কোনও জমিতে টিনের ব্যারিকেড তৈরি করে লাগানো হয়েছে গাঁজা গাছ। কোথাও বাড়ির তুলসি তলা বেছে নেওয়া হয়েছে গাঁজা চাষের জন্য। সেখানেই বেড়ে উঠছে সারি সারি গাছের চারা। সিআইডি’র একটি বিশেষ দল কোচবিহার সদরের মাঘপালা ও লাগোয়া এলাকায় ড্রোন নিয়ে অভিযান চালিয়েছে। সেখান থেকেই উঠে এসেছে এমন চিত্র।
একই ছবি মালদহ জেলাতেও। ওই জেলার কালিয়াচক ও বৈষ্ণবনগরের ড্রোনের মাধ্যমেও চালানো হয়েছে নজরদারি। বিভিন্ন চর এলাকায় পোস্ত চাষের বাড়বাড়ন্ত দেখে উদ্বিগ্ন জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার সকালে মালদহের মানিকচকের ভুতনি চরে প্রায় ২৪ বিঘা জমির পোস্ত চারা নষ্ট করেছে পুলিশ।
কোচবিহারে গাঁজা চাষ বন্ধে আবগারি, পুলিশ, বিএসএফকে নিয়ে বৈঠক ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রশাসন। জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, ‘‘গাঁজা চাষ বন্ধে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চলছে।’’ বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিস সুপার অনুপ জায়সবালও। অন্যদিকে চর এলাকায় পোস্ত চাষের ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় উদ্বিগ্ন মালদহ জেলা পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা। ফলে চলতি মরসুমে কালিয়াচক, বৈষ্ণবনগরের পাশাপাশি চর এলাকাতেও বিশেষ অভিযান চলবে বলে জানিয়েছেন জেলা শাসক শরদ কুমার দ্বিবেদী।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, কোচবিহার জেলায় শুরুতে প্রশাসনের কড়া নজরদারিতে গাঁজা চাষ কিছুটা ধাক্কা খেয়েছিল। কিন্তু নজরদারি ঢিলে হতেই ফের গাঁজা চাষের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।কোচবিহার সদর, মাথাভাঙার কিছু এলাকায় আবাদি জমির এক কোণে শৌচাগারের আদলে টিনের ব্যারিকেড তৈরি করে, তার ভিতরের জায়গায় গাঁজার চারা লাগানো হয়েছে। আবার কোচবিহারের পানিশালা, বলরামপুর, ভোটেরহাট, ফলিমারির মতো কিছু জায়গায় বাড়ির উঠোনে তুলসি তলার জায়গায় লাগানো হয়েছে গাঁজা গাছের সারি। আবগারি দফতর সূত্রের খবর, গত বছর জেলায় প্রায় ৮৭ একর গাঁজা খেত নষ্ট করা হয়েছিল। এবারে এরমধ্যেই ২৪ একর জমির গাঁজা খেত নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে মালদহ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিগত বছর জেলাতে প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে পোস্ত চাষ হয়েছিল। কালিয়াচক ১ ব্লকের শেরশাহি, বালুয়াচারা, মোজমপুর এবং গঙ্গা নদীর ধারে হামিদপুর চর, নবি নগর, রাজনগর, কালিয়াচক ৩ ব্লকের সাহাবাজপুর, আকন্দবেড়িয়াতে ব্যাপক হারে পোস্তের চাষ হয়েছিল। পঞ্চায়েত স্তরের প্রতিনিধি এবং নিচুতলার সরকারি কর্মীদের নিয়ে একাধিকবার বৈঠকও হয়েছে। এমনকী, গ্রামে পোস্ত চাষ হচ্ছে কি না সেবিষয়ে পঞ্চায়েত প্রতিনিধিরা মুচলেকাও দিয়েছিলেন। তবুও পোস্ত চাষের ঘটনা প্রকাশ্যে আসল। অনুমান, দুষ্কৃতীরা রাতে পোস্তের বীজ ছড়াতে পারে। দুষ্কৃতীদের ধরতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy