হিমঘরে যাওয়ার আগে মাঠে আলু গোছানো হচ্ছে। ছবি: অমিত মোহান্ত
কৃষি বিপণন দফতরের দাবি, হিমঘর প্রায় ভর্তি। কিন্তু আলু নিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরের হিমঘরগুলির সামনে চাষিদের লাইন অব্যাহত। শেষ পর্যন্ত হিমঘরে সেই আলুর ঠাঁই মিলবে কি না, নিশ্চিত করে বলতে পারেনি কৃষি বিপণন দফতরও। কৃষি বিপণন মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রের নিজের জেলা দক্ষিণ দিনাজপুরে এই চিত্র। যা নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন আলু চাষিরা।
মঙ্গলবারেও দেখা গিয়েছে, গঙ্গারামপুর, তপন, বুনিয়াদপুর ও কুশমণ্ডি এলাকার চারটি হিমঘরের সামনে ট্রাক, ট্রাক্টর ও ভুটভুটি ভর্তি অন্তত ১২ হাজার মেট্রিক টন আলু নিয়ে সংরক্ষণের আশায় চালক ও চাষিরা হত্যে দিয়ে পড়ে রয়েছেন। হিমঘরে আলু সংরক্ষণের প্রক্রিয়া ঢিমেতালে চলছে বলে অভিযোগ। ফলে গত চার দিন ধরে চাষি ও গাড়ির চালকেরা খোলা আকাশের নীচে রাত কাটাচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট লোকজনেরা।
জেলা কৃষি দফতর জানিয়েছে, এ বছর দক্ষিণ দিনাজপুরে প্রায় ৪৮ হাজার মেট্রিক টন আলু উৎপন্ন হয়েছে। আর প্রশাসন নিয়ন্ত্রিত জেলার চারটি হিমঘরে আলু সংরক্ষণের ক্ষমতা প্রায় ৩৭ হাজার মেট্রিক টন। কৃষি দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, প্রায় ১১ হাজার মেট্রিক টন আলু খোলা বাজারে বিক্রি ও কিছুটা বীজের জন্য রেখে দেওয়াটা স্বাভাবিক ব্যাপার। হিমঘরে আলু সংরক্ষণে তাই চাষিদের কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
অথচ বাস্তব অবস্থার সঙ্গে সংরক্ষণের ওই সরকারি তথ্য মিলছে না বলে অভিযোগ। জেলা কৃষক সমিতির সম্পাদক সঞ্জয় মণ্ডলের অভিযোগ, আলু সংরক্ষণের স্লিপ (বন্ড) আগেই এক শ্রেণির দালালের হাতে চলে গিয়েছে। ফলে হিমঘরে আলু রাখতে মরিয়া হয়ে অনেক চাষির ভিড় অব্যাহত। অনেক আলু চাষি সংরক্ষণের সুযোগ না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন বলে তিনি দাবি করেন।
মঙ্গলবার কৃষি বিপণন দফতরের আধিকারিক সুব্রত দত্ত জানান, জেলার হিমঘরগুলির অধিকাংশ জায়গা ভর্তি হয়ে গিয়েছে। দালালেরা আলু সংরক্ষণের বন্ডের সুবিধা নিচ্ছেন বলে কোনও অভিযোগ নেই। কৃষি বিপণন মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র বলেন, “পরিস্থিতির দিকে নজর রয়েছে।” তপনের চকবলিরামের ভুটভুটি চালক জয়দুর রহমান বলেন, ‘‘গত চার দিন ধরে গঙ্গারামপুর কৃষি বিপণন সমবায় সমিতির হিমঘরের সামনে রাস্তায় অপেক্ষা করে রয়েছি। হিমঘরে আলু পৌঁছে দিলে ১২০০ টাকা ভাড়া পাব। কিন্তু চার দিনে খাওয়া খরচেই প্রায় সব টাকা চলে যাবে মনে হচ্ছে।’’ সর্বমঙ্গলা এলাকার চাষি রহিম আলম বলেন, ‘‘জল নেই। রাতে মশার কামড় খেয়ে পড়ে রয়েছি। কিন্তু হিমঘরে আলু রাখতে পারব কি না, জানি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy