আহত শিক্ষিকা। নিজস্ব চিত্র।
ভরদুপুরে মোটরবাইক থামিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের ম্যানেজার মারধর ও সঙ্গী শিক্ষিকাকে গুলি করে তিন লক্ষাধিক টাকা লুঠ করে পালাল তিন দুষ্কৃতী। মালদহের চাঁচলের স্বরূপগঞ্জগামী রাজ্য সড়কের সুরতপুর এলাকায় সোমবার দুপুরে ওই ঘটনাটি ঘটে। ম্যানেজারকে বেধড়ক মারধর করলেও তাঁর অবশ্য গুলি লাগেনি। তিনি সরে যাওয়ায় গুলি এসে লাগে সঙ্গী শিক্ষিকার ডান পায়ে। আহত ওই দুজনকেই চাঁচল মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
দুপুরে ওই ঘটনার জেরে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ওই রাস্তায় আগেও এক ব্যবসায়ীকে গুলি করে টাকা লুঠ করে পালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। এ দিনের ঘটনায় অবশ্য সন্ধে পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের কোনও হদিশ পায়নি পুলিশ। গুলির কথাও অস্বীকার করেছে তারা। চাঁচলের এসডিপিও রানা মুখোপাধ্যায়ের অবশ্য দাবি, ‘‘দুষ্কৃতীদের হাতে বন্দুক থাকতে পারে। কিন্তু ঘটনার পর এলাকায় গিয়ে গুলি চলেছে এমন ঘটনার কথা পুলিশ জানতে পারেনি। বাইক থেকে পড়ে গিয়ে ওই শিক্ষিকা হাঁটুতে আঘাত পেয়েছেন বলে মনে হচ্ছে। তবে হাসপাতাল থেকে ইনজুরি রিপোর্ট এখনও পাইনি।’’
পুলিশ ও আহতদের সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন চাঁচলের একটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্ক থেকে ৩ লক্ষ ২৩ হাজার টাকা তুলে মোটরবাইকে করে ফিরছিলেন ইমরান আলি। শীতলপুর কালীতলা এলাকায় ব্যাঙ্কের ওই গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রটি রয়েছে। সেখানেই যাচ্ছিলেন তিনি। পথে তাঁর সঙ্গে দেখা হয়ে যায় হরিশ্চন্দ্রপুরের কনুয়ার বাসিন্দা ওই শিক্ষিকা মৌসুমী বানুর। তিনি বিদ্যানন্দপুর প্রাথমিক স্কুলের পার্শ্বশিক্ষিকা। ওই পরিষেবা কেন্দ্রের গ্রাহক হওয়ায় এ দিন টাকা তুলতে ওই কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করছিলেন। ম্যানেজার ইমরান আলির সঙ্গে দেখা হওয়ায় তার মোটরবাইকে উঠে পড়েন তিনি।
তাঁরা জানিয়েছেন, গরমে রাস্তা একেবারে সুনসান ছিল। চাঁচল থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে ফাঁকা জায়গায় পিছন থেকে একটি মোটরবাইকে চেপে তিন দুষ্কৃতী প্রথমে তাঁদের বাইকের পাশে চলে আসে। প্রত্যেকের মুখেই মুখোশ ছিল। তারপর এক দুষ্কৃতী আচমকাই মোটরবাইকে লাথি মারতে তাঁরা দুজনেই পড়ে যান। ওই অবস্থাতেই ইমরানের কাঁধে ঝোলানো টাকার ব্যাগ কেড়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। ইমরান উঠে বাধা দিতেই পিস্তল উঁচিয়ে তাঁকে বেধড়ক মারধর করে গুলি করার হুমকি দেয় দুষ্কৃতীরা। চলন্ত মোটরবাইক থেকে পড়ে মুখে ও সারা শরীরে গুরুতর আঘাত পান ওই শিক্ষিকা। তিনি কোনওক্রমে উঠে দাঁড়িয়ে পিছন ফিরে দুষ্কৃতীদের দিকে তাকান। চিনতে পেরেছে ভেবে এক দুষ্কৃতী তাঁকে লক্ষ করে গুলি ছোড়ে। তিনি সরে যাওয়ায় তাঁর ডান পায়ের হাঁটুতে গুলি এসে লাগে বলে দাবি করেছেন ওই শিক্ষিকা।
ঘটনাস্থল থেকে ছ’কিলোমিটার দূরেই বিহার। এর আগেও এক ব্যবসায়ীকে গুলি করে টাকা লুঠ করে বিহারের দিকে পালিয়েছিল দুষ্কৃতী। তবে এ বার দুষ্কৃতীরা লুঠের পর মোটরবাইক ঘুরিয়ে চাঁচলের দিকে চলে যায় বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। তাই তারা স্থানীয় ও ব্যাঙ্ক থেকেই ওই দুজনকে অনুসরণ করেছিল বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে পুলিশ। তারা জানিয়েছে, দুষ্কৃতীদের খোঁজ চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy