Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪

নিতু-সেবি যোগে মাধ্যম প্রাক্তন ফুটবলার

কলকাতা ময়দানের এক প্রাক্তন ফুটবলারই ছিলেন ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকারের (নিতু) সঙ্গে সেবি, কোম্পানি নিবন্ধক এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্কের যোগাযোগের মূল মাধ্যম, দাবি করেছে সিবিআই। সিবিআই-কে চিঠিতে সুদীপ্ত সেন দাবি করেছিলেন, সেবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ মাধ্যম ছিলেন নিতু। সে জন্য তিনি মোটা টাকা নিতেন বলেও দাবি করেন সুদীপ্ত।

আলিপুর আদালতে দেবব্রত সরকার (নিতু) এবং সুদীপ্ত সেন। (ডান দিকে)। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

আলিপুর আদালতে দেবব্রত সরকার (নিতু) এবং সুদীপ্ত সেন। (ডান দিকে)। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

শিবাজী দে সরকার
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৪ ০২:৪৯
Share: Save:

কলকাতা ময়দানের এক প্রাক্তন ফুটবলারই ছিলেন ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকারের (নিতু) সঙ্গে সেবি, কোম্পানি নিবন্ধক এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্কের যোগাযোগের মূল মাধ্যম, দাবি করেছে সিবিআই।

সিবিআই-কে চিঠিতে সুদীপ্ত সেন দাবি করেছিলেন, সেবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ মাধ্যম ছিলেন নিতু। সে জন্য তিনি মোটা টাকা নিতেন বলেও দাবি করেন সুদীপ্ত। নিতুর বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া নথি থেকেও থেকেও গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, সেবি-র অফিসারদের কারও কারও সঙ্গে ইস্টবেঙ্গল কর্তার পরিচয় ছিল। এ বারে এই সূত্র ধরে আরও এগোতে চাইছে সিবিআই। তাতেই উঠে এসেছে এই প্রাক্তন ফুটবলারের নাম। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রের খবর, ওই প্রাক্তন ফুটবলার এক কেন্দ্রীয় আর্থিক নিবন্ধক সংস্থায় কর্মরত হওয়ার সুবাদে নিতুর সঙ্গে সেবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং কোম্পানি নিবন্ধক দফতরের কর্তাদের কারও কারও পরিচয়করিয়ে দেয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার একটি সূত্র জানাচ্ছে, নিতু-ঘনিষ্ঠ ওই ফুটবলার এক সময় ইস্টবেঙ্গলের অধিনায়কও ছিলেন। তিনি ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান দু’দলেই খেলেছেন। ষড়যন্ত্রের রহস্য ভেদ করতে ওই প্রাক্তন ফুটবলারকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে সিবিআই।

সিবিআই সূত্রের খবর, নিতুর মাধ্যমে আলাপ হওয়ার পরে ২০১২ থেকে ওই ফুটবলারকেও সেবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে ‘ম্যানেজ’ করার এই দায়িত্ব দেন সুদীপ্ত। সে জন্য তাঁকেও মাসে মোটা টাকা দিতেন সুদীপ্ত। ওই ফুটবলারকে জেরা করে সেবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও কোম্পানি নিবন্ধকের ওই সব অফিসারকে চিহ্নিত করতে চাইছে সিবিআই। তদন্তকারীদের দাবি, ২০১০-এর প্রথম দিকে তৎকালীন এক বিরোধী নেতার মাধ্যমে নিতুর সঙ্গে আলাপ হয় সারদা-কর্তার সেই বিরোধী নেতা এখন রাজ্যের মন্ত্রী। সে বারে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের জন্য সারদা-সংস্থা ২৫ লক্ষ টাকা দিয়েছিল বলে সিবিআই সূত্রের খবর।

নিতুকে জেরার পরে সিবিআই-এর দাবি, ক্লাবের আর্থিক সঙ্কট চলার সময় বর্তমান শাসক দলের দুই সাংসদ নিতুকে যোগাযোগ করতে বলেছিলেন সন্ধির অগ্রবাল নামে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে। ওই ব্যবসায়ী এবং তাঁর বাবা সজ্জন অগ্রবাল ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সাধারণ সদস্য। ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে সুদীপ্তর যোগাযোগ করানোর সেতু হিসেবে কাজ করেন নিতু। তাঁর দাবি, ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে সুদীপ্ত সেনের যৌথ উদ্যোগে ব্যাঙ্ক খোলার কথা হয়েছিল। ঠিক হয়, দু’জনে মিলে নয়া অর্থলগ্নি সংস্থা খুলবেন। তাই সেবি, কোম্পানি নিবন্ধক, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ‘ম্যানেজ’ করার কাজ করবেন নিতু।

একই সঙ্গে এ বারে ব্যবসায়ী সন্ধির অগ্রবাল ও তাঁর বাবা সজ্জনকেও তলব করেছে সিবিআই। ২০১৩-র এপ্রিলে সুদীপ্ত কাশ্মীরে পালানোর আগে সিবিআইকে লেখা চিঠিতে নিতুর পাশাপাশি অভিযোগ ছিল সজ্জন ও সন্ধিরের বিরুদ্ধে। সুদীপ্ত তাঁর চিঠিতে অভিযোগ করেন, নিতুর সঙ্গে ওই কেন্দ্রীয় সংস্থার কর্তাদের দহরম-মহরম রয়েছে। সেই বাবদ নিতু মাসে মাসে সুদীপ্তর থেকে মোটা টাকা পেতেন বলে সুদীপ্ত দাবি করেছিলেন। সজ্জন ও সন্ধির অগ্রবালকেও ব্যবসার জন্য মোটা টাকা দেন বলেও অভিযোগ করেন সুদীপ্ত। দু’জনকে জেরা করে এই বিষয়ে জানতে চাইবে সিবিআই।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE