কোনওটিকে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নেই তো কোনওটির নেই পরিবেশে নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের শংসাপত্র। কোনওটিতে চিকিৎসক ও নার্সের তুলনায় শয্যাসংখ্যা অনেকটাই বেশি, কোনওটির বাড়ির নকশায় গোলমাল।
নদিয়ায় এ পরম ছ’টি নার্সিংহোম সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখতে বলেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। সেই সঙ্গে একটি নার্সিংহোমকে শো-কজ করা হয়েছে।
সম্প্রতি জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা আচমকা জেলার বিভিন্ন প্রান্তে নার্সিংহোমে আচমকা হানা দিয়েছিলেন। তাতেই এই সাতটি নার্সিংহোম বিপাকে পড়ে যায়। তাদের চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যে সমস্ত গাফিলতি রয়েছে সেগুলি ঠিক না হওয়া পর্যন্ত কোনও ভাবেই আর নার্সিংহোম খুলতে দেওয়া হবে না।
কারা পড়ল এই তালিকায়?
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, কৃষ্ণনগরের ডিভাইন নার্সিংহোম, রানাঘাটের ভবানী নার্সিংহোম, কল্যাণীর জয়মালা নার্সিংহোম, দ্য হ্যাপি সোনি নার্সিংহোম, এডিওম অ্যাপেলাইন নার্সিংহোম, করিমপুরের নিউ জীবনদীপ নার্সিংহোম সাময়িক ভাবে বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কৃষ্ণনগরের কায়াকল্প নার্সিংহোমকে করা হয়েছে শো-কজ।
জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলেন, “ওই নার্সিংহোমগুলির নানা সমস্যা আছে। সামান্য অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থাও কোনও-কোনওটিতে। নির্দেশিকা ঠিক ভাবে মানা না হলে আমরা কোনও নার্সিংহোম চলতে দেব না।” এ বারেই শেষ নয়, এর পরেও আচমকা হানা দেওয়া হতে পারে হুঁশিয়ারি দিয়ে জেলাশাসক বলেন, “পরিকাঠামো ঠিক করে নার্সিংহোমগুলি আমাদের জানাক। সব দিক খতিয়ে দেখে অনুমোদন দেব।” নদিয়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় অবশ্য দাবি করছেন, “পরিকাঠামো ঠিক না করে মানুষের জীবন নিয়ে ব্যবসা করতে দেব না।”
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, উত্তর ২৪ পরগনার একটি নার্সিংহোম থেকে শিশু পাচারের ঘটনা সামনে আসার পরেই নড়েচড়ে বসেছিলেন কর্তারা। অতিরিক্ত জেলাশাসক থেকে শুরু করে বিডিও, মহকুমা থেকে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকরা দল বেঁধে হানা দিতে থাকেন বিভিন্ন নার্সিংহোমে। জেলার ৯৭টি নার্সিংহোমের মধ্যে ৫০টি দেখার পরে চার মহকুমার ছ’টি সংস্থা সাময়িক ভাবে বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এর মধ্যে ডিভাইন নার্সিংহোমে কর্মী সমস্যা ছাড়াও দেখা যায়, ২০টি শয্যার অনুমোদন থাকলেও সাতটি বেশি রয়েছে। ভবানী নার্সিংহোমের অগ্নিনির্বাপক বাবস্থা ছিল না। একই দশা দ্য হ্যাপি সোনি নার্সিহোমেরও। ভবানী নার্সিংহোমের মালিক ননীগোপাল সিকদারের দাবি, “গ্রামে নার্সিংহোম আমাদের। ঠিক মতো অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা করতে গেলে কয়েক লক্ষ টাকার ধাক্কা। তা-ও করে নিচ্ছিলাম। তার আগেই তো বন্ধ করে দিল!” দ্য হ্যাপি সোনি নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের তরফে শিবাজি রায়ের দাবি, “আমাদের অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থ তৈরি। কাগজপত্র জমা দিতে দেরি হয়ে গিয়েছিল।” আবার ডিভাইন নার্সিংহোমের মালিক সুকুমার নন্দী দাবি করেন, “ওঁরা টিফিনের সময়ে এসেছিলেন। ডাক্তার, নার্স আর কয়েক জন কর্মী খেতে গিয়েছিলেন। আমাদের কোন সমস্যাই নেই।”
নার্সিংহোম মালিকদের সংগঠন নদিয়া ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট অ্যান্ড নার্সিংহোম ওয়েলফেয়ার সোসাইটির যুগ্ম সম্পাদক সব্যসাচী সাহা বলেন, “প্রশাসনের এই উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাচ্ছি। কোনও রকম ফাঁকফোকর সমর্থন করছি না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy