Advertisement
২৩ মে ২০২৪
Tea Garden Worker Death

কে গড়বেন ধানীর ঘর, প্রস্তাব নানা পক্ষের

র্তমানে আশারানি ভর্তি রয়েছেন লতাবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানে বিশেষ শুশ্রূষা করা হচ্ছে তাঁর। ধানী মারা যেতেই কে ঘর গড়ে দেবেন আশারানিকে, সে আশ্বাস নিয়ে হাজির নানা পক্ষ।

ধানী ওরাওঁয়ের স্ত্রী।

ধানী ওরাওঁয়ের স্ত্রী। নিজস্ব চিত্র ।

সৌম্যদ্বীপ সেন
কালচিনি শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:২৩
Share: Save:

অনাহারে, অসুস্থ অবস্থায় আলিপুরদুয়ারের কালচিনি ব্লকের মধু চা বাগানের শ্রমিক ধানী ওরাওঁয়ের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। সে সময় পড়শি ছাড়া, পাশে প্রায় কেউ ছিলেন না। অথচ, ধানীর মৃত্যুর পরেই নানা মহল থেকে তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছে তাঁর স্ত্রী আশারানি ওঁরাওকে ঘিরে।

বর্তমানে আশারানি ভর্তি রয়েছেন লতাবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানে বিশেষ শুশ্রূষা করা হচ্ছে তাঁর। ধানী মারা যেতেই কে ঘর গড়ে দেবেন আশারানিকে, সে আশ্বাস নিয়ে হাজির নানা পক্ষ। বাঁশের খুঁটি, ত্রিপলের দেওয়াল, মাটির মেঝের যে নড়বড়ে বাড়িতে ধানী-আশারানি থাকতেন, সেখানে রাতারাতি পাকা ঘর করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে তৃণমূল। বৃহস্পতিবার তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি কৈলাস বিশ্বকর্মা বলেন, ‘‘আবাস যোজনায় নাম ছিল ধানীর। তবে টাকা না মেলায় ঘর তৈরি হয়নি। কিন্তু সম্প্রতি আমরা একটি কমিটি তৈরি করেছি । সকলে টাকা মিলিয়ে আমরাই ওঁর ঘর তৈরি করে দেব।’’ ধানীর বাড়িতে গিয়ে ঘর তৈরি করে দেওয়ার আশ্বাস দেন সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বেরনো রাজেশ লাকড়া। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার চা শ্রমিকদের সঙ্গে বঞ্চনা করেছে। সে কারণেই ধানী ওরাওঁয়ের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর এই ঘর কাউকে তৈরি করতে দেব না। ঘর আমরাই তৈরি করব।’’ জেলা প্রশাসনের এক কর্তা আবার বলেন, ‘‘আশারানিকে বৃদ্ধাশ্রমে রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ ছাড়া, তাঁর জরুরি নথিপত্র তৈরি করে দেওয়ারও চেষ্টা করব। যাতে তিনি সরকারি
সুবিধা পান।’’

হাসপাতাল সূত্রে খবর, বাকি রোগীদের সকালের খাবারের সঙ্গে একটা ডিম দেওয়া হলেও আশারানি পাচ্ছেন দু’টো। দুপুরের খাবারের একটার জায়গায় তাঁর পাতেও পড়ছে দু’টো মাছ। এ দিন ধানী ওরাওঁয়ের বাড়ি পরিদর্শনে আসেন ডেপুটি লেবার কমিশনার নওশাদ আলি। তাঁর কাছে সময় মতো বেতন না মেলা নিয়ে অভিযোগ করেন মধু চা বাগানের শ্রমিকেরা। অভিযোগ, বাগানের স্থায়ী শ্রমিক ধানীও গত দু’মাসে এক বার টাকা পেয়েছিলেন বাগান থেকে। এ দিন ডেপুটি লেবার কমিশনার বলেছেন, ‘‘বাগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব। শ্রমিকেরা যাতে ঠিক সময়ে বেতন ও সুযোগ-সুবিধা পান তার চেষ্টা করব।’’

অভিযোগ, ধানীর রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার কার্ড সংযুক্ত করা নিয়ে কিছু সমস্যা ছিল। তাই তিনি রেশন পাচ্ছিলেন না। মধু চা বাগানের বহু শ্রমিকেরই অভিযোগ, তাঁরা বেশ কয়েক মাস ধরে আটাw পেলে, চাল পাচ্ছেন না। আবার চাল পেলে, আটা পাচ্ছেন না। বৃহস্পতিবার ফুড ইনস্পেক্টর পল্লবকুমার দাসের কাছে এই নিয়ে অভিযোগ করেন শ্রমিকদের পাশাপাশি স্থানীয় তৃণমূল অঞ্চল এবং ব্লক সভাপতি। বাগানে রেশন
বণ্টনের দায়িত্বে থাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য আরতি বিশ্বকর্মা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘সব সময় সব রেশন সামগ্রী থাকে না। যখন যেটা থাকে, সেটা দিয়ে দেওয়া হয় এবং যেটা বাকি থাকে তা এলে সেটাও আমরা শ্রমিকদের দিয়ে দিই। শ্রমিকেরাই অনেক সময় বকেয়া রেশন সামগ্রী নিতে দেরি করেন।’’ ফুড ইনস্পেক্টরও বলেন, ‘‘আমরা সময় মতোই রেশন দিচ্ছি। অনেক সময় কোঅপারেটিভ থেকে কিছু রেশন সামগ্রী আসতে সময় লাগে। তখন সেটা দিতে দেরি হয়।’’ জেলাশাসক আর বিমলার আশ্বাস, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। শ্রমিকদের
অভিযোগ সত্যি হলে, কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kalchini
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE