ভেঙে পড়েছেন আত্মীয়েরা। নিজস্ব চিত্র
বন্ধুর বাড়িতে রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হল এক তরুণের। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম জয়ন্ত হালদার (১৮)। তেহট্ট থানার বেতাই এলাকার ঘটনা।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেতাইয়ের ছানাতলায় এক বন্ধুর বাড়িতে সোমবার দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র জয়ন্তকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পাওয়া যায়। তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। একই সঙ্গে হাসপাতাল থেকে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ জয়ন্তের তিন বন্ধুকে আটক করেছে।
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ নিয়ে মন্তব্য করতে চায়নি পুলিশ। মৃত ছাত্রের বাবা জয়দেব হালদারের অভিযোগ, খুন করা হয়েছে তাঁর ছেলেকে। যদিও মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, প্রেমঘটিত কারণে জয়ন্তের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেতাই উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র জয়ন্তের সঙ্গে কিছু দিন আগে নবম শ্রেণির ছাত্রী এক কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। ওই কিশোরীর পরিবার সম্পর্ক মানতে চায়নি। যা নিয়ে জয়ন্ত এবং ওই কিশোরীর মনোমালিন্য চলছিল। সেই মনোমালিন্য মেটাতে তিন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে জয়ন্ত সোমবার তেহট্ট-১ ব্লক অফিসে গিয়েছিলেন। কারণ, ওই ব্লক অফিস থেকে ওই দিন সবুজ সাথী প্রকল্পের সাইকেল বিতরণ করা হচ্ছিল এবং ওই ছাত্রীর সাইকেল নিতে আসার কথা ছিল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদের সময় জয়ন্তের বন্ধুরা জানিয়েছেন, ব্লক অফিসে কিছুক্ষণ গল্প করার পর খাওয়াদাওয়া করতে বেরিয়ে আসেন তাঁরা। হাউলিয়া পার্ক মোড়ে জয়ন্তের সঙ্গে ওই কিশোরীর বচসা হয়। বচসা চলাকালীন জয়ন্ত কিশোরীর মোবাইল রাস্তায় আছাড় মেরে ভেঙে ফেলেন। ওই কিশোরী রাগ করে অটোয় বাড়ি চলে যায়। এরপর জয়ন্ত ও তাঁর বন্ধুরা ছানাতলায় ওই বন্ধুর বাড়িতে যান। সে সময় ওই বাড়িতে জয়ন্ত ও তাঁর বন্ধুরা ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। বিকেল ৪ টে নাগাদ এক বন্ধু মাঠে খেলতে যায়। অপর দুই বন্ধু বাইরে খেতে যান। বাড়িতে সে সময় একা ছিলেন জয়ন্ত। কিছুক্ষণ পর মাঠ থেকে ফিরে জয়ন্তকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ওই বন্ধু। এরপর সে অন্য দুই বন্ধুকে ডাকে। তিনজন জয়ন্তকে একটি টোটোয় তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান।
সেখানে চিকিৎসক জয়ন্তকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতাল থেকে খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। পুলিশ ওই তিন বন্ধু-সহ টোটো চালককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে টোটো চালককে ছেড়ে দিলেও ওই তিন বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। জয়ন্তের বাবা বলেন, ‘‘আমার ছেলেকে খুন করা হয়েছে। দিন কয়েক আগে এক ছাত্রীর মা আমার দোকানে এসে আমাকে ও আমার ছেলেকে হুমকি দিয়ে গিয়েছে।’’ পাশাপাশি, তাঁর অভিযোগ, জয়ন্তকে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy