাবে তাদের কর্মী-সমর্থকদের গ্রেফতার করিয়েছে তৃণমূল। বাম, কংগ্রেসের বিরুদ্ধে পাল্টা সন্ত্রাসের অভিযোগে সরব শাসকদল তৃণমূল। সব মিলিয়ে গোলমালের ২৪ ঘণ্টা পরেও উত্তপ্ত রানিনগর।
কংগ্রেসের বিজয় সমাবেশ থেকে ফেরার পথে থানা ভাঙচুর এবং তৃণমূলের পার্টি অফিসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে রানিনগর। উত্তেজিত জনতাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করার পাশাপাশি, কাঁদানে গ্যাসের শেলও ফাটায় পুলিশ। সেই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করা হয় রানিনগর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কুদ্দুস আলি-সহ মোট ৩১ জন বাম এবং কংগ্রেস সমর্থককে। ধৃতদের শনিবারেই লালবাগ আদালতে পেশ করা হয়েছে। আদালত কুদ্দুস-সহ ৩১ জনকেই ১৪ দিন জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে।
রানিনগর পঞ্চায়েত সমিতিতে জয় পেয়েছে বাম, কংগ্রেস সমর্থিত প্রার্থী। এই উপলক্ষে শুক্রবার বিজয় সমাবেশের ডাক দিয়েছিল বাম এবং কংগ্রেস। অভিযোগ, সেই সমাবেশে যোগ দিতে যাওয়ার পথে বাধার মুখে পড়েন কংগ্রেস কর্মীরা। কংগ্রেস নেতাদের অভিযোগ, পুলিশের সঙ্গে একযোগে তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের সমাবেশে যেতে বাধা দেন তৃণমূল কর্মীরাও। সমাবেশ থেকে ফেরার পথে এই ঘটনা নিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অভিযোগ, কংগ্রেস কর্মীরা রানিনগর থানায় ঢুকে তাণ্ডব চালান। থানা লক্ষ্য করে চলে তুমুল ইটবৃষ্টি। রাজ্য সড়কের পাশে তৃণমূলের পার্টি অফিস মান্নান হোসেন ভবনেও ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে রানিনগর থানার পুলিশকে সাহায্য করতে ডাক পাঠানো হয় আশপাশের থানার পুলিশকর্মীদেরও। তার পর কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে এবং লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি সামাল দেয় পুলিশ।
জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী শাওনি সিংহ রায় বলেন, ‘‘স্থানীয় দুষ্কৃতীদের সাহায্যে কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকেরা থানা ভাঙচুরের মতো দুঃসাহসিক এবং বেআইনি কাজ করেছেন। আমাদের পার্টি অফিসে ঢুকে অবাধে ভাঙচুর চালিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নথি লুট করা হয়েছে। পুলিশের কাছে অনুরোধ, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য।’’
যদিও তৃণমূলের অভিযোগ মানতে রাজি নয় কংগ্রেস। তাদের দাবি, ঘটনার পিছনে রয়েছে তৃণমূলের প্ররোচনা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘শাসকদল তৃণমূল এবং তাদের দোসর পুলিশ যৌথ ভাবে বিরোধী কর্মীদের ফাঁসানোর চক্রান্ত করছে। এই প্রচেষ্টা শুধু অগণতান্ত্রিকই নয়, বেআইনিও বটে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy