সাফাই: মিশন ঘাট পরিষ্কার করছেন ইংরেজবাজার পুরসভার কর্মীরা। শনিবার। ছবি: স্বরূপ সাহা
বছর ঘুরলেও এখনও খুঁড়িয়ে চলতে হয় তাঁকে। আজ, রবিবার মহালয়ার ভোরে বাড়ির ঘাট ছেড়ে মিশন ঘাটে মহানন্দা নদীতে গিয়ে পিতৃ তর্পণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইংরেজবাজার শহরের বাসিন্দা প্রশান্ত বসাক। তিনি বলেন, “বাড়ির পাশেই সদর ঘাট। গত বছর পিতৃ তর্পণে নদীতে নামতে গিয়ে পা হড়কে গিয়েছিল। ডান পায়ের হাড়ে চিড় ধরায় এখনও খুঁড়িয়ে চলতে হয়। এ বার ঝুঁকি নেব না। মিশন ঘাটে গিয়ে সবার সঙ্গেই তর্পণ করব।”
তাঁর মতোই পিতৃ তর্পণে গিয়ে পা হড়কে পড়ে যাওয়ার স্মৃতি এখনও টাটকা রয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরের সৌমেন মণ্ডল, উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের দিবাকর সরকারদের। সৌমেন বলেন, “পিতৃ তর্পণে নদীতে নেমে কাচের টুকরোয় পা পড়ে বহু বার জখম হয়েছি। অনেককে পিচ্ছিল ঘাটে পা হড়কে পড়ে যেতে দেখেছি।”
উত্তর দিনাজপুরে কুলিক নদীতে ঘাটে নামার সিঁড়ি থাকলেও পরিষ্কার, পরিচ্ছন্নতা নিয়ে অভিযোগ রয়েছে সাধারণ মানুষের। দিবাকর সরকার বলেন, “এখন নদীতে জল বেশি রয়েছে। প্রশাসনের উচিত, ঘাট গুলিতে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীদের মোতায়ন করা।”
মহালয়ার ২৪ ঘণ্টা আগেও, শনিবার বেহাল ঘাটের চেনা ছবি দেখা গিয়েছে মালদহ ও দুই দিনাজপুরেই। মালদহের ইংরেজবাজার শহরের মিশন ঘাটে মহানন্দা নদীতে তর্পণের জন্য ফি বছর ভিড় উপচে পড়ে। এ দিন অবশ্য নদী থেকে কাঠামো তোলার কাজ শুরু করেছে পুরসভা। বাঁশ দিয়ে কচুরিপানা আটকে রাখা হয়েছে। কর্মীদের নামিয়ে ঘাট থেকে ভাঙা কাচ, মাটির ঘটের মতো সামগ্রীর টুকরো তুলে ফেলা হচ্ছে বলে জানান পুরপ্রধান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী। পুরাতন মালদহের স্কুলপাড়া ঘাটে মহানন্দা নদীতে তর্পণ হলেও, ঘাটের অবস্থা বেহাল বলে দাবি স্থানীয়দের। একই ছবি মানিকচকের গঙ্গার ঘাটেও। অভিযোগ, মানিকচক ঘাটের সিঁড়ি ভেঙে গিয়েছে। ভাঙা সিঁড়ি দিয়েই পিতৃ তর্পণের জন্য নদীতে নামতে হয় বলে জানান অনেকেই। এমনই ছবি দক্ষিণ দিনাজপুরের কংগ্রেস পাড়া ঘাট, সদরঘাট, চকভৃগু ঘাটেও। গঙ্গারামপুর, কুমারগঞ্জ, বুনিয়াদপুরেও কার্যত একই ছবি।
মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া বলেন, ‘‘তর্পণের সময় ঘাটগুলিতে নজরদারি চালানো হবে। স্পিডবোট নিয়ে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা মোতায়েন থাকবেন।’’ বালুরঘাটের ডিএসপি (সদর) সোমনাথ ঝা বলেন, ‘‘পুলিশও মোতায়ন থাকবে গুরুত্বপূর্ণ ঘাটে। আমরা সজাগ রয়েছি।’’ মহকুমাশাসক (রায়গঞ্জ) কিংশুক মাইতি বলেন, ‘‘প্রতি বারের মতো এ বছরও সব নদী ঘাটে প্রশাসনের নজরদারি থাকবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy