Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪
পাহাড়ে প্লাস্টিক নয়, দীর্ঘ যাত্রায় বার্তা করিমপুরের জ্যোতিষ্কের

সাইকেলে ১৮৬ দিন হিমালয়ে

ঘুরতে গিয়ে পাহাড়ি ফুল ছিঁড়তে দেখা যায় অনেককে। প্লাস্টিক ফেলে আসেন যেখানে-সেখানে। জরিমানা করেও সে কাজে রাশ টানা যায়নি। তাই পাহাড়কে পরিচ্ছন্ন রাখার বার্তা দিতে সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন সদ্য কলেজ পেরনো যুবক।

হিমাচলপ্রদেশে জ্যোতিষ্ক। নিজস্ব চিত্র

হিমাচলপ্রদেশে জ্যোতিষ্ক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
করিমপুর শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:০০
Share: Save:

ঘুরতে গিয়ে পাহাড়ি ফুল ছিঁড়তে দেখা যায় অনেককে। প্লাস্টিক ফেলে আসেন যেখানে-সেখানে। জরিমানা করেও সে কাজে রাশ টানা যায়নি। তাই পাহাড়কে পরিচ্ছন্ন রাখার বার্তা দিতে সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন সদ্য কলেজ পেরনো যুবক। গত শনিবার শেষ হয়েছে তাঁর সেই যাত্রা। মাঝখানে পার হয়ে গিয়েছে একশো ছিয়াশি দিন। পার করে ফেলেছেন সাত হাজার আটশো একানব্বই কিলোমিটার পথ। পথে আলাপ হয়েছে বহু মানুষের সঙ্গে। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন বিদেশিরাও।

করিমপুরের ওই যুবকের নাম জ্যোতিষ্ক বিশ্বাস। গত ১৩ মে করিমপুর যাত্রা শুরু করেন। ২০ মে কলকাতা থেকে হিমালয়ের উদ্দেশে যাত্রা শুরু। তার পর বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, দিল্লি, পাঞ্জাব, জম্মু-কাশ্মীর, হিমাচলপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, সিকিম, নেপাল, অসম পেরিয়ে অরুণাচল প্রদেশের পূর্বপ্রান্তে পাসিঘাটে পৌঁছন তিনি। সেখানেই শেষ করেন তাঁর যাত্রা।

ফোনে জ্যোতিষ্ক জানান, ছোট বেলায় ইটানগরে থাকার সময় পাহাড়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন। সেই থেকে পাহাড়ের প্রতি তাঁর টান। তিনি দেখেছেন, ঘুরতে গিয়ে পাহাড়ে পর্যটকদের যত্রতত্র প্লাস্টিক, বর্জ্য ফেলতে। কিন্তু সমতলের মতো পাহাড়ে সহজে সেগুলো পরিষ্কার করা যায় না। ফলে সৌন্দর্যের হানি ঘটে। বিঘ্নিত হয় পরিবেশের ভারসাম্য। কিন্তু তার পরেও অনেকে এ ব্যাপারে সচেতন নন। তাই সমতল, সমুদ্রের পাশাপাশি পাহাড়কে দূষণ মুক্ত রাখার প্রচার চালাতে সাইকেলে চেপে যাত্রা শুরু করেন। সাইকেল চালিয়ে তিনি বারাণসী, আগ্রা, দিল্লি, জম্মু, শ্রীনগর, কার্গিল, লে, থাং, খারদুংলা, মানালি, বাটাল, কাজাহিক্কিম, সিমলা, দেহরাদুন, ঋষিকেশ, নেপালের পোখরা, কাঠমাণ্ডু, রাজ্যের শিলিগুড়ি, সান্দাকফু হয়ে অসম ও অরুণাচল প্রদেশে যান। পাসিঘাটে শেষ করেন তাঁর যাত্রা। হিমালয় পার হওয়ার সময় রাত কাটিয়েছেন কখনও কারও বাড়িতে, মন্দির কিংবা গুরুদ্বারে। কখনও বা গেস্টহাউসে। দীর্ঘ যাত্রায় তিনি মানুষকে দূষণের ব্যাপারে সচেতন করেছেন। বুঝিয়েছেন প্লাস্টিক ব্যবহারের কুফল কী, প্রকৃতিতে কী ভাবে তা প্রভাব ফেলে। জ্যোতিষ্ক নিজে ক্রিকেটার হলেও ফুটবলের প্রতিও তাঁর ভালবাসা রয়েছে। তাই তাঁর ইচ্ছে, ফুটবল দেখতে আমেরিকায় যাবেন ও সেখান থেকে সাইকেলে চেপে পাড়ি দেবেন আন্দিজ পর্বতে।

এ দিকে, করিমপুরের বাড়িতে ছেলে ফেরার অপেক্ষায় দিন গুনছে জ্যোতিষ্কের পরিবার। তাঁর বাবা স্কুলশিক্ষক নীতিশ বিশ্বাস বলেন, “খুব ছোট থেকেই পাহাড়ের প্রতি ঝোঁক রয়েছে ছেলের। গত বছর চোদ্দো দিনের সাইকেল সফরে মেঘালয় ঘুরে এসেছে। ওর এই সাফল্যে সকলেই গর্বিত।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Himalaya Cycle Plastic Pollution
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE