Advertisement
১৯ মে ২০২৪

শহর আলোর আশায়

বাসিন্দারা বলছেন অবহেলার শহরে পরিণত হয়েছে জলপাইগুড়ি। জেলা ভেঙে তৈরি হয়েছে আলিপুরদুয়ার। সরেছে ভারতীয় খাদ্য নিগমের দফতর, রেলের রেক। তুলে দেওয়া হয়েছে শহরে থাকা পূর্ত প্রতিমন্ত্রীর দফতরটিও।

ভবন: অনুষ্ঠানের জন্য সেজে উঠছে সার্কিট বেঞ্চের ভবন। নিজস্ব চিত্র

ভবন: অনুষ্ঠানের জন্য সেজে উঠছে সার্কিট বেঞ্চের ভবন। নিজস্ব চিত্র

শুভঙ্কর চক্রবর্তী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৯ ০৫:১৮
Share: Save:

বাসিন্দারা বলছেন অবহেলার শহরে পরিণত হয়েছে জলপাইগুড়ি। জেলা ভেঙে তৈরি হয়েছে আলিপুরদুয়ার। সরেছে ভারতীয় খাদ্য নিগমের দফতর, রেলের রেক। তুলে দেওয়া হয়েছে শহরে থাকা পূর্ত প্রতিমন্ত্রীর দফতরটিও। চা বলয়ের মধ্যমণি হলেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনার অভাবে দীর্ঘদিন থেকেই ধুঁকছে চা নিলাম কেন্দ্রটিও। অভিযোগ, বারবার আন্দোলনের পরেও যোগাযোগ ব্যবস্থায় পরিবর্তন আসেনি। ফলে উত্তরবঙ্গের পুরনো শহরগুলির অন্যতম জলপাইগুড়ি আর্থ-সামাজিক দিক থেকে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে, ক্ষোভ জলপাইগুড়ির একটি বড় অংশেরই। তাঁরাই এখন বলছেন, সার্কিট বেঞ্চকে সামনে রেখে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ এসেছে। বেঞ্চ চালু হলে শহরের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন তরান্বিত হবে বলেই মনে করছেন ব্যবসায়ী থেকে বিশিষ্টজনদের একটা বড় অংশ।

শিক্ষাবিদ আনন্দগোপাল ঘোষের মতে, সার্কিট বেঞ্চ চালুর পাশাপাশি দ্রুত শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে আন্তঃজেলা ও আন্তঃরাজ্য বাসগুলি শহরের মধ্য দিয়ে চালানো, জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনে সব ট্রেন থামার ব্যবস্থা করা জরুরি। তিনি বলেন, ‘‘সার্কিট বেঞ্চ চালু হলে জলপাইগুড়ি ফের খানিকটা ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। শহরের আর্থিক ভিত্তিও মজবুত হবে।’’

বেঞ্চ নিয়ে আশাবাদী ব্যবসায়ী সংগঠনগুলিও। সংগঠনের কর্তাদের বক্তব্য, বেঞ্চ চালু হলে বিভিন্ন জেলা থেকে বিচারপ্রার্থী, প্রশাসনিক কর্তা, আইনজীবীরা শহরে আসবেন। থাকবেন। ফলে হোটেল, গাড়ির ব্যাবসা বাড়বে। বাড়বে ছোট ব্যবসায়ীদের আয়ও। বেঞ্চের স্থায়ী কাঠামো তৈরি হয়ে গেলে হোটেল, শিক্ষা, পর্যটন বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ আসবে। জলপাইগুড়ি ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অব কমার্সের কার্যকরী সভাপতি বিকাশ দাস বলেন, ‘‘সার্কিট বেঞ্চ চালু হলে জলপাইগুড়ির সার্বিক উন্নয়ন হবে।’’ দিনবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মলয় সাহা বলেন, ‘‘বেঞ্চের স্থায়ী কাঠামো তৈরি হয়ে গেলে এবং উত্তরবঙ্গের সমস্ত জেলাকে বেঞ্চের আওতায় আনা হলে জলপাইগুড়ির উন্নয়নে গতি আসবে।’’

সার্কিট বেঞ্চ চালু হলে তাদের সুদিন ফিরবে বলেই আশাবাদী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও। জলপাইগুড়ি মার্চেন্ট রোড ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক শুভঙ্কর সাহার বক্তব্য, ‘‘বিভাগীয় শহর হলেও জলপাইগুড়ি কার্যত বাইপাস শহরে পরিণত হয়েছিল। এ বার আমরা লাভের মুখ দেখব। তাই সার্কিট বেঞ্চের উদ্বোধন আমাদের সবার জন্য খুশি খবর।’’ রাস্তা, আলোয় শহরকে সাজাতে এর মধ্যেই বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ করেছে রাজ্য সরকার। রাজবাড়ি, জুবিলি পার্ক-সহ শহরের পর্যটনকেন্দ্রগুলিও সাজিয়ে তুলেছে পর্যটন দফতর। সার্কিট বেঞ্চ চালু হলে একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ হবে, মনে করছেন সিআইআইয়ের উত্তরবঙ্গ আঞ্চলিক কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রবীর শীল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jalpaiguri Circuit Bench
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE