Advertisement
১৮ মে ২০২৪
মহানন্দা দূষণ নিয়ে মামলা

হলফনামা দিল না পুরসভা, প্রশাসন

টাকার বিনিময়ে শিলিগুড়িতে মহানন্দার চর দখল হয় কি না জানতে চেয়েছিল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। শুনানির দিন পেরিয়ে গেলেও প্রশাসন অথবা পুরসভা, কোনও পক্ষই উত্তর জানাল না ট্রাইব্যুনালে। হলফনামা না পেয়ে শুনানির তারিখও পিছিয়ে গিয়েছে। পরের শুনানি হবে আগামী ৩ মার্চ।

শিলিগুড়িতে এ ভাবেই দখল হয়ে যাচ্ছে মহানন্দার চর। ফাইল চিত্র

শিলিগুড়িতে এ ভাবেই দখল হয়ে যাচ্ছে মহানন্দার চর। ফাইল চিত্র

অনির্বাণ রায়
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:০৫
Share: Save:

টাকার বিনিময়ে শিলিগুড়িতে মহানন্দার চর দখল হয় কি না জানতে চেয়েছিল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। শুনানির দিন পেরিয়ে গেলেও প্রশাসন অথবা পুরসভা, কোনও পক্ষই উত্তর জানাল না ট্রাইব্যুনালে। হলফনামা না পেয়ে শুনানির তারিখও পিছিয়ে গিয়েছে। পরের শুনানি হবে আগামী ৩ মার্চ।

মহানন্দা-সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন নদীতে দূষণ ঠেকাতে একাধিক নালিশ জানিয়ে গ্রিন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেছিলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। মামলায় অন্যতম অভিযোগ ছিল চর দখলের। কয়েক হাজার টাকা ফেললেই শিলিগুড়িতে নদীর চরে জায়গা মেলে বলে অভিযোগ করা হয়েছিল। প্রকাশ্যে চর বিক্রি চললেও প্রশাসন উদাসীন বলে নালিশ করা হয়। অভিযোগে কতটা সত্যতা রয়েছে তা হলফনামা দিয়ে জানাতে বলেছিল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। গত ১৬ জানুয়ারি শুনানির দিনে কোনও হলফনামা জমা পড়েনি। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ পরিবেশপ্রেমীরা। হলফনামা দিতে কেন দেরি হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।

২০১৫ সালের ডিসেম্বরে গ্রিন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের হয়েছিল। গত বছরের জানুয়ারি থেকে শুনানি শুরু হয়। গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে মহানন্দা নিয়ে শুনানি শুরু হয়েছে। গ্রিন ট্রাইব্যুনালে শুনানি চলার সময়ে একবার নদীতে দখল উচ্ছেদ অভিযানও চালায় পুরসভা। সে অভিযানও মাঝপথে থমকে গিয়েছে। তা নিয়ে রাজনীতির অভিযোগ পাল্টা অভিযোগও উঠেছে। শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আগেও মহানন্দা নিয়ে গ্রিন ট্রাইব্যুনালে আমরা হলফনামা দিয়েছি। এ ক্ষেত্রে কী হয়েছে তা খোঁজ নেব।’’ প্রশাসনের তরফে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, হলফনামা চাওয়া হলেও তা কবের মধ্যে দিতে হবে তার কোনও উল্লেখ্য ছিল না। আগামীর শুনানির আগে হলফনামা জমা পড়ে যাবে বলে প্রশাসন দাবি করেছে। শিলিগুড়ির মহকুমা শাসক পানিক্কর হরিশঙ্কর বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ অমান্য করার প্রশ্নই ওঠে না। নির্দেশ মতোই পদক্ষেপ হবে।’’

বছরখানেক ধরে শিলিগুড়িতে মহানন্দার বিভিন্ন ঘাটে সমীক্ষা চালিয়েছিলেন সুভাষবাবু। নদীখাতে খাটাল থেকে দোতলা বাড়ি সবই গজিয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করে দ্রুত দখল সরানোর নির্দেশ দেওয়ার আবেদন জানান ট্রাইব্যুনালে। মামলায় উল্লেখ্য করা হয়, দশ থেকে পঞ্চাশ হাজার অথবা আরও বেশি টাকায় নদীর চর, এমনকী গতিপথে বালি-মাটি ফেলে উঁচু করে নিয়ে জায়গা বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। হিলকার্ট রোড হোক অথবা সেবক রোড ছুঁয়ে যেখান দিয়েই মহানন্দা বয়েছে সেখানেই অবৈধ দখলদার গজিয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। সুভাষবাবু বলেন, ‘‘অভিযোগ দেখে ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ বিস্মিত হয়। সত্যি এমন হয় কি না তা জানতে প্রশাসনের কাছে হলফনামা তলব করে। শুনানির দিনে সেই হলফনামা দাখিল হল না।’’ সুভাষবাবুর দাবি, ‘‘প্রশাসনের চোখের সামনেই দখল চলছে। তাই হলফনামা দিতে অস্বস্তিতে পড়েছে সকলে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mahananda River
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE