Advertisement
০২ মে ২০২৪

পদ-সংঘাতে মার নেতাকে

বিবাদকে ঘিরে সভাপতি পদের দাবিদার এক নেতার ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল। শুক্রবার গভীর রাতে খারিজা বেরুবাড়ি এলাকার এই ঘটনায় ফের জলপাইগুড়িতে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে এল৷

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৭ ০২:৪১
Share: Save:

অঞ্চলের সভাপতি কে? তা নিয়ে বিবাদ চলছে দীর্ঘদিন ধরেই৷ আর সেই বিবাদকে ঘিরে সভাপতি পদের দাবিদার এক নেতার ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল। শুক্রবার গভীর রাতে খারিজা বেরুবাড়ি এলাকার এই ঘটনায় ফের জলপাইগুড়িতে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে এল৷

তৃণমূল সূত্রের খবর, জখম নেতার নাম তেজেন্দ্রনাথ রায়৷ স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের দাবি, দীর্ঘ দিন ধরেই দলের খারিজা বেরুবাড়ি-১ এর অঞ্চল সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তেজেন্দ্রনাথবাবু৷ কিন্তু সম্প্রতি দলের ব্লক সভাপতি, তেজেন্দ্রবাবুর বিরোধী গোষ্ঠী নেতা হিসাবে পরিচিত বান্টি সরকারকে সভাপতির দায়িত্ব দেন৷ তারপরই সংঘাত শুরু হয়৷

তেজেন্দ্রবাবুর স্ত্রী প্রমিলা রায় এ দিন কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ করে বলেন, শুক্রবার রাত বারোটা নাগাদ ১২-১৩ জনকে নিয়ে বান্টি তাঁদের বাড়িতে হানা দেয়৷ লোডশেডিং থাকায় প্রমিলাদেবী একটি লন্ঠন নিয়ে তেজেন্দ্রনাথবাবুর আগে ঘর থেকে বের হন৷ তার পেছনে ঘর থেকে বের হন তেজেন্দ্রনাথবাবু৷ প্রমিলাদেবীর অভিযোগ, ঘর থেকে বের হতেই বান্টি ও তার সঙ্গীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তেজেন্দ্রনাথবাবুর ওপর আক্রমণ করে৷ কিন্তু ধারালো অস্ত্রটি গিয়ে
লাগে লণ্ঠনে৷

অন্ধকারে তা আর না পেলেও তেজেন্দ্রনাথবাবু মারতে শুরু করে তারা৷ চিৎকার শুনে পাড়ার লোকেরা ছুটে এলে বান্টি ও তার দলবল পালিয়ে যায়৷ পালানোর সময় বান্টি তার স্কুটি নিতে পারেনি বলে জানান প্রমিলাদেবী৷ হাসপাতালে ভর্তি তেজেন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘প্রাণে মেরে ফেলতে বান্টি এর আগেও আমার ওপর হামলা চালিয়েছে৷’’

যদিও বান্টি এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়ে বলেন, শুক্রবার রাতে দলের এক কর্মী তাঁর স্কুটি নিয়ে ঘুঘুডাঙা বাজার থেকে ফিরছিলেন৷ স্কুটিতে তিনি রয়েছেন ভেবে তেজেন্দ্রবাবুর লোকজন তার ওপর আক্রমণ চালায়৷ প্রাণে বাঁচতে ওই কর্মী স্কুটি ফেলে পালায়৷

স্থানীয় তৃণমূল সূত্রে খবর, যাবতীয় এই গোলমালের পিছনে রয়েছে দলের অঞ্চল সভাপতির পদ৷ তেজেন্দ্রনাথবাবুর দাবি, ১৯৯৮ সাল থেকেই তিনি অঞ্চল সভাপতি৷ আবার বান্টির দাবি, কয়েক মাস আগে ব্লক সভাপতি হীরেন রায় তাকে অঞ্চল সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছেন৷ যা অস্বীকার করেননি হীরেনবাবু নিজেও৷ তাঁর কথায়, ‘‘নোট বাতিলের সময় দলের অনুমতি না নিয়ে সভা করেন তেজেন্দ্রনাথবাবু৷ সে জন্যই বান্টিকে আমি অঞ্চল সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছি৷’’ তবে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা বিকাশ মালাকারের অভিযোগ, ‘‘ ব্লক সভাপতি মৌখিকভাবে কাউকে সভাপতি ঘোষণা করতেই পারেন না ৷ তার জন্য দলের জেলা নেতৃত্বের অনুমোদন প্রয়োজন৷’’

গোলমালের খবর পৌঁচেছে তৃণমূলের জেলা সভাপতির সৌরভ চক্রবর্তীর কানেও৷ তাঁর কথায়, ‘‘তেজেন্দ্রনাথবাবুর ওপর যারা আক্রমণ করেছে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ দলের পুরনো কমিটিই এখনও বহাল ৷’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE