বার্তা: চাকুলিয়ায় কন্যাশ্রীদের সচেতনতা শিবিরে প্ল্যাকার্ড হাতে ছাত্রীরা। বুধবার। নিজস্ব চিত্র।
কারও বিয়ে ঠিক করা হয়েছিল, কেউ আবার নিজের ইচ্ছেয় বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছে। করোনা কালে প্রায় দু’বছর বন্ধ থাকার পর নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস চালুর পর, পড়ুয়াদের গরহাজিরা থেকে এমন সব তথ্য উঠে আসে। এর পরেই প্রশাসনিক মহলে টনক নড়ে। শেষ পর্যন্ত উত্তর দিনাজপুর জেলার ‘কন্যাশ্রী’ ক্লাবগুলিকে সক্রিয় হওয়ার জন্য নির্দেশ দিল প্রশাসন। পাশাপাশি প্রশাসনের তরফে কন্যাশ্রী মেয়েদের নিয়ে সচেতনতা শিবির করারও উদ্যোগ নেওয়া হল। অন্যদিকে, মালদহের কালিয়াচকের মাজহারুল উলুম হাই মাদ্রাসায় বাল্যবিবাহ রোধে এ দিন সচেতনতা সভা হয়।
বুধবার, গোয়ালপোখর ২ ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে চাকুলিয়ায় কন্যাশ্রী মেয়েদের নিয়ে এমনই এক সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করা হয়। ছিলেন বিডিও কানাইয়াকুমার রায় ও অন্যান্য আধিকারিকরা। এ দিন ব্লকের কন্যাশ্রী ক্লাবের মেয়েদেরকে প্রশাসনের কর্তাদের ফোন নম্বর দেওয়া হয়। কীভাবে বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশীদের এ ব্যাপারে সতর্ক করতে হবে, কোনও ঘটনা দেখলে কোথায় কী ভাবে জানাতে হবে, সে ব্যাপারে বোঝানো হয় ছাত্রীদের।
এ দিন কন্যাশ্রী মেয়েরা স্থানীয় একটি গ্রামে গিয়ে সচেতন করার পাশাপাশি স্কুলছুটদের স্কুলে ফেরানোর আবেদনও জানায়। চাকুলিয়ার হাই স্কুলের ছাত্রী নাফিসা খাতুন বলেন, ‘‘স্কুল-টিউশন বন্ধ থাকায় আমরা খবর পাইনি। এই সুযোগে গোপনে নাবালিকা বিয়ের ঘটনাগুলো ঘটেছে।’’ বিডিও কানাইকুমার রায় বলেন, ‘‘প্রতিটি গ্রামে, পাড়ায় কন্যাশ্রী মেয়েরা রয়েছে। তারা যদি আমাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করে, তা হলে আমরা ঠিক সময়ে খবর পেয়ে নাবালিকা বিয়ে বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা যাবে।’’
অন্যদিকে, করোনা আবহে প্রায় দু’বছর স্কুল বন্ধ থাকায় মালদহের কালিয়াচকের মাজহারুল উলুম হাই মাদ্রাসার বেশ কিছু ছাত্রীর বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বিষয়টি নজরে আসতেই বুধবার, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ ও নারী শিক্ষার প্রসার নিয়ে মাদ্রাসাতেই সচেতনতামূলক সভার আয়োজন করল মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। সেখানে উপস্থিত ছিলেন কালিয়াচক ১ ব্লকের বিডিও সেলিম হাবিব সর্দার, কালিয়াচক থানার আইসি মদনমোহন রায়, মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাসিদুর রহমান প্রমুখ। পাশাপাশি, মাদ্রাসার ছাত্রীরা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ নিয়ে সচেতনতামূলক একটি ছোট নাটকও মঞ্চস্থ করে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাসিদুর বলেন, ‘‘বিয়ের জন্য যে সমস্ত ছাত্রীরা মাদ্রাসায় আসছেন না তাঁদের ক্লাসে ফেরাতে আমরা শিক্ষকরা বাড়ি বাড়ি যাব। মাদ্রাসায় ভর্তি পর্ব মিটে গেলেই এই পদক্ষেপ আমরা শুরু করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy