চা শিল্পের উন্নতির ব্যাপারে বাজেট বক্তৃতায় কোনও উল্লেখ না থাকায় তরাই-ডুয়ার্সের শ্রমিক-মহলে হতাশা ও উদ্বেগ বেড়েছে।
বিধানসভা ভোটের প্রাক্কালেও ডুয়ার্সের মাদারিহাটে গিয়ে চা শিল্পের সমস্যা কাটানোর জন্য চিন্তাভাবনা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। একাধিক বার এই এলাকায় এসেছিলেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ। তিনি উত্তরবঙ্গের একাধিক চা বাগান ঘুরেছেন। তারপরে আশ্বাসও দিয়েছিলেন যে এই সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হবেন। ডানকানের বন্ধ বাগান খোলা হবে বলে ঘোষণাও করেন তিনি। কিন্তু, বুধবার বাজেটে সে ব্যাপারে কোনও উল্লেখ না দেখে ক্ষোভে ফুঁসছেন শ্রমিক নেতাদের অনেকেই। এমনকী, মালিকপক্ষের একাংশও ক্ষুব্ধ।
বিপাকে পড়েছেন মাদারিহাটের বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গাও। ক্ষোভের আঁচ সামাল দিতে টিগ্গাকে ঘোষণা করতে হয়েছে, শীঘ্রই প্রতিনিধি দল দিল্লিতে গিয়ে চা বাগানের সমস্যা মেটাতে কেন্দ্রকে উদ্যোগী হওয়ার আর্জি জানাবে। তিনি বলেন, ‘‘সাধারণ বাজেটে চা বাগানের জন্য আলাদা করে কোনও ঘোষণা হয়নি। তবে বিস্তারিত বাজেট না দেখে বলা সম্ভব নয়। এক মাসের মধ্যে দিল্লি গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চা বাগানের সমস্যা নিয়ে বেশ কিছু দাবি জানাব।’’
সরল-সাদাসিধে চা শ্রমিকদের সমস্যাকে সামনে রেখে রাজনৈতিক লাভ তোলার জন্যই বিজেপি নেতারা বারবার মিথ্যে আশ্বাস দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী। তাঁর অভিযোগ, ‘‘চা বলয় নিয়ে শুধু রাজনীতি করছে বিজেপি। তাই বাজেটে চা শ্রমিকদের জন্য ঘোষণা নেই।’’ তিনি জানান, রাজ্যই পরিষেবা দিয়ে বন্ধ চা বাগানগুলির শ্রমিকদের সংসার চালাচ্ছেন বলে তিনি জানান।
আলিপুরদুয়ার জেলাপরিষদের সভাধিপতি তথা চা বাগান তৃণমূল কংগ্রেসের মজদুর ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মোহন শর্মাও উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নিজেকে বারবার চা-ওয়ালা বলে দাবি করলেও ডুয়ার্সের চা বাগানের সমস্যা সমাধান নিয়ে বাজেটে একটাও লাইন নেই। এটা দুঃখজনক।’’
শ্রমিকেরাও বিরক্ত, হতাশ। বন্ধ রেডব্যাঙ্ক চা বাগানের শ্রমিক শান্তি খেজ বলেন, “আমরা বাজেট নিয়ে সেরকম কিছু বুঝি না। শুনেছি দেশের অনেক কিছু নিয়ে বাজেটে কথা হয়েছে। কিন্তু চা বাগান নিয়ে কোনও কথা হয়নি।’’ তিনি বলেন, ‘‘আমি বন্ধ বাগানের শ্রমিক। আমাদের নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কোনও কথা বলেনি। আমাদের ভোটে নেতারা মন্ত্রী হয়, অথচ আমাদের নিয়ে কোনও কথা না হওয়ায় খুব হতাশ লাগছে।” ডুয়ার্সের আইটিপিএ-র সম্পাদক প্রসেনজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “বাজেটে চা শিল্পের জন্য কিছু ঘোষণা হলে ভাল লাগত। পুরো বাজেট দেখেই বিশদে বলব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy