প্রতীকী ছবি।
কংগ্রেসের গড় হাতিয়ে নতুন জেলা কমিটি গড়েছে তৃণমূল। আর, কলেবরে সুবিশাল সেই কমিটির চেহারা এবং সদস্যদের নাম দেখে মেঘ ঘনিয়েছে জেলা তৃণমূলের অধিকাংশ নেতার।
কোনও রাখঢাক না রেখেই তাঁদের কেউ বলছেন, ‘‘আমাকে জানানোই হয়নি।’’ কেউ আরও খোলামেলা, ‘‘বন্দুক বাজ থেকে বিতর্কিত প্রবাসী ব্যবসায়ীদের যাঁরা কমিটিতে ঠাঁই দিয়েছেন, তাঁরা দায়িত্ব নিয়ে তৃণমূলের মুখ পুড়িয়েছেন।’’ কে করেছেন ওই কমিটি? জেলা সভাপতি সুব্রত সাহা বলছেন, ‘‘কমিটি আমার গড়া নয়। দলের শীর্য নেতৃত্ব যা নাম পাঠিয়েছেন আমি শুধু তা ঘোষণা করেছি।’’
তবে, জেলা তৃণমূলের তাবড় নেতাদের অধিকাংশই জানিয়েছেন, এই কমিটি গড়ার ব্যাপারে তাঁদের সঙ্গে কোনও আলোচনাই করা হয়নি। জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র তথা জেলা দলের সহ-সভাপতি অশোক দাস বলছেন, ‘‘কোর-কমিটির ছ’জনের সঙ্গে আলোচনা করে কমিটি গড়া হলে ভাল করতেন জেলা সভাপতি। কিন্তু তিনি তা করেননি।’’ তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি সৌমিক হোসেনের অভিযোগ, ‘‘জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী ছ’জনকে নিয়ে কোর কমিটি গঠন করে দেন। কিন্তু জেলা সভাপতি কোর কমিটির সদস্যের সঙ্গে কমিটি নিয়ে আলোচনা করার প্রয়োজন মনে করেননি।’’ সৌমিকের মতো জেলা নেতাদের অনেকরই ‘অভিমান’, দলনেত্রী সকলকে নিয়ে দল চালানোর কথা বলেন, সভাপতি দল পরিচালনার ব্যাপারে আলোচনা করেন না। সুব্রত যা শুনে বলছেন, ‘‘কে কি বলছেন জানি না, তবে আবার বলছি, ওই কমিটি আমার নিজের হাতে গড়া নয়।’’ দলীয় ওই কমিটিতে এমন অনেক সদস্যের নাম রয়েছে, যাঁদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা ঝুলছে। জেলার রাজনীতির সঙ্গে বিন্দুমাত্র যোগ নেই, এমন দিল্লি প্রবাসী শিল্পপতির নামও রয়েছে সেই তালিকায় বলে দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে। জেলা সভাপতি গ্যাসের ডিলার, কমিটিতে ঠাঁই হয়েছে, তাঁর দোকানের এক কর্মচারীরও। কমিটিতে ঠাঁই পেয়েছেন কান্দি পিস্তল-কান্ডে জড়িত দুই ভাই, পার্থসারথি এবং সব্যসাচী দাস। তিন বছর আগে, কান্দিতে দলীয় মিছিলে পিস্তল নিয়ে দেখা গিয়েছিল তাঁদের। ওই ঘটনায় সব্যসাচীকে পুলিশ গ্রেফতার করে, ১৩ দিন জেল হাজতে কাটানোর পরে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন তিনি।
সদ্য কংগ্রেস থেকে দল বদলে তৃণমূলে যোগ দেওয়া কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকারও বলছেন, “কান্দিতে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করেই আমরা রাজনীতি করি। দলীয় নতুন কমিটি ওঁদের নিয়ে য়া বলার শীর্ষ নেতৃত্বকে বলব।” দলের অন্দরের খবর, পার্থ-সব্যসাচীর বাবা সনাতন দাসের কাছে বছরখানেক আগে দীক্ষা নিয়েছেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি। মাঝে-মধ্যে ‘গুরু’র বাড়িতে গিয়ে খোল বাজিয়ে নাম-কীর্তন করেন তিনি। সেই সূত্রেই কি ওই দুই ভাইয়ের কমিটিতে ঠাঁই হয়েছে, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়ে। সুব্রত অবশ্য বলেন, ‘‘সব্যসাচী ওই গুলি ছোঁড়ার ঘটনায় কোনও ভাবে জড়িত নয়।”
যা শুনে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘কান্দির ওই দুই ভাই শাসক দলের সম্পদ! তারাই গত পঞ্চয়েত ভোট দলের হয়ে সামাল দিয়েছে। তাদের ঠাঁই হবে না!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy