জিততে যে পারবেন না, সেটা জানেন ওঁরা। ওঁদের জন্য কেউ যে হেরে যেতে পারে, তা-ও বিলক্ষণ জানেন মনে-মনে। তবে, অন্যকে হারাতে মোটেই ভোটের ময়দানে নামেননি। নিজেদের শক্তি পরখটাই আসল উদ্দেশ্য। অন্তত মুখে এমনটাই বলছেন নদিয়ায় চাকদহ বিধানসভা উপ-নির্বাচনের কংগ্রেস প্রার্থী সমরলাল সিংহ রায় (খোকন), বিজেপি প্রার্থী মহাদেব বসাক এবং পিডিএস প্রার্থী পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়।
গত ২৪ ফেব্রয়ারি কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে চাকদহের তৃণমূল বিধায়ক নরেশচন্দ্র চাকীর মৃত্যু হয়। আগামী ১২ মে রাজ্যের পঞ্চম দফা লোকসভা নির্বাচনের দিন ওই কেন্দ্রেও উপ-নির্বাচন হতে চলেছে। মূলত এই কেন্দ্রে লড়াই হবে তৃণমূল প্রার্থী রত্না ঘোষ এবং সিপিএম প্রার্থী বিশ্বনাথ গুপ্তের মধ্যে। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ১৪ হাজার ৯৯ ভোটের ব্যবধানে সিপিএম প্রার্থী বিশ্বনাথ গুপ্তকে পরাজিত করেছিলেন তৃণমূলের প্রয়াত নরেশচন্দ্র চাকী। নরেশবাবু পেয়েছিলেন ৮৮ হাজার ৭৭১টি ভোট। অন্য দিকে সিপিএম প্রার্থী বিশ্বনাথবাবু পেয়েছিলেন ৭৪ হাজার ৬৭২টি ভোট। সেই সময় কংগ্রেসের সঙ্গে জোট ছিল তৃণমূলের। আর পিডিএস-এর কোনও প্রার্থী ছিল না।
এ বার কংগ্রেসের প্রার্থী খোকনবাবু প্রদেশ কংগ্রেসের সদস্য। এর আগে পঞ্চায়েত স্তরে জিতলেও লোকসভা কেন্দ্রে এই প্রথম। এমনিতে এই বিধানসভা এলাকায় চাকদহ পুরসভা এবং আটটি গ্রাম পঞ্চায়েতের সবগুলোই রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে। এমনকী চাকদহ পঞ্চায়েত সমিতিও তৃণমূলের দখলে। ৪৭টি আসন বিশিষ্ট এই সমিতিতে কংগ্রেসের রয়েছেন মাত্র ৪ জন সদস্য। ফলে খোকনবাবুর জেতার যে বিশেষ সম্ভাবনা নেই তা ঘরোয়া আলোচনায় মেনে নিচ্ছেন কংগ্রেস নেতা-কর্মীরাও। তবে, প্রকাশ্যে এই নিয়ে মুখ খুলতে রাজি নন কেউ। চাকদহ ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি বিধুভূষণ চক্রবর্তী বলেন, “এবার এই কেন্দ্রের ভোটার ২ লক্ষ ১৩ হাজার ৩১৩ জন। এর মধ্যে কমপক্ষে ১৫ শতাংশ ভোটার আমাদের।”
গত বছর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী বিশ্বজিৎ ঘোষ সাড়ে পাঁচ হাজারের মতো ভোট পেয়েছিলেন। এ বার সেটা আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, কংগ্রেসের মতো তাদেরও জেতার সম্ভাবনা দেখছে না কেউ। এ বার তাদের প্রার্থী মহাদেব সরকার। দলের চাকদহ ব্লকের সভাপতি নারায়ণ দে বলেন, “গতবারের তুলনায় আমরা দ্বিগুণ ভোট পাব। সর্বত্র আমাদের কর্মীরা মাঠে নামতে শুরু করেছে।”
কিন্তু এই ভাবে ভোট কাটায় তো সিপিএমেরই সুবিধা হবে। নারায়ণবাবুর জবাব, “কার সুবিধা হবে, তা বলতে পারব না। আমাদের ভোট বাড়ছে এতটুকু বলতে পারি।”
এই কেন্দ্রে পিডিএসের প্রার্থী পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায় হরিণঘাটার বাসিন্দা। তিনি দলের যুব সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক। এর আগে তার একবার জেলা পরিষদে দাঁড়ানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে। দলের জেলা কমিটির সদস্য সিরাজুল মণ্ডল বলেন, “কাউকে সুবিধা করে দেওয়ার জন্য আমরা প্রার্থী দিইনি। আমরা চাই হিংসামুক্ত রাজনীতি। সেই বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য। পাশাপাশি এর মাধ্যমে আমাদের রাজনৈতিক শক্তিটাও যাঁচাই করে নিতে পারব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy