Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪

জমি দেবে সমুদ্র, নয়া বন্দর তাজপুরে

কলকাতা ও হলদিয়া বন্দর রয়েছে। গত আট বছর ধরে সাগরে একটি বন্দর নির্মাণের প্রস্তাব নিয়েও চর্চা কম হয়নি। এখন সেটিকে বাতিল করে নতুন একটি বন্দর নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার।

এই সমুদ্রেই নতুন বন্দরের প্রস্তাব। তাজপুর উৎসবে গিয়েই কি সেই স্বপ্নের বীজ পুঁতেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! —ফাইল চিত্র।

এই সমুদ্রেই নতুন বন্দরের প্রস্তাব। তাজপুর উৎসবে গিয়েই কি সেই স্বপ্নের বীজ পুঁতেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৬ ০৯:৩০
Share: Save:

কলকাতা ও হলদিয়া বন্দর রয়েছে। গত আট বছর ধরে সাগরে একটি বন্দর নির্মাণের প্রস্তাব নিয়েও চর্চা কম হয়নি। এখন সেটিকে বাতিল করে নতুন একটি বন্দর নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। শুক্রবার বিধানসভায় রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে ঠিক হয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরের তাজপুর ও শঙ্করপুরের মধ্যে নতুন বন্দর গড়ে তোলা হবে। তবে সরকার নিজেরা ওই বন্দর তৈরি করবে না। নির্মাণ করবে কোনও বেসরকারি সংস্থা। এবং তারাই থাকবে বন্দর পরিচালনার দায়িত্বে।

রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বলেন, নতুন বন্দর তৈরি করতে খরচ হবে ৪২৩১ কোটি টাকা। রাজ্য সরকার ১৫০ কোটি খরচ করে সেই বন্দরে যাতায়াতের সড়ক এবং রেলপথ তৈরি করে দেবে।

পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকার কোনও দরপত্র বা নিলাম ছাড়াই একটি সংস্থাকে রসুলপুরে বন্দর নির্মাণের ছাড়পত্র দিয়েছিল বলে অর্থমন্ত্রীর অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রসুলপুরে বাম জমানার সেই বন্দর প্রকল্প বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছেন। এখন নতুন বন্দর নির্মাণ করা হবে।’’

এ দিন প্রস্তাবিত নতুন বন্দরের অবস্থানগত সুযোগ-সুবিধা এবং বিনিয়োগের সম্ভাবনা ব্যাখ্যা করেন অর্থমন্ত্রী তথা শিল্পমন্ত্রী অমিতবাবু। তিনি জানান, নতুন বন্দরের সব চেয়ে বড় সুবিধে হল, ওই প্রকল্পের জন্য এক ছটাক জমিও অধিগ্রহণ করতে হবে না। তাজপুর ও শঙ্করপুরের মাঝখানে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকায় সমুদ্র বেশ অশান্ত। তাই সেখানকার সৈকতে কেউ নামতে পারে না। ওখানেই সমুদ্র থেকে পলি তুলে বন্দরের জন্য চার বর্গকিলোমিটার জমি বার করে নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে সমুদ্রে মাত্র ১৮.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ চ্যানেলে পলি তুললেই ১২ মিটার নাব্যতা পাওয়া যাবে। সেটা বন্দর নির্মাণ এবং কাজকর্ম চালানোর সহায়ক হবে। আর প্রস্তাবিত প্রকল্পে বিনিয়োগ আসছে ৪২৩১ কোটি টাকা।

নাব্যতার সমস্যায় কলকাতা ও হলদিয়া বন্দর দীর্ঘদিন ধরেই নাজেহাল। তবে তাজপুরের নতুন বন্দরের সাফল্যের সম্ভাবনা প্রসঙ্গে অমিতবাবুর দাবি, প্রস্তাবিত বন্দরে ৬০ হাজার মেট্রিক টনের জাহাজও আসতে পারবে। নতুন বন্দরের সুবিধের কথা বলতে গিয়ে রসুলপুরে বাম জমানার বন্দর প্রকল্পের নানান অসুবিধের প্রসঙ্গ তোলেন অর্থমন্ত্রী। তিনি জানান, রসুলপুরে বন্দর গড়তে গেলে ১৫০০ একর জমি নিতে হতো। সমুদ্রে ৯৩ কিলোমিটার চ্যানেল তৈরি করতে হতো। তাতে খরচ পড়ত ৮৫২০ কোটি টাকা। যে-কোনও বেসরকারি সংস্থা ওই প্রকল্পে আসার আগে দু’বার ভাবত। সেই তুলনায় তাজপুরের প্রস্তাবিত নতুন বন্দরে এখন থেকেই বিনিয়োগকারীরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন বলে অমিতবাবুর দাবি। তিনি জানান, উপদেষ্টা সংস্থার তৈরি করা এই প্রকল্প রিপোর্ট মন্ত্রিসভার বৈঠকে পেশ করা হবে। তার পরেই চাওয়া হবে আন্তর্জাতিক দরপত্র।

এ দিন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর ভাষণের আগে মন্ত্রিসভার বৈঠক বসে। মুখ্যসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় সেই বৈঠকে জানান, পঞ্চায়েত দফতরকে বিশ্বব্যাঙ্ক আরও তিন হাজার কোটি টাকা দিতে রাজি হয়েছে। পঞ্চায়েত দফতরের কাজকর্মের প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বারুইপুরে ১৮ একর জমিতে একটি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার নির্মাণের সিদ্ধান্ত মঞ্জুর করেছে মন্ত্রিসভা।

অন্য বিষয়গুলি:

sea port Tajpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE