নিষ্ঠা: পরিবারের সঙ্গে সুমিত্রা বসাক। নিজস্ব চিত্র
অভাবের সংসার। তাই মাধ্যমিক পাশ করার পর মেজো মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিয়েছিলেন দিনমজুর বাবা। কিন্তু বড় মেয়ের জেদের কাছে হার মানতে হয়েছিল বাবাকে।
বিয়ে নয়, মাধ্যমিক পাশ বড় মেয়ে পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর স্বপ্নে বিভোর। তিনি চান বাবা-মায়ের দুর্দশা ঘোচাতে। সেই লক্ষে অনটনের সংসারে একবেলা খেয়েও লড়াই ছাড়েননি। উচ্চ মাধ্যমিকে ৯০ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন মালদহের রতুয়ার শ্রীপুর অঞ্চল হাই স্কুলের ছাত্রী সুমিত্রা বসাক। সে পেয়েছে ৪৪৯। বাংলায় ৯১০, ইংরেজিতে ৮৭, ভূগোলে ৯৭, এডুকেশনে ৮৮ ও সংস্কৃতে ৮৭। তবে ভালো ফল হলেও এ বার বাইরে থেকে কীভাবে পড়ার খরচ চলবে তা ভেবেই দিশেহারা সুমিত্রার পাশাপাশি তার বাবা-মা।
আরও পড়ুন: পরমবীর প্রাচীর ঘিরে দ্বন্দ্ব, প্রশ্নের মুখে রাজ্যপাল
সুমিত্রার স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রবীর সরকার বলেন, ‘‘ওর লড়াই অন্যদের প্রেরণা যোগাবে।’’ রতুয়ার মাগুরায় জীর্ণ বাড়ি। বাবা গৌরাঙ্গবাবু দিনমজুর। একজনের দিনমজুরিতে পাঁচজনের সংসারে একবেলা খাওয়ার জোটাতেই হিমশিম খেতে হয়। তাই মা শিখাদেবীকেও দিনমজুরি করতে হয়। দু’বছর আগে মাধ্যমিক পাশ করার পরেই সুমিত্রার বিয়ে দেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লাগেন বাবা। গত বছর মেজো মেয়ে মাধ্যমিক পাশ করেন। বাবা চেয়েছিলেন আগে বড় মেয়ের বিয়ে দিতে। তারপর মেজো মেয়ের বিয়ে দেবেন। কিন্তু সুমিত্রার জেদের কাছে হার মানতে হয়েছিল। শেষে মেজো মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেন। নিজের জেদে অটুট থাকলেও মেজো বোনের বিদে আটকাতে পারেননি সুমিত্রা। তবে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া ছোট বোন সুরতির পড়াশোনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তার বিয়ে যে আর কিছুতেই হতে দেবেন না, তা জানিয়ে দিয়েছেন সুমিত্রা।
বাবা গৌরাঙ্গবাবু বলেন, ‘‘অভাবের সংসার। তাই মেয়েদের বিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। সুমিত্রা আমার চোখ খুলে দিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy