কোচবিহারে সম্প্রতি তৃণমূল-বিজেপির ঠোকাঠুকি বেড়ে গিয়েছে। সোমবার উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণকে কেন্দ্র করেও দেখা গেল আর এক দফা তরজা।
এক মাসে আয় কমেছে ৬৭ লক্ষ টাকা। নভেম্বর মাসে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণের আয়ের এই পতনের কারণ হিসেবে নোট বাতিলকেই দায়ী করলেন সংস্থার চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী। অন্য দিকে বিজেপি শিবিরের দাবি, এই ধরনের ভুল তথ্যে মানুষকে স্রেফ বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।
সোমবার সকালে মিহিরবাবু কোচবিহারে নিগমের পুরনো বাস স্ট্যান্ড থেকে ৩৩টি নতুন বাস উদ্বোধন করেন। এর পরেই বোর্ড মিটিং শুরু হয়। মিটিং শেষে তিনি জানান, অক্টোবর মাসে টিকিটি বিক্রি করে ১১ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা আয় করে নিগম। নভেম্বরে তা কমে দাঁড়ায় ১০ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। তাঁর অভিযোগ, নোট বাতিলের পরেই বেড়ে গিয়েছে পেট্রোল, ডিজেলের দামও। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে যন্ত্রাংশের দাম। তাঁর কথায়, “নোট সমস্যা নিগমের অনেক ক্ষতি করে দিয়েছে। যে ভাবে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলাম তাতে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা থেমে থাকব না। এর মধ্যেই কাজ করে যাব।”
কিন্তু নিগমের পরিসংখ্যান সূত্রেই দেখা যাচ্ছে, সেপ্টেম্বরের আয়ের পরিমাণ নভেম্বর মাসের মতোই ছিল। তা হলে কি নিগমের গড় আয় এমনই থাকে? মাঝে অক্টোবর পুজোর মরসুম হওয়াতেই কি শুধু ওই মাসে আয় খানিক বেড়েছিল? এই প্রশ্ন তুলছে জেলা বিজেপিরই একাংশ। নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুবল রায়ও ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তিনি অবশ্য সে কথা অস্বীকার করে দাবি করেন, পুজোয় কখনওই তাঁদের অতিরিক্ত আয় হয় না। বর্ষায় আয় অনেকটা কমে যায়। তার পর থেকেই দেখা যায় এ বছর আয় বাড়ছে। তাঁর কথায়, ‘‘যেমন সেপ্টেম্বরের থেকে অক্টোবরে আয় বাড়ল। আমরা আশা করেছিলাম, আয় প্রতি মাসে আরও বেড়েই চলবে। সেটাই আমাদের লক্ষ্য। কিন্তু নোট বাতিল ঘোষণার পর ঘটল বিপরীত।’’
রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা সূত্রের খবর, নোট বাতিল হওয়ার পর থেকে দূরপাল্লা তো বটেই লোকাল বাসগুলিতেও ভিড় অনেক কমে যায়। বেশ কিছু ক্ষেত্রে অচল নোট নিয়ে নিয়ে বাস কন্ডাক্টরদের সঙ্গে যাত্রীদের বচসাও হয়। বেশ কিছু দিন এমন চলার পরে পরিস্থিতি খানিকটা স্বাভাবিক হয়। বোর্ডের আরেক সদস্য আব্দুল জলিল আহমেদও বলেন, “নোট বাতিল না হলে নিগম আরও এগিয়ে যেত।”
বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে অবশ্য এ সব অভিযোগ সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘মিথ্যে বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন এঁরা। সারা বছরের পরিসংখ্যান দেখলেই পরিষ্কার বোঝা যায় যে এই ঘোষণার জেরে নিগমের আয়ের আদৌ কোনও হেরফের হয়নি। এর মধ্যে রাজনীতি ছাড়া অন্য কিছু নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy