Advertisement
১৬ মে ২০২৪

জেদেই জয়ী চিন্ময়, হিরণ্ময়

মাধ্যমিকে আশানুরূপ ফল হয়নি৷ ফলে সেই জেদেই উচ্চ মাধ্যমিকে ভাল কিছু করার জেদ চেপে বসেছিল ময়নাগুড়ি সুভাষনগর হাইস্কুলের ছাত্র চিন্ময় অধিকারীর৷ ৯৭.২শতাংশ নম্বর পেয়ে রাজ্যে চতুর্থ। জলপাইগুড়ি জেলার মধ্যে প্রথমও সে৷ ময়নাগুড়ির হাসপাতাল পাড়ায় বাড়ি চিন্ময়ের।

চিন্ময় অধিকারী ও হিরণ্ময় রায়।

চিন্ময় অধিকারী ও হিরণ্ময় রায়।

নিজস্ব প্রতিবেদন
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৭ ০২:৫২
Share: Save:

জেদ। সেই ছোটবেলা থেকেই ছিল। তবে যত বড় হয়েছে, ততই বেড়েছে—ভাল কিছু করে দেখানোর।

মাধ্যমিকে আশানুরূপ ফল হয়নি৷ ফলে সেই জেদেই উচ্চ মাধ্যমিকে ভাল কিছু করার জেদ চেপে বসেছিল ময়নাগুড়ি সুভাষনগর হাইস্কুলের ছাত্র চিন্ময় অধিকারীর৷ ৯৭.২শতাংশ নম্বর পেয়ে রাজ্যে চতুর্থ। জলপাইগুড়ি জেলার মধ্যে প্রথমও সে৷ ময়নাগুড়ির হাসপাতাল পাড়ায় বাড়ি চিন্ময়ের।

তেমনই ময়নাগুড়ি হাই স্কুল (বয়েজ) –এর ছাত্র হিরণ্ময় রায়েরও প্রতিযোগিতায় আর সবাইকে পিছনে ফেলে রাখার লড়াইটা শুরু হয়েছিল গৃহশিক্ষকদের কাছে পড়ার সময় থেকেই৷ শেষ পর্যন্ত সেই লড়াকু মানসিকতাই উচ্চ মাধ্যমিকে মেধাতালিকায় জায়গা করে দিল তাকে৷ ৪৮৫ নম্বর পেয়ে রাজ্যে পঞ্চম স্থান পেল সে৷ হীরণ্ময়ের বাড়ি ময়নাগুড়ির আমগুড়ির ধরলাগুড়ি গ্রামে৷ বাবা পরিমল রায় প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক৷ মা প্রতিমা রায় শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের কর্মী৷

চিন্ময়ের বাবা প্রভাত অধিকারী অবসরপ্রাপ্ত বিএসএফ কর্মী৷ মা শান্তি অধিকারী গৃহবধূ৷ চাকরির জন্য প্রভাতবাবুকে বছরভর বাইরে বাইরেই থাকতে হত৷ ফলে চিন্ময় ও তার দাদার ছোটবেলাটা কেটেছে কার্যত মায়ের হাত ধরেই৷ তবে ছেলেদের পড়াশোনার জন্যই ২০০৯ সালে চাকরি থেকে স্বেচ্ছাবসর নেন প্রভাতবাবু৷ বাবা প্রতিদিনই সকালে ছ’টার মধ্যে চিন্ময়কে ঘুম থেকে তুলে দিতেন তার বাবা৷ প্রভাতবাবুর কথায়, ‘‘ওর মধ্যেও জেদ চেপে বসেছিল৷ আজ সেই জেদেরই ফল পেল ছেলে৷’’

চিন্ময় জানায়, প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ঘন্টা পড়াশোনা করত। গৃহশিক্ষক ছিলেন নয় জন৷ পড়াশোনার মাঝে বাড়ির পাশের মাঠে বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল কিংবা সময় পেলেই গোয়েন্দা গল্পের বই পড়তে ভালবাসে চিন্ময়৷ ইচ্ছা, ফিজিক্স নিয়ে গবেষণা করার৷

হিরণ্ময়ের বাড়ির লোকরাও বলছেন, সারা দিন শুধু বইয়ের মধ্যেই সে ডুবে থাকত, তা কিন্তু না৷ পড়াশোনার পাশাপাশি বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল খেলা কিংবা সুযোগ পেলেই টিভি দেখত সে৷

সপ্তম শ্রেণিতে ওঠার পর বিবেকানন্দপল্লিতে পিসির বাড়িতে থাকতে শুরু করে হিরণ্ময়৷ তার পিসি ও পিসামশাই-ও শিক্ষক৷ হিরণ্ময়ের মা প্রতিমাদেবীর কথায়, ‘‘মাঝে মধ্যে বাড়িতে গেলেও থাকতে চাইত না ছেলে৷ বলত, পড়াশোনার ক্ষতি হয়ে যাবে৷ বাধ্য হয়ে তাই আমি নিজেই মাঝেমধ্যে ওকে দেখতে পিসির বাড়ি চলে যেতাম৷’’

ঘটনাচক্রে চিন্ময় ও হিরণ্ময়ের পিসির বাড়ি পাশাপাশি পাড়াতে৷ ফলে দুজনে আলাদা স্কুলে পড়াশোনা করলেও বিকালে ফুটবল মাঠে কিংবা গৃহশিক্ষকদের কাছে পড়তে যাওয়ার সময় দুজনের মধ্যে দেখা হত৷ পড়াশোনা নিয়ে কথাও হত৷

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Higher Secondary Results West Bengal Results WBCHSE
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE