দর্শনী ছিল পাঁচ টাকা। তাতেও ভিড় ঠেকানো যায়নি। প্রায় ষাট হাজার দর্শনার্থী ভিড় জমিয়েছিলেন ঠাকুর-মণ্ডপ দেখতে। তাই দেখে মুখে চওড়া হাসি ফুটেছিল পুজো উদ্যোরক্তাদের।
তাই এ বছরও কোনও খামতি রাখতে চাননি। আরও নজরকাড়া প্রতিমা ও মণ্ডপ বানিয়ে দর্শকদের চমকে দিতে চেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু শেষমেষ সেই পরিকল্পনায় জল ঢালতে হয়। পিছিয়ে আসতে হল তাঁদের! আর এর জন্য তাঁরা দুষছেন জঙ্গিপুর পুরসভাকে!
রঘুনাথগঞ্জ শহরের বড় বাজেটের পুজো প্রতাপপুর জাগ্রত সঙ্ঘের। পুজোর উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, রঘুনাথগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের কাছে দীর্ঘদিনের নিকাশি নালা আবর্জনা ফেলে বন্ধ করে দিয়েছে পুরসভা। তার ফলেই এলাকার চড়কের মাঠ থেকে বৃষ্টির জমা জল বেরোতে পারছে না। ওই চড়কের মাঠেই ১৬ বছর ধরে দুর্গাপুজো করে আসছে জাগ্রত সঙ্ঘের উদ্যোক্তারা। যার সভাপতি তৃণমূলেরই ব্লক সভাপতি মুক্তিপ্রসাদ ধর। অভিযোগ, জঙ্গিপুর পুরসভাকে লিখিত ভাবে জানানো হয় জমা জল বের করতে নিকাশি নালা পরিষ্কার করার জন্য। কিন্তু বার বার বলেও কোনও ফল হয়নি। তাই তাঁরা ভেবেছিলেন ক্লাবের সদস্যেরা গিয়ে পুরসভায় ধর্না দেবেন। কিন্তু তা নিয়ে উত্তেজনার ছড়াতে পারে ভেবে পিছিয়ে আসেন। প্রতিবাদে তাঁরা পুজোটাকেই পাশে এক ছোট জায়গায় সরিয়ে নিয়ে এসেছেন। কমানো হয়েছে আয়োজনও।
পুজো কমিটির সহ সভাপতি প্রসেনজিৎ সরকার জানান, প্রতি বছরই তাঁদের পুজোকে ঘিরে একটা বাড়তি আকর্ষণ থাকে শহরে। গত বছর থেকে সে আকর্ষণ আরও বেড়েছে। গত বছর দক্ষযজ্ঞে সতীর দেহত্যাগ ও মহাদেবের প্রলয় নৃত্যের কাহিনীকে ঘিরে তৈরি হওয়া ৫১টি পীঠকে তুলে ধরা হয়। মাঠের প্রায় ১০০০ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে গড়ে তোলা হয় মণ্ডপ। প্রায় ১০ লক্ষ টাকা বাজেটের পুজো বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাঁদা আদায় করে তোলা সম্ভব ছিল না। তাই টিকিট কেটে প্রতিমা দর্শনের আয়োজন করা হয়। রাজ্য সরকারকে কর দিয়ে প্রতিমা দর্শনে ৫ টাকা করে টিকিট আদায়ের অনুমতিও মেলে। সেই ৫ টাকার টিকিট কেটে অন্তত ৬০ হাজার দর্শনার্থী প্রতিমা দেখতে আসেন বলে তাঁর দাবি।
এ বারও ভাল বাজেটের পুজো করা হবে ঠিক হয়। কিন্তু মাঠের জল সরাতে পুরসভা কোনও ব্যবস্থা না নেয়নি। ফলে নিরুপায় হয়ে মণ্ডপের জায়গা সরিয়ে নেওয়া হয়।
পুরপ্রধান তৃণমূলের মোজাহারুল ইসলাম অবশ্য বলেছেন, “ওই এলাকায় নিকাশি বন্ধ হওয়ার কথা নয়। ওই পুজোর সভাপতি মুক্তিবাবু। তিনিও আমাকে বিষয়টি ব্যক্তিগত ভাবে জানালে ব্যবস্থা নিতাম। তবে পুরসভার যদি কিছু করার থাকে অবশ্যই তা করা হবে।”
যা শুনে মুক্তিবাবু বলছেন, “এটা তো আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার নয়। ক্লাবের ব্যাপার। পুরসভারই উচিত ছিল এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy