Advertisement
২২ মে ২০২৪

হোঁচট চিকিৎসায়

‘চিকিৎসা হচ্ছে না দেখে রোগী থাকতে চাইছেন না। এখানে বিনা চিকিৎসায় মরার চেয়ে বাড়িতে মরব। তাই নিয়ে যাচ্ছি।’’

একফাঁকে: কিছুক্ষণ ভবনের বাইরে চেয়ার পেতে বসে রোগী দেখলেন সিনিয়র ডাক্তারেরা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

একফাঁকে: কিছুক্ষণ ভবনের বাইরে চেয়ার পেতে বসে রোগী দেখলেন সিনিয়র ডাক্তারেরা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

সৌমিত্র কুণ্ডু
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৯ ০৫:৪১
Share: Save:

১০ জুন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়েছিল মিলনপল্লির বাসিন্দা প্রদীপ চৌধুরীকে। শুক্রবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ মারা যান তিনি। পরিবার জানাচ্ছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় সত্তর বছরের প্রদীপবাবুকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়েছিল। চোট ছিল পায়েও। অভিযোগ, গত তিনদিন ধরে কার্যত বিনা চিকিৎসায় পড়ে থেকে মারা গিয়েছেন।

প্রদীপবাবুর আত্মীয় ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মেসো সে রকম চিকিৎসা পেলেন না। চিকিৎসক ঠিক মতো দেখেননি। কোন চিকিৎসক তাঁকে দেখলেন এ দিন পর্যন্ত বুঝতে পারলাম না।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘এখানে চিকিৎসা হবে না বলে দিলে অন্য জায়গায় ভর্তি করাতে চেষ্টা করতাম।’’ তিনি জানান, চিকিৎসকদের মারধরের ঘটনায় ডাক্তারদের প্রতি তাঁরা সহানুভূতিশীল। কিন্তু যে সব রোগীরা হাসপাতালে আসছেন তাঁদের প্রতিও চিকিৎসকরা সহানুভূতিশীল হোন, এমন দাবি করেন তিনি।

রক্তাল্পতায় ভোগা স্ত্রী বাসন্তীকে দু’দিন আগে মেডিক্যালে ভর্তি করিয়েছিলেন কোচবিহার বাণেশ্বরের বাসিন্দা নরেন বর্মণ। কিন্তু ওয়ার্ডে চিকিৎসক দেখছেন না, রোগীকে ফেলে রাখা হয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে এ দিন হাসপাতাল থেকে রোগীকে বাড়ি নিয়ে যান তিনি। নরেন বলেন, ‘‘চিকিৎসা হচ্ছে না দেখে রোগী থাকতে চাইছেন না। এখানে বিনা চিকিৎসায় মরার চেয়ে বাড়িতে মরব। তাই নিয়ে যাচ্ছি।’’ এ দিন ফাঁসিদেওয়া হাসপাতাল থেকে সেখানে ভর্তি এক কিশোরকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে রেফার করা হয়। তার পরিবারের অভিযোগ, এখানে চিকিৎসকরা কোনওরকমে তাকে দেখে পাঁচ দিনের ওষুধ লিখে ছেড়ে দেন। কিশোরকে হাসপাতালে ভর্তি না করায় পরিবারের লোকেরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দা বিভূতি বর্মণ জ্বর ও প্রস্রাবের সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। এ দিন সকালে চিকিৎসক দেখে তাঁকে পরীক্ষা করতে বললেও তা করতে পারেননি তিনি।

মেডিক্যালের বহির্বিভাগ গত দু’দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। শুক্রবার কিছু চিকিৎসক জরুরি বিভাগের সামনে টেবিল-চেয়ার পেতে রোগীদের দেখা শুরু করলেও পরে একাংশ উঠে যান। অন্তর্বিভাগে সকালের দিকে একদফা চিকিৎসকেরা ঘুরে গেলেও সারাদিন ওয়ার্ড

চিকিৎসকহীন ছিল বলে অভিযোগ। এ দিন অবশ্য এক রোগীকে গাড়িতে তুলতে সাহায্য করতে দেখা যায় আন্দোলনরত চিকিৎসকদের।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Doctors Strike North Bengal Medical College NRS
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE