Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪
crpf

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় কাশ্মীরে নিহত সিআরপিএফ জওয়ানের শেষকৃত্য ধূপগুড়িতে

গত ২৫ মার্চ কাশ্মীরের লাওয়াপোরোতে লস্কর-ই-তইবার জঙ্গিদের গুলিতে গুরুতর জখম হয়েছিলেন সিআরপিএফের ৭৩ নম্বর ব্যাটেলিয়নের কনস্টেবল জগন্নাথ।

শহিদ জওয়ানকে ‘গার্জ অফ অনার’ সিআরপিএফের।

শহিদ জওয়ানকে ‘গার্জ অফ অনার’ সিআরপিএফের। জলপাইগুড়ি

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২১ ২০:১৫
Share: Save:

জম্মু ও কাশ্মীরে জঙ্গি হানায় নিহত সিআরপিএফ জওয়ান জগন্নাথ রায়ের শেষকৃত্য রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সম্পন্ন হল জলপাইগুড়ির ধূপগুড়িতে। শনিবার জগন্নাথের কফিনবন্দি দেহ নিয়ে তাঁর ধূপগুড়ির পশ্চিম শালবাড়ি গ্রামের বাড়িতে পৌঁছন সিআরপিএফের অফিসারেরা। গ্রামের শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্যে হাজির হয়েছিলেন বহু মানুষ।

গত ২৫ মার্চ কাশ্মীরের লাওয়াপোরোতে লস্কর-ই-তইবার জঙ্গিদের গুলিতে গুরুতর জখম হয়েছিলেন সিআরপিএফের ৭৩ নম্বর ব্যাটেলিয়নের কনস্টেবল জগন্নাথ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ভর্তি করানো হয় হাসপাতালে। সেখানে চলে জীবন যুদ্ধ। সোমবার সন্ধ্যায় মৃত্যু হয় জগন্নাথের। তাঁর বাড়িতে রয়েছেন, বৃদ্ধা মা প্রমীলা, স্ত্রী তাপসী, তিন বছরের ছেলে, দাদা পরেন, বৌদি ও ভাইঝি। প্রসঙ্গত, ওই জঙ্গি হামলায় শহিদ হন ত্রিপুরা এবং হিমাচল প্রদেশের ২ জওয়ান। গুরুতর আহত হন ৩ জন। জখম ৩ জনের মধ্যেই ছিলেন জগন্নাথ।

মঙ্গলবার কাশ্মীর থেকে দিল্লিতে আনা হয় নিহত সিআরপিএফ জওয়ানের দেহ। সেখানে বাহিনীর আধিকারিকরা শেষ শ্রদ্ধা জানা। বুধবার দিল্লি থেকে বাগডোগরা বিমানবন্দরে আনা হয় দেহ। বিমানে ছিলেন পরেশ। প্রসঙ্গত, গত শনিবার পরেশ এবং জগন্নাথের শ্যালক তাপস রায় ও জামাইবাবু গোপাল রায় শ্রীনগরের হাসপাতাল গিয়েছিলেন। তাপস রায় ও গোপাল রায় পৃথক বিমানে দিল্লি থেকে বাগডোগরা ফেরেন মঙ্গলবার।

বাগডোগরাতে নেমে শিলিগুড়ির কাওয়াখালির সিআরপিএফ ব্যারাকে আনা হয়। সেখানে আধিকারিকরা শ্রদ্ধা জানান তাঁকে। এরপর বাহিনীর কনভয়ে ধূপগুড়ির পশ্চিম শালবাড়ির বাড়িতে আনা হয় দেহ। যুবকেরা মোটরবাইকে জাতীয় পতাকা লাগিয়ে মিছিল করে নিয়ে আসেন কনভয়।

গ্রামের বীর পুত্রের কফিন বন্দি নিথর দেহ নিয়ে সেনা আধিকারিকরা গ্রামে ঢুকতেই গ্রামবাসীদের চোখের বাঁধ ভেঙে যায়। ‘জগন্নাথ রায় অমর রহে’ স্লোগান দেয় জনতা, দেওয়া হয় ‘পাকিস্তান মুর্দাবাদ’ ধ্বনি। পরেশ বলেন, ‘‘ক’দিন পরেই ছুটি নিয়ে বাড়ি আসার কথা ছিল ভাইয়ের। তারপর অন্য জায়গায় ওর পোস্টিং হত। কিন্তু ভাগ্যে তা ছিল না।’’

আধাসেনার রীতি মেনে ড্রাম, বিউগল জাতীয় পতাকায় ঢেকে দেওয়া কফিনে করে জগন্নাথের দেহ। তারপর গ্যালান্ডি নদীর পারের মাঠে মঞ্চ তৈরি করে ফুল মালা, রাজবংশী সমাজের হলুদ গামছা পরিয়ে এবং গান স্যালুট জানিয়ে শহিদকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও স্থানীয় মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জগন্নাথকে।

বুধবার জগন্নাথকে শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত হন জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ জয়ন্ত রায়, ধূপগুড়ির প্রাক্তন বিধায়ক তথা তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী মিতালি রায়, বিজেপি প্রার্থী বিষ্ণুপদ রায়, ধূপগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দীনেশ মজুমদার, ধূপগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান ভারতী বর্মন, ভাইস চেয়ারম্যান রাজেশ সিংহ, সিআরপিএফের ডিআইজি প্রভঞ্জন। শহিদের সম্মানে জাতীয় পতাকা বাইক মিছিল করার জন্য স্থানীয় যুবকদের ধন্যবাদ জানিয়ে ডিআইজি বলেন, ‘‘জাতীয় পতাকায় শায়িত হয়ে অন্তিম যাত্রা সম্মানের। এমন সম্মান সকলে পান না।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE