বাগডোগরা বিমানবন্দর
মোটে ২৪ ঘণ্টা হয়েছে বাগডোগরা বিমানবন্দরকে মেজর ঘোষণা করা হয়েছে। তার মধ্যেই বিমানবন্দরের এই তকমার কৃতিত্ব কার তা নিয়ে শুরু হয়ে গেল কেন্দ্র ও রাজ্যের চাপানউতোর। বিমানবন্দরকে দেশের অন্যতম বড় বিমানবন্দর হিসেবে মেজর ঘোষণা করা ছাড়াও, সম্প্রসারণ, আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এসবের কৃতিত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের এমনই দাবি করছেন বিজেপি নেতারা। দার্জিলিংয়ের সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়াও বাগডোগরার উন্নয়ন কেন্দ্রের জন্যই হচ্ছে বলে একাধিকবার জানিয়েছেন। আর রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের পাল্টা কটাক্ষ, তেলের সারচার্জ রাজ্যই কমিয়েছে। যার প্রভাব টিকিটের দামে পড়েছে।
এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার (এএআই) তরফে দিল্লি থেকে সম্প্রসারণের জন্য ৪০০ কোটি টাকার পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। কলকাতা বিমানবন্দরের আদলে নতুন পরিকাঠামো তৈরি হবে। জমি অধিগ্রহণের জন্য দেশের মধ্যে প্রথমবার এএআই বোর্ড আলাদা করে বাগডোগরার জন্য ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।
এখন জমির বিষয়টি সম্পূর্ণ রাজ্যের হাতে। রাজ্য যত দ্রুত চা বাগান বা ব্যক্তিগত মালিকানার জমি হস্তান্তর করবে তত তাড়াতাড়ি বিমানবন্দরের নতুন পরিকাঠামোর কাজ হবে। বিজেপির উত্তরবঙ্গের আহ্বায়ক রথীন বসু বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রের তরফে বাগডোগরার জন্য যা যা করণীয় তা করা হচ্ছে। কিন্তু জমি তো রাজ্যের হাতে। তা দ্রুত না পাওয়াতেই তো উন্নয়ন থাকছে। আসন্ন লোকসভা ভোটে আমরা বিষয়গুলো তুলব।’’ এর পাল্টা গৌতম দেব বলেন, ‘‘বিজেপি নেতাদের মুখে কেবলমাত্র ভাঁওতাবাজি এবং বিভ্রান্তমূলক কথাবার্তা।’’ তিনি জানান, এর আগে ২৩ একর জমি রাজ্য এমনিই ব্যবস্থা করে দিয়েছে। নতুন জমির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আলোচনা করে চূড়ান্ত করতে কিছুটা সময় লাগবে বলে জানান তিনি।
লোকসভা ভোটের আগে উত্তরবঙ্গে বাগডোগরা বিমানবন্দরের উন্নতির প্রক্রিয়ার দাবিকে সামনে রেখে সরব ধীরে ধীরে সরব হচ্ছে বিজেপি। গত এক বছরে ইনস্ট্রুমেন্টাল ল্যান্ডিং সিস্টেম (আইএলএস) চালু হয়েছে, জমির ও পরিকাঠামোর জন্য টাকা বরাদ্দের ঘোষণাও করেছে এএআই। গত মাসেই দিল্লিতে বাগডোগরাকে মেজর বিমানবন্দর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ বার জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার পুরোটাই রাজ্যের হাতে। সেই কাজও শুরু হয়েছে। দু’টি চা বাগান গোষ্ঠীর জমিকে ঘিরেই সম্প্রসারণের পরিকল্পনা তৈরি হচ্ছে। তা চূড়ান্ত করে বাগানের লিজের জমি ফেরৎ নিয়ে তা নতুন করে এএআই-র হাতে তুলে দিতে কিছুটা সময় লাগবে বলে জানাচ্ছেন রাজ্য প্রশাসনের একাংশ। আবার কেন্দ্র ও রাজ্যের প্রশাসনিক স্তরে যৌথ পরিদর্শনের বিষয় রয়েছে। তাতে কম করে হলেও ছয় মাস থেকে ১ বছর সময় প্রয়োজন বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞ মহল।
আর একে সামনে রেখেই রাজ্যের সমালোচনার বিজেপি সরব হচ্ছে। যেমন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরের সময়ই পাহাড়ের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নানা উন্নয়নের কাজ নিয়ে সরব হয়েছিলেন দলের নেতারা। দলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ রায় চৌধুরী বলেন, ‘‘কেন্দ্র উত্তরবঙ্গকে ভরিয়ে দিয়েছে। দু’টি এশিয়ান হাইওয়ে, নতুন ফোর লেন, এইমস, কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, বাগডোগরা বিমানবন্দর কী করা হয়নি।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘অথচ কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় ঝুলে রয়েছে। এইমসকে উত্তরবঙ্গ থেকে সরানো হয়েছে। মানুষ দেখছে, কারা উন্নয়ন নিয়ে রাজনীতি করে।’’ গৌতম দেবের পাল্টা দাবি, ‘‘পাহাড় থেকে সমতল যেখানে যা উন্নয়ন প্রয়োজন রাজ্য সরকার তা দেখেশুনে করছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy