Advertisement
১৯ মে ২০২৪

কী ভাবে বন্ধ হবে শব্দ, ভেবে পাচ্ছে না কুলিক

নানা ধরনের শব্দের জেরে পরিযায়ী পাখিদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সে জন্য সম্প্রতি রাজ্যের সব সরোবরকে সাইলেন্স জোন বা ‘শব্দ বারণ’ অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। কিন্তু সেই নির্দেশ অনুযায়ী এশিয়া মহাদেশের অন্যতম বৃহত্তম কুলিক পক্ষিনিবাসকে সাইলেন্স জোন হিসেবে ঘোষণা করা প্রায় অসম্ভব।

পক্ষিনিবাসের পাশেই জাতীয় সড়কের উপর দিয়ে সারা দিনই লেগে থাকে যান চলাচল। — নিজস্ব চিত্র

পক্ষিনিবাসের পাশেই জাতীয় সড়কের উপর দিয়ে সারা দিনই লেগে থাকে যান চলাচল। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:১৯
Share: Save:

নানা ধরনের শব্দের জেরে পরিযায়ী পাখিদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সে জন্য সম্প্রতি রাজ্যের সব সরোবরকে সাইলেন্স জোন বা ‘শব্দ বারণ’ অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। কিন্তু সেই নির্দেশ অনুযায়ী এশিয়া মহাদেশের অন্যতম বৃহত্তম কুলিক পক্ষিনিবাসকে সাইলেন্স জোন হিসেবে ঘোষণা করা প্রায় অসম্ভব।

এমনটাই দাবি করেছেন বন দফতরের কর্তারা। তাঁদের যুক্তি, কুলিক নদী ও নদীখালের ধারে অবস্থিত পক্ষিনিবাসের বুক চিরে চলে গিয়েছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। ভবিষ্যতে রায়গঞ্জের রুপাহার থেকে পানিশালা পর্যস্ত প্রস্তাবিত বাইপাস রাস্তা চালু করলে ওই জাতীয় সড়কে যানবাহন চলাচল অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত হবে। কিন্তু তাতেও পক্ষিনিবাসকে পুরোপুরি সাইলেন্স জোন হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব নয়।

তা ছাড়া, প্রতি বছরই জানুয়ারি মাস জুড়ে পক্ষিনিবাসের অসংরক্ষিত এলাকা সহ পিকনিক স্পটে কয়েক হাজার পর্যটক পিকনিক করতে যান। সাউন্ডবক্স বাজিয়ে পিকনিক করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হলেও এখনও পর্যন্ত তা কার্যকরী করা যায়নি।

রায়গঞ্জের বিভাগীয় বনাধিকারিক দ্বীপর্ণ দত্তের দাবি, ‘‘ভৌগলিক অবস্থানগত সমস্যার কারণে পক্ষিনিবাসকে সরকারি ভাবে সাইলেন্স জোন করা প্রায় অসম্ভব।’’ তিনি বলেন, সাউন্ডবক্স বাজানো বন্ধ করতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার মতো পরিকাঠামো তাঁদের নেই।

প্রতি বছর মে-র শেষ সপ্তাহে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান সহ দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে ওপেন বিলস্টক, নাইট হেরন, করমোন্যান্ট, ইগ্রেট সহ বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখি কুলিকে আসে। কয়েক হাজার গাছে বাসা বঁাধে তারা। এখানেই তাদের সন্তান হয়। ছানারা ওড়া শিখলে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি তারা ফিরে যায়। ওই পাখি কুলিক নদী ও নদীখালের থেকে মাছ, শ্যাওলা, শামুক, কাঁকড়া ও বিভিন্ন জলজ পোকা খেয়ে বেঁচে থাকে।

রায়গঞ্জের হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ার্স অ্যান্ড ট্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কৌশিক ভট্টাচার্য ও রায়গঞ্জ পিপল ফর অ্যানিম্যালের সম্পাদক অজয় সাহার দাবি, জাতীয় সড়কে গাড়ি চলাচল ও হর্নের আওয়াজে পরিযায়ী পাখিরা বিরক্ত ও সন্ত্রস্ত। এই কারণেই গত পাঁচ বছর ধরে পরিযায়ী পাখিদের একাংশ শহরের বিভিন্ন পাড়ার গাছে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছে। তাঁদের কথায়, কিন্তু বনাঞ্চল ও কুলিক নদীর টানেই পাখিরা আসে। তাই তাদের নিশ্চিন্ত আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতেই হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

geographical location silence zone
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE