ফাইল চিত্র।
ভোটে জিতে জিটিএ-তে ক্ষমতায় এলে প্রথম সভাতেই আলাদা রাজ্য নির্মাণের ‘রোড ম্যাপ’ তৈরির সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি অনীত থাপা।
সোমবার মংপুতে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ছেড়ে বেশিরভাগ নেতা-কর্মী প্রজাতান্ত্রিক মোর্চায় যোগ দিয়েছেন। সেখানেই অনীত আলাদা রাজ্য নিয়ে ফের কথা বলেন। বিরোধীরা বলছেন, পাহাড়ের ভোটের বাধ্যবাধকতা থেকেই অনীত এ সব বলছেন। অনীত বলছেন, ‘‘গোর্খাল্যান্ড আমাদের হৃদয়ে রয়েছে। কিন্তু এটা শুধু কোনও একটি দলের কাজ নয়। সার্বিকভাবে এই দাবিতে নিয়ে এগোতে হবে। আমরা জিটিএ-তে ক্ষমতায় এলে প্রথম সভায় ‘গোর্খাল্যান্ড নির্মাণ কমিটি’ গঠন করব। সেখানে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের গোর্খারা থাকবেন।’’
গত বিধানসভা ভোট বা দার্জিলিং পুরভোটেও অনীতের দল আলাদা রাজ্য নিয়ে বিশেষ সরব হয়নি। কিন্তু ‘হামরো পার্টি’র দার্জিলিং পুরসভায় জয় এবং বিমল গুরুং জিটিএ ভোটের বিরোধিতা করে আন্দোলনে নামায় পরিস্থিতি পাল্টেছে। গুরুংয়ের পক্ষে জনমত কমলেও রাজ্য সরকার বিরোধী বিভিন্ন দল তাঁর পাশে এখনও রয়েছে। পাহাড়ে বিজেপির বিধায়কেরা বারবার নানা কৌশলে আলাদা রাজ্যের দাবি তুলছেন।
নেতাদের অনেকের কথায়, ‘‘পাহাড়বাসীর আবেগের কথা নিয়ে রাজনীতি চলেই। এর থেকে অনীতও নিজেকে সরিয়ে রাখতে পারবেন না। আলাদা রাজ্যের কথা না বললে সে দল পাহাড়ে বেশি দিন টিঁকে থাকতে পারবে না।’’
অনীত বলেন, ‘‘আলাদা রাজ্যের দাবিকে লিখিত ভাবে উল্লেখ করেই জিটিএ চুক্তি হয়েছিল। তা জিটিএ আইনে লিপিবদ্ধ রয়েছে। কেন্দ্র এবং রাজ্য সেই দাবি মেনেই জিটিএ গঠন করেছে। আমরা সেই জিটিএ ভোটে লড়ে ক্ষমতা এসে রাজ্যের দাবিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলছি।’’
প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি আরও বলেন, ‘‘এটা কোনও একটি দলের দাবি হতে পারে না। কারণ, বছরের পর বছর দেখেছি, দাবি গিয়ে ক্ষমতার চেয়ারে শেষ হয়েছে। তাই কী ভাবে রাজ্যের দিকে এগোতে হবে, তার রোড ম্যাপ দরকার। প্রস্তাবিত কমিটি তৈরি হলে তারা সেই কাজই করবে।’’
দলের নেতারা অবশ্য সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সুবাস ঘিসিং বা বিমল গুরুংয়ের আমলে রাজ্যের দাবিতে পাহাড় বারবার অশান্ত, অগ্নিগর্ভ হয়েছে। তাতে আখেরে কিছুই হয়নি। গোর্খারা গুলি খেয়ে মারা গিয়েছেন, নইলে টানা বন্ধে না খেতে পেয়ে মরা গিয়েছেন। নষ্ট হয়েছে পাহাড়ের সম্পত্তিই। তাই আন্দোলন করতে হবে দিল্লি, কলকাতার দিকে নজর রেখে। কী ভাবে সেটা সম্ভব, তার নতুন রোড ম্যাপ জিটিএ-এর প্রথম সভা থেকে কমিটি ঘোষণার মধ্য দিয়ে ঠিক করা হবে।
অনীতের বিরোধীরা অবশ্য বলছেন, ‘‘অনীতের সঙ্গে তৃণমূলের বোঝাপড়া নিয়ে পাহাড়ে অনেক দল সরব হয়েছে। তাই নজর ঘোরাতে তিনি আলাদা রাজ্যের প্রসঙ্গকে ঢাল করে ভোটের প্রচারে নেমেছেন।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy