Advertisement
১৮ মে ২০২৪

মায়ের তাড়া, তবু কাদা থেকে শাবককে উদ্ধার

বারবার তাড়া করছিল মা হাতি। তাতে দমে যাননি তাঁরা। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও কাদায় আটকে পড়া হস্তিশাবককে ডাঙায় তুললেন বনকর্মীরা। মঙ্গলবার ভোরে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের দমনপুর রেঞ্জের চার নম্বর কম্পার্টমেন্টে রেল লাইনের ধারের ঘটনা।

কাদার মধ্যে থেকে হাতির শাবকটিকে উদ্ধার করছেন বনকর্মীরা। — নিজস্ব চিত্র

কাদার মধ্যে থেকে হাতির শাবকটিকে উদ্ধার করছেন বনকর্মীরা। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৬ ০১:০৯
Share: Save:

বারবার তাড়া করছিল মা হাতি। তাতে দমে যাননি তাঁরা। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও কাদায় আটকে পড়া হস্তিশাবককে ডাঙায় তুললেন বনকর্মীরা। মঙ্গলবার ভোরে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের দমনপুর রেঞ্জের চার নম্বর কম্পার্টমেন্টে রেল লাইনের ধারের ঘটনা। ভোরের দিকে খবর পাওয়া যায়, রেল লাইনের ধারের একটি জলায় কাদায় আটকে রয়েছে হস্তি শাবক। সঙ্গে রয়েছে মা হাতিও। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান বনাধিকারিক ও রেল আধিকারিকরা। ঘটনার জেরে সকাল ন’টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত আলিপুরপদুয়ার জংশন থেকে শিলিগুড়ি রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে।

বনকর্মীদের ধারণা, রেল লাইনের ধারের ওই জলায় জল খাওয়ার জন্য শাবক-সহ হাতিটি নেমে থাকতে পারে। তখনই জলার কাদায় পা আটকে যাওয়ায় উঠতে পারেনি শাবকটি। মা হাতিটি চেষ্টা করেও শাবকটিকে তুলতে ব্যর্থ হয়ে থাকতে পারে বলে সন্দেহ বনকর্মীদের। ঘটনাস্থলে পৌঁছে, কাছে যাওয়ায় চেষ্টা করলে বারবার হুঙ্কার দিয়ে রেললাইনের উপর উঠে বনকর্মীদের তাড়া করে মা হাতিটি। তাড়া খেয়ে রেললাইনে পড়ে গিয়ে আহত হন এডিএফও মঞ্জুলা তিরকে। শূন্যে গুলি চালিয়ে মা হাতিটিকে শান্ত করতে হয় বনকর্মীদের।

এডিএফও জানান, সকাল ন’টা থেকে বেশ কয়েক বার উদ্ধারের চেষ্টা হলে দফায় দফায় মা হাতিটি তাড়া করে। তারপর সকাল দশটা নাগাদ জেসিপি মেসিন নিয়ে এসে জাল ও দড়ির সাহায্যে বছর দু’য়েকের পুরুষ হস্তিশাবকটিকে তোলা হয়। শুকনো জায়গায় নিয়ে আসা হলেও শাবকটি নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারছে না বলে জানান এডিএফও। তিনি বলেন, ‘‘শাবককে ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছে। মা হাতিটি বারবার শাবকের কাছে আসছে। আমরা নজর রাখছি।’’

উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের ডিআরএম সঞ্জীব কিশোর বলেন, “উদ্ধারকার্য চলার সময় সকাল ন’টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল ওই রুটে।’’ পরে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বনকর্মীদের একাংশ জানান, রাতভর ঠান্ডার মধ্যে কাদায় আটকে থাকায় শাবকটির পা অবশ হয়ে গিয়ে থাকতে পারে। তা ছাড়া রাতে রেল লাইনের ধারে থাকায় কোনও ট্রেনের ধাক্কা লেগে আহত হওয়ার আশঙ্কাও করছেন তাঁরা। বনকর্তাদের একাংশ জানিয়েছেন, শাবকটির পাশে তার মা রয়েছে। কী ভাবে মাকে দূরে রেখে চিকিৎসা করা যায় তা নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Elephant Rescued
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE