কালীপুজো হয় না। অথচ পুলিশ প্রশাসন থেকে অনুমতি নেওয়া হচ্ছে ফি বছর। আর তা দেখিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের থেকে চাঁদা তুলে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে শিলিগুড়ির এসএফ রোডে কিশোর অ্যাথলেটিক ক্লাবের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ক্লাবের সদস্য তথা এলাকার তৃণমূল নেতা সঞ্জয় ওরফে ভোলা চক্রবর্তী, কংগ্রেস নেতা পিন্টু আচার্যরা পুজো না করে চাঁদা তোলার ঘটনায় যুক্ত। এ বছরও ওই পুজো কমিটির তরফে শহরের বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করা হয়েছে। ডেপুটি পুলিশ কমিশনার ইন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি।’’
গত দু’বছর ধরে কালী পুজোর নাম করে তাঁরা বিভিন্ন সংগঠন, সংস্থা থেকে চাঁদা তুলেছেন বলে অভিযোগ। অথচ পুজো করা হয়নি। এ বছরও অনুমতি নিয়ে চাঁদা তোলার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। ভোলাবাবুর দাবি, তিনি এক সময় এই পুজোর সঙ্গে যুক্ত থাকলেও তিন বছর ধরে কোনও ভাবেই যুক্ত নন। অথচ গত বছর তাঁকে সভাপতি হিসাবে দেখিয়েই পুজোর অনুমোদন নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ভোলাবাবু বলেন, ‘‘আমি কোনও ভাবেই ওই পুজোর সঙ্গে আর যুক্ত নই। কেউ আমাকে জড়িয়ে বদনাম দিতে চাইলে পুলিশকে জানাতে বাধ্য হব।’’ তাঁর দাবি, তিনি এলাকার মুনলাইট ক্লাবের পুজোর সঙ্গে বর্তমানে যুক্ত রয়েছেন। ওই ক্লাবের পুজো কমিটির
সম্পাদক তিনিই।
এ বছর কিশোর অ্যাথলেটিক ক্লাবের এক সদস্যের নাম করে অনুমোদন যে নেওয়া হয়েছে তা তাঁদের কথাতেই স্পষ্ট। ক্লাবের সদস্য পিন্টুবাবু বলেন, ‘‘এত দিনের পুরনো পূজো। বন্ধ হয়ে গেলে পরে অনুমতি মিলবে না সেই জন্য অনুমতি নেওয়া হয়ে থাকে। সঞ্জয়বাবু বিষয়টি দেখেন। আমরা এমনি কোনও চাঁদা তুলি না। অ্যাসোসিয়েশন গুলির চাঁদাও বেশি নয়। আমরা গত তিন বছর পূজো করছি না বলে ওই টাকা পাশের পুজো কমিটি মুনলাইট ক্লাবকে দিয়ে দিই।’’ অথচ মুনলাইট ক্লাবের সম্পাদক ভোলাবাবু তা অস্বীকার করেন।
শিলিগুড়ি মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, হার্ডওয়্যার মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, নর্থবেঙ্গল মোটর ডিলার অ্যাসোসিয়েশন, রোড ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের মতো শহরের বিভিন্ন সংগঠনের তরফে এ বছরও কালীপুজোর নামে চাঁদা নিয়েছেন কিশোর অ্যাথলেটিক ক্লাবের সদস্যরা। শিলিগুড়ি মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক মনোজ কুমার অগ্রবাল বলেন, ‘‘পূজো না করে এ ভাবে চাঁদা নেওয়াটা ঠিক নয়। আমাদের পক্ষে কয়েকশো ক্লাব কারা পুজো করছে কারা করছে না তা দেখা সম্ভব নয়। পুলিশের প্রশাসনের অনুমতি দেখেই আমরা দিয়ে থাকি।’’ উত্তরবঙ্গের বৃহত্তর সংগঠন ফেডারেশন অব চেম্বার কমার্স নর্থ বেঙ্গল (ফোসিন)-এর সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘এ ধরনের কাজ অনৈতিক। পুলিশ প্রশাসন বিষয়টি দেখুক।’’
এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, একে অপরের নামে দোষারোপ করলেও ভোলাবাবু, পিন্টুবাবুরা মিলেই পূজো করেন বলে তাঁরা জানেন। গত দু’বছর কোনও পুজো হতে তাঁরা দেখেননি। এ বছরও কোনও মণ্ডপ গড়া হয়নি। ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সীমা সাহা বলেন, ‘‘পূজোটি এসএফ রোডে বিদ্যুৎ পর্ষদের উল্টোদিকে যেখানে হয়, ওই এলাকা ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে পড়ে। তবে এলাকার বাসিন্দারা যেহেতু পুজোটি করতেন তাঁদের অনুমতি দেওয়া হত। পুলিশের থেকে অনুমতি নিয়ে চাঁদা তোলার পরও তাঁরা পুজো না করলে বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনের দেখা উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy