Advertisement
২১ মে ২০২৪

মেয়র পারিষদের দফতর বণ্টনে বিতর্ক শিলিগুড়িতে

সদ্য গঠিত শিলিগুড়ি পুরবোর্ডের মেয়র পারিষদের দফতর বণ্টন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। পুর আইন মেনে দফতরগুলি বন্টন হয়নি বলে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী অভিযোগ করেছেন। রবিবার দুপুরে ছুটির দিনে, পুরসভায় বসে মেয়র অশোক ভট্টাচার্য মেয়র পারিষদের নাম ও দফতরের ঘোষণা করেন। তারপরে দফতর বন্টন নিয়ে বাম শরিকদের মধ্যে ক্ষোভ বিক্ষোভ শুরু হয়।

ডেপুটি মেয়র রামভজন মাহাতোকে মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের অভিনন্দন শিলিগুড়ির পুরসভায়। —নিজস্ব চিত্র।

ডেপুটি মেয়র রামভজন মাহাতোকে মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের অভিনন্দন শিলিগুড়ির পুরসভায়। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৫ ০২:৩৪
Share: Save:

সদ্য গঠিত শিলিগুড়ি পুরবোর্ডের মেয়র পারিষদের দফতর বণ্টন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। পুর আইন মেনে দফতরগুলি বন্টন হয়নি বলে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী অভিযোগ করেছেন। রবিবার দুপুরে ছুটির দিনে, পুরসভায় বসে মেয়র অশোক ভট্টাচার্য মেয়র পারিষদের নাম ও দফতরের ঘোষণা করেন। তারপরে দফতর বন্টন নিয়ে বাম শরিকদের মধ্যে ক্ষোভ বিক্ষোভ শুরু হয়। রাতে ফের শরিকদের হাতে থাকা দফতর বদল করেন মেয়র। সোমবার দুপুরে মন্ত্রী গৌতমবাবু অভিযোগ করেন, ‘‘আমি পুর দফতরের মন্ত্রী নই, তবে দুই দশক কাউন্সিলর ছিলাম। তাই বলছি, পুর আইন মেনে তো দফতর বন্টন হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। মেয়র অশোকবাবু দুই দশকের বেশি মন্ত্রী, পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। তার পরে উনি কীভাবে এসব কাজ করছেন, বুঝতে পারছি না।’’

মন্ত্রী জানান, পুর আইন মেনে মেয়র, ডেপুটি মেয়র ছাড়া সাত জন মেয়র পারিষদ রাখার নিয়ম রয়েছে। দফতর কী কী থাকবে তাও ঠিকঠাক রয়েছে। কিন্তু দেখলাম নজিরবিহীনভাবে রবিবার দফতর খুলিয়ে নতুন নতুন কিছু দফতরের কথা ঘোষণা করা হচ্ছে। অতিথি নিবাস, পার্কিং, হাউসিং, আইন এ সব তো পুরসভার আলাদা দফতর বলে জানি না। সবই বিভিন্ন দফতরের অঙ্গ। কিন্তু নতুন মেয়র তা বিভিন্ন মেয়র পারিষদদের দফতর বলে ঘোষণা করেছেন। মন্ত্রীর যুক্তি, ‘‘নতুন কিছু দফতর করতে হলে তো পুর আইনের সংশোধন প্রয়োজন। হাওড়া পুরসভা তাই করেছে। অশোকবাবু সেই পথে হাঁটতে পারতেন। তা না করে তিনি যা করেছেন, তাতে পুরসভার ভিতরে তো বটেই শহরের মানুষের মধ্যেও বিভ্রান্তি বেড়েছে।’’

পুরসভা সূত্রের খবর, পুরসভার মেয়র পারিষদ গঠন নিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরেই বামেদের অন্দরে আলোচনা চলছিল। ডেপুটি মেয়র পদের দাবিদার ছিল ফরওয়ার্ড ব্লক এবং আরএসপি, দুই শরিকই । আবার সিপিএমের অন্দরেও মেয়র পারিষদ নিয়ে নানা দাবিদাওয়া উঠতে থাকে। শেষ পর্যন্ত মেয়র রবিবার পারিষদবর্গের নাম ঘোষণা করেন। তাতে মেয়রের হাতে একাধিক দফতর রেখে সাতজন মেয়র পারিষদের নাম ঘোষণা হয়। ডেপুটি মেয়র রামভজন মাহাতোকে বিদ্যুৎ, বাজার, সম্পত্তিকর অ্যাসেসমেন্ট, এবং ট্রাফিক বিভাগ দেওয়া হয়। মেয়র অশোকবাবু নিজের হাতে রাখেন সাধারণ প্রশাসন, অর্থ, সংখ্যালঘু বিষয়, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন এবং ন্যাশনাল আর্বান লাইভলিহুডস মিশন। গৌতমবাবু যে পদগুলি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, সেই হাউসিং মেয়র পারিষদ শরদিন্দু চক্রবর্তী, অতিথি নিবাস এবং আইন কমল অগ্রবাল এবং পার্কিং দুর্গা সিংহকে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও তাঁদের হাতে আরও অন্য দফতরও রয়েছে।

মন্ত্রী’র দাবি, ‘‘আইন সাধারণ প্রশাসন, হাউসিং সুসংহত গৃহ নির্মাণ প্রকল্প, পার্কিং লাইসেন্স বিভাগে এবং অতিথি নিবাস বিল্ডিং বিভাগেই থাকার কথা। কোনও পারিষদের চাপ কমাতে হলে, তা প্রশাসনিক নির্দেশে একে অন্যের কাজ দেখতেই পারেন। কিন্তু মেয়রের ঘোষণা মত তা এভাবে আলাদা দফতর তো থাকার কথা নয়। আবার পর্যটন দফতরের কথাও আলোচনা করছেন। কিভাবে কী হচ্ছে তা আগামী দিনে প্রয়োজনে আমাদের কাউন্সিলরেরা সভায় জানতে চাইবেন।’’

যদিও মেয়র অশোকবাবু দাবি, ‘‘আমরা পুর দফতরের আইন মেনেই পারিষদ গঠন করে দফতর বন্টন করেছি। পুর দফতরের বিষয় নয়, এমন কিছু দফতর তো তৈরি করা হয়নি। পুর আইনটা ভাল করলে পড়লে গৌতমবাবুদের কাছে তা স্পষ্ট হয়ে যাবে। আর যেসব দফতর নেই, সেগুলি নিয়ে তো আমরা কিছু বলছি না।’’ মেয়র জানান, পর্যটন এমন একটা দফতর যার কথা শিলিগুড়ির গুরুত্বের কথা ভেবে আলোচনায় উঠে এসেছে। তিনি বলেন, ‘‘তবে আমরা তা এখনও তৈরি করিনি। আমরা বলেছি, বিভিন্ন পর্যটন সংগঠন, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে আগামী দিনে ঠিক করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE