তার বয়সি ছেলেমেয়েদের মোবাইলে গেম খেলে বা কার্টুন দেখেই অবসর কাটায়। কিন্তু রায়গঞ্জের তুলসীপাড়ার বাসিন্দা দেবজ্যোতি সরকারের অবসর সময় কাটে একটু অন্য ভাবে। বাড়ির ছাদে শ্যামাসঙ্গীত গাইতে গাইতে মাটির মূর্তি তৈরি করে সে। এই কাজই তাকে জনপ্রিয় করে তুলেছে এলাকার মানুষের কাছে।
দেবজ্যোতি সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। বাবা, মা, ঠাকুমা এবং ভাইয়ের সঙ্গেই থাকে সে। তার বাবা দেবাশিস সরকার একটি গ্যারাজে মেকানিকের কাজ করেন। বাড়িতে কমই থাকেন তিনি। তাই মা এবং ঠাকুমার কাছেই ঠাকুর বানানোর সরঞ্জামের আবদার করে সে। তা পেয়েই ঠাকুর তৈরিতে মেতে গিয়েছে দেবজ্যোতি। ছোট ছোট বেশ কয়েকটি কালীমূর্তি ইতিমধ্যেই তৈরি করে ফেলেছে সে। সেই সব মূর্তিতে রং করার কাজও করছে নিজের হাতে। এই কাজ করতে করতে তার গলায় গাওয়া শ্যামাসঙ্গীত মুগ্ধ করার মতোই।
ছোট থেকেই দেবজ্যোতির মূর্তি তৈরির নেশা বলে জানিয়েছেন তার মা রূপা সরকার। তিনি বলেছেন, ‘‘ছেলের জন্ম শ্যামাপুজোর দিনই। ছোট থেকেই ওর কালীর প্রতি ভক্তি এবং আগ্রহ রয়েছে। এখন ওর বয়স ১২ বছর। এই বয়সেই তন্ময় হয়ে ঠাকুরের গান গায়। ঠাকুর গড়ার জিনিস তৈরির জন্যও বায়না করে।’’ একই কথা দেবজ্যোতির বাবা দেবাশিসের গলায়। তিনি বলেছেন, ‘‘ও আর পাঁচটা ছেলের মতো নয়। মোবাইলে সময় কাটায় না। মূর্তি তৈরি করাই ওর নেশা।’’
ছোট্ট দেবজ্যোতির এই শিল্পকর্ম দেখতে প্রতিবেশী এবং আত্মীয়রা ভিড় জমান তাদের বাড়িতে। পড়াশোনার পাশাপাশি নিয়ম করেই মূর্তি বানায় সে। ভবিষ্যতে অঙ্কনশিল্পী এবং মৃৎশিল্পী হতে চায় সে। নিজের এই কাজ নিয়ে দেবজ্যোতি বলেছে, ‘‘আমি ছোটবেলায় প্রথম গণেশের মূর্তি বানিয়েছিলাম। তার পর থেকে কালী প্রতিমা বানাই। কালীপুজোর সময় আমার জন্ম। তাই কালী প্রতিমা বানাতেই আমার ভাল লাগে। আমি একা একাই মূর্তি তৈরি করি। প্রতিমা তৈরির সময় মন থেকেই গান করি। আমি বড় হয়ে শিল্পীই হতে চাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy