ইরাক অশান্ত। মনে শান্তি নেই নদিয়ার বেশ কয়েকটি পরিবারেরও। এখনও পর্যন্ত তেহট্টের ইলসামারির বাসিন্দা খোকন সিকদার কিংবা চাপড়ার সমর টিকাদার কারও সঙ্গেই যোগাযোগ করতে পারেননি তাঁদের পরিবারের লোকজন।
সাড়ে তিন বছর আগে কাঠের কাজ করতে ইরাকের মসুল শহরে গিয়েছেন খোকন। প্রতি শুক্রবার ফোনে পরিবারের সঙ্গে কথা বলতেন তিনি। গত ১৩ জুন, সন্ধ্যায় ফোন করে তিনি জানান, জঙ্গিরা তাঁদের অপহরণ করেছে। সেদিন রাতে ও পরের দিন বেশ কয়েকবার খোকনবাবুর সঙ্গে কথা বলতে পেরেছিলেন স্ত্রী নমিতাদেবী। তিনি বলেন, “ওর সঙ্গে শেষবার কথা হয়েছে ১৫ জুন। তার পরের দিন থেকে ওর ফোনের রিং বেজে গেলেও কেউ ফোন ধরেনি। ১৯ জুন থেকে ওর ফোন বন্ধ। ” এরপর নমিতাদেবী দেখা করেন তেহট্ট থানার পুলিশ, মহকুমাশাসক ও জেলাশাসকের সঙ্গে। তারপরে কেটে গিয়েছে আরও দশটা দিন। কোনও খোঁজ মেলেনি খোকনবাবুর। নমিতাদেবী বলেন, “বাড়িতে অসুস্থ শাশুড়ি ও ছেলেমেয়েকে নিয়ে খুব কষ্টের মধ্যে আছি। টাকাপয়সাও সব শেষ হয়ে গিয়েছে। জেলাশাসক বলেছিলেন, খোঁজ পেলেই জানাবেন। ভাবছি ফের একবার জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করব।” প্রতিবেশী সমীরণ রায় বলছেন, “একটা জলজ্যান্ত মানুষ বিদেশে কাজে গিয়ে হারিয়ে গেল। আর আমাদের দেশের সরকার এখনও পর্যন্ত কিছুই করতে পারল না! ” খোকনবাবুর পরিবারের মতোই উদ্বেগে রয়েছেন সমরবাবুর পরিবারের সদস্যরাও। স্ত্রী দীপালিদেবী তাঁর দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে এখন হাঁসখালিতে বাবার বাড়িতেই আছেন। সেই কবে এক রবিবারে ফোন করে সমরবাবু জানিয়ে ছিলেন, তাঁকে কারা যেন তুলে নিয়ে গিয়েছে। সেই শেষবার। তারপর দু’একদিন ফোন বেজে গেলেও কেউ ধরেনি। তারপরে ফোনটাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে অবশ্য নানা সময়ে নানা খবর ভেসে এসেছে। তাতে উদ্বেগ আরও বেড়েছে বই কমেনি। তবে রবিরার সকালে সমরবাবুর মোবাইলে রিং হয়েছিল। ফোনও ধরেছিলেন একজন। ফোনের ও প্রান্তে কেউ একজন আরবিতে কিছু কথা বলে ফোনটা কেটে দিয়েছে। সোমবার দীপালিদেবী হাঁসখালির পাটিকাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা ক্ষিতীশ বিশ্বাসের বাড়ি গিয়েছিলেন। ক্ষিতীশবাবুও এখন ইরাকে আছেন। দিপালীদেবী বলেন, “ক্ষিতীশবাবুর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। উনি আছেন বসরা এলাকায় একটা ক্যাম্পে। কিন্তু আমার স্বামী আছেন মসুল এলাকায়। সেখানেও নাকি সকলকে ক্যাম্পে রাখা হয়েছে। এর বেশি ক্ষিতীশবাবু আর কিছু জানাতে পারেননি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy