Advertisement
২১ মে ২০২৪

বিজেপি ছাড়লেন শিলিগুড়ির ২০ জন নেতা-কর্মী

প্রার্থী বাছাই থেকে প্রচার—সবেতেই দূরে সরিয়ে রাখার ক্ষোভে পুরভোটের মুখে দল ছাড়লেন শিলিগুড়ির ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের ২০ জন নেতা-কর্মী। তাঁদের মধ্যে আছেন ওয়ার্ড কমিটির তিন সহ সভাপতি, মণ্ডল কমিটির সম্পাদক, জেলা কমিটির এক সদস্যও। বিজেপির জেলা নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, মাত্র একটি ওয়ার্ডের কয়েকজন কর্মীর দলত্যাগে ভোটে প্রভাব পড়বে না। জেলা সভাপতি রথীন বসুর দাবি, ‘‘যাঁরা নিজেদের স্বার্থে এসেছিলেন, তাঁরাই দল ছেড়ে যাচ্ছেন। কাউকে আবার অন্য দল এজেন্ট হিসেবে বিজেপিতে ঢুকিয়ে দিয়েছিল।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:৪০
Share: Save:

প্রার্থী বাছাই থেকে প্রচার—সবেতেই দূরে সরিয়ে রাখার ক্ষোভে পুরভোটের মুখে দল ছাড়লেন শিলিগুড়ির ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের ২০ জন নেতা-কর্মী। তাঁদের মধ্যে আছেন ওয়ার্ড কমিটির তিন সহ সভাপতি, মণ্ডল কমিটির সম্পাদক, জেলা কমিটির এক সদস্যও।

বিজেপির জেলা নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, মাত্র একটি ওয়ার্ডের কয়েকজন কর্মীর দলত্যাগে ভোটে প্রভাব পড়বে না। জেলা সভাপতি রথীন বসুর দাবি, ‘‘যাঁরা নিজেদের স্বার্থে এসেছিলেন, তাঁরাই দল ছেড়ে যাচ্ছেন। কাউকে আবার অন্য দল এজেন্ট হিসেবে বিজেপিতে ঢুকিয়ে দিয়েছিল।’’

শিলিগুড়ি পুরভোটের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের দিনই অবশ্য বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে। পার্টি অফিসের পরিবর্তে শিলিগুড়ি জার্নালিস্টস ক্লাব থেকে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে বিজেপি। তারপরে ক্লাবের সামনেই ক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকদের অনেকে অভিযোগ করেন, যোগ্য প্রার্থীকে বাদ দিয়ে টাকার বিনিময়ে অচেনা কাউকে প্রার্থী করা হয়েছে। কেউ নালিশ জানান, জেলা নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণেই টিকিট পেয়েছেন একাধিক প্রার্থী। বিক্ষোভের জেরে বেশ কিছু ক্ষণ জার্নালিস্টস ক্লাবের ভিতরেই বসে থাকতে হয় রথীনবাবু এবং দলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরীকে। পার্টি অফিস, এমনকী রথীনবাবুর বাড়ি গিয়েও বিক্ষোভ দেখান কিছু কর্মী-সমর্থক। কয়েকজন নির্দল প্রার্থীকে বহিষ্কারও করে বিজেপি। তার পরেই দল ছেড়েছিলেন ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের কর্মী রিচপাল সিংহ। তিনি তৃণমূলে যোগ দেন।

তার পরেও দলে ভাঙন অব্যাহত ছিল। জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে ৪২ নম্বরের ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি সহ ২৮ জন ইস্তফা দেন। সকলেই পরে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। ৩ নম্বর মণ্ডল কমিটির সাধারণ সম্পাদক বৃজকিশোর সিংহ প্রার্থী বাছাই নিয়ে সরাসরি টাকা লেনদেনের অভিযোগ তুলেছিলেন জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। তাঁকেও বহিষ্কার করে বিজেপি। এরপরে ওয়ার্ড এবং মণ্ডল কমিটির পদাধিকারী, সদস্য মিলিয়ে এক ঝাঁক নেতা কর্মী এক সঙ্গে ইস্তফা দেওয়ায় ফের দলের অন্দরের অসন্তোষ প্রকাশিত হয়ে পড়ল। প্রার্থী বাছাই নিয়ে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ তদন্ত করতে কমিটি গঠনের দাবিও উঠেছে এ দিন।

এ দিন ইস্তফা দেওয়া নেতাদের মধ্যে বিজেপির ৩ নম্বর মণ্ডল কমিটির সম্পাদক রাকেশ থাপা, জেলা কমিটির সদস্য মুন্না থাপা, ৪১ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির তিন সহ সভাপতি ডায়মন্ড ছেত্রী, জয়দেব রায় এবং হনুমান অগ্রবালেরা রয়েছেন। তাঁরা জানান, জেলা নেতাদের কাছে দীর্ঘ দিন ধরে অভিযোগ জানিয়েও ফল মেলেনি, তাই তাঁরা ইস্তফা দিয়েছেন। মুন্না, ডায়মন্ডবাবুদের দাবি, ‘‘কারও নাম বলতে চাই না। কিন্তু দল যে ভাবে চলছে, তাতে একজন বা দু’জনের কথাই শেষ কথা। তাই দল ছেড়েছি।’’

এ সব অভিযোগ নিয়ে রথীনবাবুর অবশ্য বলছেন, ‘‘দল ঠিকই চলছে। এমন ঘটনায় প্রভাব পড়বে না।’’ তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘বিক্ষুব্ধদের নিশ্চই কোনও উদ্দেশ্য রয়েছে, না হলে ইস্তফা দেওয়ার আগে নেতাদের না জানিয়ে তাঁরা সংবাদমাধ্যমকে জানালেন কেন?’’ দলত্যাগীদের পাল্টা বক্তব্য, সংবাদমাধ্যমকে আসল ঘটনা না জানিয়ে ইস্তফা দিলে ভুল ব্যাখ্যা হতে পারত, তাই তাঁরা সাংবাদিক বৈঠক করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE