Advertisement
০১ জুন ২০২৪

বিদ্যুতে মৃত শেয়াল

বিদ্যুতের খুঁটির নীচের তারের ঠিক পাশে পড়ে রয়েছে দুই পূর্ণ বয়স্কর দেহ। একটু দূরেই পড়ে চার শিশু। একঝলক দেখেই বোঝা যায় প্রায় একই সময়ে একই কারণে মৃত্যু হয়েছে দলের ছয় সদস্যের। চার পাশে ভিড় করে থাকা মানুষজনের চোখে জল। মালদহের রতুয়ার বিকলপুরের এই মর্মান্তিক দৃশ্য একটি শেয়াল পরিবারের।

মৃত শেয়ালদের দেহ ঘিরে গ্রামবাসীদের উৎকণ্ঠা। — নিজস্ব চিত্র

মৃত শেয়ালদের দেহ ঘিরে গ্রামবাসীদের উৎকণ্ঠা। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাঁচল শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৬ ০৮:০৩
Share: Save:

বিদ্যুতের খুঁটির নীচের তারের ঠিক পাশে পড়ে রয়েছে দুই পূর্ণ বয়স্কর দেহ। একটু দূরেই পড়ে চার শিশু। একঝলক দেখেই বোঝা যায় প্রায় একই সময়ে একই কারণে মৃত্যু হয়েছে দলের ছয় সদস্যের। চার পাশে ভিড় করে থাকা মানুষজনের চোখে জল। মালদহের রতুয়ার বিকলপুরের এই মর্মান্তিক দৃশ্য একটি শেয়াল পরিবারের।

বাসিন্দাদের ধারণা, একই পরিবারের হোক বা না হোক, দল বেঁধে তারা সম্ভবত এক সঙ্গেই থাকত। শেয়ালরা যে যূথবদ্ধ জীব তা অবশ্য বন দফতর সূত্রেও জানানো হয়েছে। তবে শেয়ালের পরিবার হয় কি না, মৃত ছয় শেয়াল একই পরিবারের কি না, তা নিয়ে তর্কের অবকাশ থাকলেও তাদের যে তড়িদাহত হয়েই মৃত্যু হয়েছে, তা নিয়ে অবশ্য সন্দেহ নেই। বিদ্যুতের তার থেকেই তড়িদাহত হওয়া বাসিন্দাদের পাশাপাশি নিশ্চিত বিদ্যুৎ দফতরও। শেয়ালের মৃত্যুতে তাই বাসিন্দাদের ক্ষোভ গিয়ে পড়েছে বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির উপরে। তাঁদের দাবি, রাতে না হয়ে দিনের বেলায় ঘটনাটি ঘটলে মানুষের ক্ষেত্রেও এ জিনিস হতো।

নিয়মিত সংরক্ষণের অভাবেই ওই খুঁটিতে আর্থিং-এর তার বিদ্যুৎবাহী হয়ে পড়ে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। যদিও গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করে বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি।

মালদহের ডিএফও কৌশিক সরকার বলেন, ‘‘শেয়ালরা দলবদ্ধ ভাবে থাকে। কারও কোনও সমস্যা হলে তাকে শুঁকে বা ছুঁয়ে দেখা ওদের অভ্যাস। তাই এক জন তড়িদাহত হওয়ার পরে তাকে শুঁকতে বা ছুঁয়ে দেখতে গিয়ে বাকিদেরও মৃত্যু হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। আমরা খোঁজ নিচ্ছি।’’

রতুয়ার চাঁদমণি-২ পঞ্চায়েতের বিকলপুর এলাকায় গোরস্থানের পাশে একটি ঝোপ রয়েছে। ওই ঝোপে শেয়ালের আনাগোনা দেখেছেন বাসিন্দারা। ফলে শেয়ালগুলি সেখানেই থাকত বলে তাঁদের ধারণা। ঝোপের কিছুটা দূরেই মাটিতে পড়ে ছিল বিদ্যুতের খুঁটির উপরে থাকা চিনামাটির ইনস্যুলেটরগুলি।

বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সারা রাত ধরে বৃষ্টির পাশাপাশি বাজও পড়েছিল। বিদ্যুতের তারের সঙ্গে খুঁটি, আর্থিং-এর তারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখাটাই ইনস্যুলেটরের কাজ। কিন্তু বাজ পড়ে ইনস্যুলেটর ক্ষতি হলে খুঁটি ও আর্থিং-এর তার বিদ্যুৎবাহী হয়ে পড়ে।

জেলা বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির এক কর্তার দাবি, ‘‘বৃষ্টির সময় বাজ পড়ে ইনস্যুলেটর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু অন্য সময়ে এটা হলে ইনস্যুলেটরের মান খারাপ বলে ধরে নেওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে আমরা ব্যবস্থাও নিয়ে থাকি। ওখানে কী ত্রুটি হয়েছে তা দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fox Death electricity
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE