Advertisement
০৩ মে ২০২৪

শিং বাগিয়ে ‘হুমকি’, অভিযান স্থগিত পুরপ্রধানের

ঘটনাস্থল রায়গঞ্জের মহাত্মা গাঁধী রোড। বুধবার সকাল ১০টা নাগাদ রাস্তার গরু ধরতে বেরিয়েছেন পুরপ্রধান সন্দীপ বিশ্বাস। সঙ্গে কাউন্সিলর সাধন বর্মণ ও বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়। রয়েছেন কয়েকজন পুরকর্মীও।

এঁড়ে: গরু সরানোর চেষ্টায় প্রাণপাত পুরকর্মীদের। নিজস্ব চিত্র

এঁড়ে: গরু সরানোর চেষ্টায় প্রাণপাত পুরকর্মীদের। নিজস্ব চিত্র

গৌর আচার্য 
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৯ ০১:২০
Share: Save:

মানুষ ছুটছে। মানুষের সামনে গরু। গরুও ছুটছে। আবার গরুর সামনে মানুষও। ঊর্ধ্বশ্বাস এই ছোটাছুটির জেরে তুমুল আতঙ্ক আর হইচই রাস্তা জুড়ে! কেউ গুঁতো খেয়ে দৌড়চ্ছেন, কেউ গুঁতো খাওয়ার ভয়ে! ট্র্যাফিক আইনের তোয়াক্কা না-করা কয়েকটি গরু-বাছুরও কিছু বুঝে উঠতে না পেরে শিং বাগিয়ে একবার রাস্তার এপারে আসছে, আবার ছুটে ওপারে চলে যাচ্ছে।

ঘটনাস্থল রায়গঞ্জের মহাত্মা গাঁধী রোড। বুধবার সকাল ১০টা নাগাদ রাস্তার গরু ধরতে বেরিয়েছেন পুরপ্রধান সন্দীপ বিশ্বাস। সঙ্গে কাউন্সিলর সাধন বর্মণ ও বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়। রয়েছেন কয়েকজন পুরকর্মীও। এ দিনই ২২ নম্বর ওয়ার্ডের বন্দর শ্মশান চত্বরে একটি পশুপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র চালু করার কথা ছিল পুরসভার। উদ্দেশ্য, শহরে যানজট ও দুর্ঘটনা রুখতে একাধিক রাস্তায় বিচরণকারী গরুদের ধরে ওই কেন্দ্রে পুনর্বাসন দেওয়া। সেই অভিযানই ছিল এ দিন। তাই সকালে মহা-উৎসাহে গরু-ধরা অভিযানে বেরিয়েছিলেন পুর-কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গোল বাধাল গরুকুলই!

প্রথমেই পুরপ্রধান ও সঙ্গীরা শহরের মহাত্মা গাঁধী রোড এলাকায় পৌঁছন। রাস্তার মাঝে বসে ও দাঁড়িয়ে থাকা একাধিক গরুর গলায় দড়ি বেঁধে সেগুলিকে ধরার চেষ্টা করেন তাঁরা। তখনই ছোটাছুটি শুরু করে দেয় তারা। গরুগুলিকে ধরার জন্য সেগুলির পিছনে ছুটতে থাকেন পুরসভার কর্মীরা। ইতিমধ্যে রাস্তায় গাড়ি থমকে যায়। গরুর গুঁতোর আতঙ্কে পথচারীদের একাংশ দৌড়ে রাস্তার দু’ধারে বিভিন্ন দোকানে ঢুকে পড়েন। এর মধ্যেই কয়েকটি গরুর গলায় দড়ি বেঁধে সেগুলিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন দুই পুরকর্মী। কিন্তু কয়েকটি গরু কথা না শুনে রাস্তায় শুয়ে পড়ে। তাদের তখন টেনে-হিঁচড়েও নিয়ে যাওয়া যায়নি। ইতিমধ্যে রাস্তার অন্যপাশ থেকে দু’তিনটে বাছুর এসে মা-গরুর পাশে এসে পড়ে। ফলে দেখেশুনে রণে ভঙ্গ দেন পুরকর্মীরা। হতাশ হয়ে তাঁরা গরুগুলিকে ছেড়ে ফিরে যান। এর ফলে ওই পশুপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র চালু করা গেল না এ দিন।

পরে সন্দীপ জানান, পুজোর মুখে শহরে যানজট ও দুর্ঘটনা রুখতে গরুগুলিকে ধরে পশুপ্রাণী কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু রাস্তায় প্রচণ্ড ভিড় ও যানবাহনের সংখ্যা বেশি থাকায় দুর্ঘটনার আশঙ্কায় শেষপর্যন্ত সেগুলিকে ধরা যায়নি। রাতে গরু ধরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

উকিলপাড়া এলাকার বাসিন্দা গৃহবধূ মণিকা সরকার বলেন, ‘‘পুজোর কেনাকাটা করতে যাচ্ছিলাম। মহাত্মা গাঁধী রোড এলাকায় লোকজনের তাড়া খেয়ে একটি গরু দৌড়ে পালাতে গিয়ে আমার দিকে তেড়ে আসে। গুঁতোর ভয়ে আমি কোনওমতে দৌড়ে রাস্তার ধারের একটি দোকানে ঢুকে পড়ি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Raiganj Municipality Cow Catch
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE