টিভির সামনে বসে রয়েছেন মানিক তালুকদারের স্ত্রী সোমা তালুকদার। (ডান দিকে) — নিজস্ব চিত্র।
কোচবিহারের তুফানগঞ্জের বাড়িতে মঙ্গলবার সকাল থেকেই ভিড় জমিয়েছেন পাড়ার লোকজন। উদ্বিগ্ন মুখে ঘরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন আত্মীয়েরা। সে দিকে তেমন খেয়াল নেই সোমা তালুকদারের। তাঁর দৃষ্টি আটকে রয়েছে টিনের ঘরে রাখা ছোট্ট টিভিতে। সকাল থেকে তাতে দেখে চলেছেন উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধারকাজের খবর। গত ১২ নভেম্বর থেকে ওই সুড়ঙ্গে আটকে রয়েছেন সোমার স্বামী মানিক তালুকদার। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, আর কিছু সময় পরেই সুড়ঙ্গ থেকে বেরিয়ে আসবেন আটকে থাকা ৪১ জন শ্রমিক। সোমা জানালেন, না বেরোনো পর্যন্ত স্বস্তি নেই।
১৭ দিন আগে, কালীপুজোর দিন ভোরে উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গে আটকে পড়েছিলেন ৪১ জন শ্রমিক। সেই থেকে নানা উপায়ে চলছে উদ্ধারকাজ। আটকে থাকা শ্রমিকদের মধ্যে রয়েছেন তুফানগঞ্জের মানিকও। সেই খবর পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তাঁর স্ত্রী। মাঝে ক’দিন জেলা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এখন বাড়িতে বসেই অপেক্ষার দিন গুনছেন। মঙ্গলবার আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘শুনে আগের থেকে ভাল লাগছে। তবে যত ক্ষণ না বেরোচ্ছে, স্বস্তি নেই। শুধু আমার স্বামী না, সকলেই সুস্থ ভাবে বেরিয়ে আসুন। এটাই চাই।’’
মানিকের স্ত্রীর পাশাপাশি উদ্বিগ্ন ছেলে মণি। তবে কিছুটা ভাল লাগছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। কলেজপড়ুয়া মণির কথায়, ‘‘আমরা খবর পেয়েছি শীঘ্রই কাজ শেষ হতে চলেছে। খবরটা পেয়ে ভাল লাগছে। বাবা বেরিয়ে এলে স্বস্তি পাব।’’ উত্তরকাশীতে ঘটনাস্থলে অনেক দিন আগেই পৌঁছে গিয়েছে শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যেরা। মণি যেতে পারেননি। পরিবর্তে সেখানে গিয়েছেন মানিকের ভাইপো বিনয় তালুকদার এবং এক পরিচিত। সেখানে গিয়ে কাকার সঙ্গে কথাও বলতে পেরেছেন মানিক। প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় কোচবিহারে স্ত্রী-পুত্রের সঙ্গেও কথা বলেছেন মানিক। মণি বলেন, ‘‘চার-পাঁচ দিন ধরে রোজ এক মিনিট করে বাবার সঙ্গে কথা বলেছি। তবে আজকের খবরটা শোনার পর বাড়িতে সকলের শান্তি লাগছে।’’ তবে স্বস্তি পুরোপুরি আসেনি। অপেক্ষা আর কিছু ক্ষণের। ওটুকু সময় আপাতত প্রার্থনা করেই কাটাচ্ছে তালুকদার পরিবার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy