প্রতীকী চিত্র।
এর আগে এখানেই লেখা হয়েছিল, জলপাইগুড়িতে বিজেপির জেলা সভাপতির পদের দৌড়ে সব থেকে এগিয়ে আছেন বাপি গোস্বামী। শুক্রবার যাবতীয় জল্পনার অবসান ঘটিয়ে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস) বাপিকেই এই পদে নিয়ে এসেছে। দীর্ঘসময় ধরে চলা সাংগঠনিক ‘নির্বাচনে’র পরে শুক্রবার বিজেপি জেলায় জেলায় দলের সভাপতিদের নাম ঘোষণা করেছে। জলপাইগুড়ি জেলায় দেবাশিস চক্রবর্তীকে সরিয়ে সভাপতি করা হল জেলা সম্পাদকের পদে থাকা বাপিকে।
বিজেপির অন্দরের খবর, সঙ্ঘ পরিবারের ‘লোক’ বলেই বাপি গোস্বামী পরিচিত। সঙ্ঘের আস্থাভাজন হওয়ায় দলের জেলা নেতাদের অনেককে মান্য করেন না বা গুরুত্ব দেন না— এমন অভিযোগও দলের অন্দরে তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে। তিনি উদ্ধত বলেও জেলা নেতাদের কারও কারও অভিযোগ। লোকসভায় বিপুল ভোটে জেতার পরে জলপাইগুড়িতে জেলা নেতাদের অনেকের আচার-আচরণ সঙ্ঘের পছন্দ হচ্ছিল না বলে আরএসএস সূত্রে দাবি। দলের জেলা সভাপতি পদে আস্থাভাজন কেউ থাকলে সঙ্ঘ বিজেপির অন্দরে আরও বেশি করে নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে পারবে বলে গেরুয়া শিবিরেই জল্পনা ছিল। বিজেপি নেতাদের একাংশও এই দাবি করেছে।
জলপাইগুড়ির আশেপাশে কোনও জেলাতেই বিজেপির সভাপতি বদল হয়নি। দার্জিলিঙের (সমতল) দায়িত্ব এখনও রয়েছেন অভিজিৎ রায়চৌধুরী। গোটা উত্তরবঙ্গে জলপাইগুড়ি ছাড়া শুধু দক্ষিণ দিনাজপুরে সভাপতি বদল হয়েছে। দলীয় সূত্রে বলা হচ্ছে, জেলা সভাপতি পদে দেবাশিস চক্রবর্তীর এটাই ছিল প্রথম কার্যকাল। বিজেপির সাংগঠনিক নিয়মে আরও একবার তিনি সভাপতি হতে পারতেন। তার আগেই এই রদবদল কেন?
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তুঙ্গে উঠেছিল। মৃদুভাষী দেবাশিসবাবু সকলকে নিয়ে বৈঠক করলেও কাজ হয়নি। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি কর্মসূচিতে সে ভাবে ভিড় হয়নি। সর্বোপরি সঙ্ঘের নির্দেশও বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে যথাযথ ভাবে মানা হয়নি। দলে আসা নতুনদের সঙ্গে পুরনোদের সম্পর্কও মসৃণ হয়নি। একই সঙ্গে বিধানসভা ভোটের আগে সংগঠনকে আরও লড়াকু করতে চাইছে বিজেপি নেতৃত্ব। অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতাকে সামনে রাখলে তা সম্ভব বলে দাবি। যদিও বিজেপির অন্য অংশের ব্যাখ্যা, সংগঠন বা তারুণ্য বড় বিষয় নয়। নিজেদের আস্থার লোককেই জেলা সভাপতি পদে বসাতে চেয়েছিল সঙ্ঘ। এখনও আরএসএসের যে কোনও কার্যক্রমে বাপি গোস্বামীকে খাকি পরে লাঠি হাতে দেখা যায়, দাবি বিজেপি নেতাদের একাংশের। এ দিন বাপি গোস্বামীর মন্তব্য, “আশির দশক থেকে বিজেপি করি। দল যখন যা দায়িত্ব দিয়েছে, কোনও প্রশ্ন না করে পালন করেছি। এখনও তাই করব।” দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মিটবে কী ভাবে, জানতে চাইলে নতুন জেলা সভাপতির মন্তব্য, “যতদূর জানি, দলের পতাকা এবং প্রতীকের উপর দলের কারও রাগ বা ক্ষোভ নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy