চমৎকার চমচম
যাবতীয় রহস্য ছানার উষ্ণতায়। খুব বেশি গরম নয়, আবার ঠান্ডাও নয়, এমনই উষ্ণতায় ছানা জমাট বাঁধে। সেই ছানাকে হাতের নরম ছোঁয়ায় চমচমের আকার দেওয়া হয়। কারিগরদের মতে, না-গরম, না-ঠান্ডা অবস্থায় মিষ্টি তৈরি করলে ভিতরে ছানা ফেটে মৌমাছির চাকের মতো ছোট ছোট ঘরের আকার হয়ে যায়। এর পরে রসে কড়া পাক। তারপরে সারারাত ধরে রসে ডুবিয়ে রাখতে হয় চমচমকে। তবেই তাতে স্বাদ আসে। এটাই হল বেলাকোবার চমচমের সংক্ষিপ্ত রেসিপি। টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচমের ঘরানাতেই তৈরি হয় বেলাকোবার চমচম। দেশভাগের আগে টাঙ্গাইলের চমচমের কারিগররা চলে আসেন বেলাকোবায়। শুরু হয় এ পারের চমচম তৈরি। রসিকজনের কাছে যে স্বাদের কদর তা অবশ্য এত সহজে আসে না। বেলাকোবার ‘দত্তদে’র চমচম দোকানের তরুণ উত্তরাধিকারী লিটন দত্তের কথায়, ‘‘চমচম তৈরির জন্য সবার আগে চাই ভাল দুধ। এখন দুধের বড্ড অভাব। দুধ বেশি পাওয়ার জন্য যে গরুকে ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়, সেই গরুর দুধ দিয়ে ভাল চমচম হবে না। শুধুমাত্র যে গরু পুষ্টিকর খাবার খায়, সেই গরুর দুধ চাই।’’ বাবা-ঠাকুরদার মতো ছানা কতটা গরম বা ঠান্ডা হবে সে রহস্য ভাঙলেন না লিটনও। প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক লিটনের কথায়, ‘‘ওটা তো আন্দাজ।’’লোকে বলে ওই আন্দাজেই নিহিত যাবতীয় রহস্য। পোড়া ইটের রঙের সঙ্গে হালকা গোলাপি আভাযুক্ত চমচম তৈরির কারিগর পাওয়াও সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে আক্ষেপ করলেন লিটন। তিনি আশাবাদী। সাবেকি পোড়াবাড়ির ঘরানার চমচমকে তিনি বিপণনের ছোঁয়া দিতে চান। শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়িতে চমচম বিক্রির আউটলেট তৈরি করতে চান। সম্ভব হলে কলকাতাতেও। চমচমপ্রেমীদের কাছে এটা নিশ্চই সুখবর। লিটনের আক্ষেপ, বিপণনে যদি সরকারি সাহায্য মিলত!
শিয়রে শিমুল শুধু
শিমুল তুলো ধুনতে ভাল, সে তো সুকুমার রায় বলেই গিয়েছিলেন। আর শিমুল ফুল দেখতে যে কত ভাল, তা কারওকে বলে দিতে হয় না। এক সময় মালদহ, বিশেষ করে উত্তর মালদহের চাঁচল, হরিশ্চন্দ্রপুরের মাঠে-প্রান্তরে চোখ মেললেই শিমুলের সারির দেখা মিলত। গাছের তলা থেকে ফুল কুড়িয়ে মালা গেঁথে বিক্রিও হত। ঘর সাজানোর জন্য অনেকেই তা কিনতেন। আর ফল কিনে তা থেকে তুলো বের করে বিক্রি করে ভাল উপার্জন হত অনেকেরই। কিন্তু ফুল-ফল ছাপিয়ে বড় হয়ে উঠল কাঠ। টেঁকসই না হলেও শিমুলের কাঠ দিয়ে সৌখিন আসবাবপত্র তৈরি হয়, যার সৌন্দর্য় নামিদামী কাঠকেও হার মানায়। আজকাল মেলায় শিমুল কাঠের আসবাব অন্য কাঠের তৈরি বলেও চালানো হচ্ছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কোপে সাফ হয়ে যাচ্ছে শিমুল গাছ। সিন্থেটিক তোষক-বালিশের যুগে শিমুল তুলো বিক্রি করেও আর লাভ নেই। তাই নতুন করে কেউ গাছ আর কেউ বসাচ্ছেন না। চাঁচলের একটি স্কুলের প্রাণীবিদ্যার শিক্ষক, পরিবেশ আন্দোলনকারী কমলকৃষ্ণ দাশ বলেন, ‘‘আগে যা দেখেছি, তার মাত্র ২০ শতাংশ শিমুল অবশিষ্ট রয়েছে।’ বিদায় নেওয়ার পথে বসন্তদূত!
মোটর-তারিণী
১৯৫২ সাল। চৈত্রের শেষ শনিবার কয়েক জন বাস মালিক, চালক ও কন্ডাক্টর মিলে রায়গঞ্জের কর্ণজোড়া এলাকার রায়গঞ্জ-বালুরঘাট রাজ্য সড়কের ধারে প্রতিষ্ঠা করেন শ্রীশ্রী মোটর কালীমাতা মন্দির। দুর্ঘটনা এড়াতেই তাঁর শরণ। মন্দির ক্রমশ বড় হয়েছে। আগামী শনিবার, ১১ এপ্রিল পুজো, সকাল ১০টা থেকে রাত আটটা। হাজার দুয়েক ভক্তের জন্য সাত কুইন্টাল চাল-ডালের খিচুড়ি। কয়েক হাজার গাড়ির পুজো হয় ওই দিন। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের প্রাক্তন মহা-অধিকর্তা এবং ভারতীয় শিল্পকলার ইতিহাসের গবেষক-শিক্ষক গৌতম সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘বাঙালির কাছে কালী মহাশক্তিধর দেবী। তাঁর কাছে নানা প্রার্থিত বস্তু চাওয়া যায়, সেই অনুসারে নানা রূপও কল্পনা করা হয়। মোটরকালী তারই প্রকাশ।’’
তোর্সার মেলা
সরকারি উদ্যোগে কোচবিহারে চালু হয়েও বন্ধ হয়ে গিয়েছে লিটল ম্যাগাজিন মেলা। হতাশা কাটাতে কিছু তরুণ সদ্য-প্রতিষ্ঠিত ‘তোর্সা সাহিত্য পরিষদ’-এর তরফে মেলা করছেন ১১-১২ এপ্রিল, শহরের সাগরদিঘির পাড়ে শহিদবাগে। উদ্যোক্তা সুকান্ত দাস, উদয়ার্ণব বন্দ্যোপাধ্যায়, মানস চক্রবর্তী, ভাস্কর দত্ত জানালেন, উত্তরের তিন কবিকে মেলায় সম্মান দেওয়া হবে। তাঁরা হলেন, ধূপগুড়ির পুণ্যশ্লোক দাশগুপ্ত, এবং কোচবিহারের আশিস ভট্টাচার্য ও প্রবীর চট্টোপাধ্যায়। কিছু বিজ্ঞাপন ও নিজেদের জমানো টাকা থেকে খরচ করে সাহস করে মেলা বসাচ্ছেন তরুণ উদ্যোগীরা।
আরও ঋদ্ধিমান চান ভাইদা
তাঁর হাতেই তৈরি হয়েছে ভারতের টেস্ট দলের নির্ভরযোগ্য উইকিকেটকিপার ঋদ্ধিমান সাহা। এবারও কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের উইকেট রক্ষার দায়িত্ব থাকবে তাঁরই হাতে। মঙ্গলবার শুরু হল আইপিএল। গতবার আইপিএল ফাইনালে কেকেআরের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক শতরানের পর তার কাছে চাহিদা আরও বেড়ে গিয়েছে। এমনটাই মনে করছেন তাকে ছোট থেকে গড়েপিটে তোলা কোচ। সোমবারই মোবাইলে ফোন করে তার পরামর্শ চেয়েছেন পাপালি। তিনি বলেছেন, “জাতীয় টি-২০ বা ওয়ান ডে দল নিয়ে না ভেবে নিয়মিত পারফর্ম করতে হবে।” তিনি জয়ন্ত ভৌমিক। সকলের প্রিয় ভাইদা। ছাত্রের পরিচয়ে তিনি এখন সারা দেশেই পরিচিত নাম। ছাত্রের খেলা দেখতে ভোলেন না কোনও সময়েই। নজর রাখেন ভুল ত্রুটিরও। এখনও প্রথম ক্রিকেট গুরুর কাছ থেকে ভুল ত্রুটি শুধরে নিতে ভোলেন না আন্তর্জাতিক তারকাও। তবে তাঁর কাছে এখনও ‘পাপালি’ই রয়ে গিয়েছেন ঋদ্ধি। আর তাঁর শেখার ইচ্ছেটাই তাঁকে আজকের ঋদ্ধিমান করে তুলেছে। ছাত্রের ক্রমবর্ধমান সাফল্যে সন্তুষ্ট হলেও আত্মতুষ্ট নন। তাঁর লক্ষ্য আরও ঋদ্ধিমান তৈরি করে জাতীয় স্তরে পাঠানো। সেই লক্ষ্যে তিনি কাজ করে চলেছেন নিরন্তর। শিলিগুড়ির আশ্রমপাড়ার অগ্রগামী সঙ্ঘের এক চিলতে মাঠে চলে ক্রিকেটার গড়ার কারখানা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy