Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪
Panchanan Barma University

আদালতে গেলেন রেজিস্ট্রার

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিখিলেশ রায় অবশ্য কিছু বলতে চাননি। তবে রেজিস্ট্রারের পাশে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল প্রভাবিত অধ্যাপকদের সংগঠন ‘ওয়েবকুপা’র নেতা সাবলু বর্মণ।

পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়।

পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২৪ ০৮:৫৯
Share: Save:

এ বার আদালতে গড়াল কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নিয়ে টানাপড়েন। রাজ্য সরকারের চিঠি নিয়ে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হলেন কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপসারিত রেজিস্ট্রার আব্দুল কাদের সফেলি। বুধবার সফেলি জানান, তিনি কলকাতা হাই কোর্টে ‘রিট পিটিশন’ দাখিল করেছেন। খুব শীঘ্রই তার শুনানি হবে। তাঁর দাবি, ‘‘অনৈতিক ভাবে আমাকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের চিঠির পরেও, সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়নি। অসম্মানিত ও অপমানিত হতে হয়েছে আমাকে। সে জন্যেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।’’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিখিলেশ রায় অবশ্য কিছু বলতে চাননি। তবে রেজিস্ট্রারের পাশে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল প্রভাবিত অধ্যাপকদের সংগঠন ‘ওয়েবকুপা’র নেতা সাবলু বর্মণ। তিনি পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকও। তাঁর দাবি, ‘‘অবৈধ ভাবে রেজিস্ট্রারকে সরিয়ে দিয়েছেন উপাচার্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মানা হয়নি। রাজ্য সরকারের উচ্চ শিক্ষা দফতর চিঠি দেওয়ার পরেও কোনও সিদ্ধান্ত বদল হয়নি। এ বার আদালতের মাধ্যমে রেজিস্ট্রার ন্যায়বিচার পাবেন বলেই আশা করছি। আগামী ১৭ মে ওই রিট পিটিশনের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।’’

২০১৭ সালে রেজিস্ট্রার হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগ দেন আব্দুল কাদের সফেলি। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেন নিখিলেশ রায়। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস তাঁকে ওই দায়িত্ব দিয়েছিলেন। রাজ্যের তাতে সায় ছিল না। অভিযোগ, শুরু থেকেই উপাচার্যের কাজে কোনও সহায়তা করছিলেন না রেজিস্ট্রার। গত এপ্রিল মাসের শেষের দিকে দু’পক্ষের ‘সংঘাত’ আরও তীব্র হয় সমাবর্তন অনুষ্ঠান ঘিরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে ৩০ এপ্রিল সমাবর্তন অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রাজ্য সরকার তা নিয়ে আপত্তি জানায়। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, সমাবর্তন নিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যকে চিঠি দিয়েছিলেন রেজিস্ট্রার। এর পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে সরব হন। অভিযোগ, উপাচার্য পারচেজ় এবং টেন্ডার কমিটির চেয়ারম্যান। তাঁর অনুমতি না নিয়ে ওই গুরুত্বপূর্ণ কমিটির মিটিং করেছেন রেজিস্ট্রার। এই পরিস্থিতিতে গত ২৪ এপ্রিল রেজিস্ট্রারকে ‘শো-কজ়’ করেন উপাচার্য। সাত দিনের মধ্যে তিনি ‘শো-কজ়’-এর উত্তর চেয়েছিলেন। সে মতো উত্তর দিয়েছিলেন রেজিস্ট্রার। তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে গত শুক্রবার রেজিস্ট্রেরকে ‘সাসপেন্ড’ করেন উপাচার্য।

তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রেজিস্ট্রারকে উচ্চশিক্ষা দফতরের তরফ থেকে একটি চিঠি দেওয়া হয়। ওই চিঠির কপি উপাচার্য-সহ একাধিক জায়গায় দেওয়া হয়। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের একাধিক ধারা উল্লেখ করে ‘সাসপেনশন’ অবৈধ বলে জানানো হয়। তার পরেও উপাচার্যের সিদ্ধান্তের কোনও পরিবর্তন হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ‘ঘনিষ্ঠ’ অংশের দাবি, উপাচার্যকে সরাসরি চিঠি লিখে ওই ‘সাসপেনশন’ তুলে নিতে বলেনি উচ্চশিক্ষা দফতর। সে এক্তিয়ারও তাদের নেই।

তবে ওই চিঠিকে হাতিয়ার করেই আদালতে গেলেন অপসারিত রেজিস্ট্রার।

অন্য বিষয়গুলি:

Cooch Behar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE